somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওবামার বিস্ট : বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত গাড়ি

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গাড়িটির কোড নেম 'দি বিস্ট'। মার্কিন প্রেসিডেন্টর ব্যবহৃত গাড়ি। গাড়িটি আক্ষরিক অর্থেই বিস্ট-ই বটে! গাড়ির অন্তঃসজ্জা থেকে শুরু করে নিরাপত্তা ও যোগাযোগ-ব্যবস্থা প্রত্যেকটা জিনিসই অত্যাধুনিক। যার জন্য বিস্ট-কে বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত গাড়ির আখ্যা দেয়া হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিদেশে গেলেও গাড়িটি সেখানে যায়। বসতে পারেন সাতজন।
প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেট কার হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ব্যবহৃত স্টেট কার। ১৯৩০-এর দশক থেকেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রেসিডেন্টকে গাড়ি বরাদ্দ দিয়ে আসছে যাতে থাকে উন্নত যোগাযোগ সরঞ্জাম, বর্ম এবং সামরিক প্রতিরক্ষা।
বর্তমান প্রেসিডেন্সিয়াল লিমুজিন ব্যবহৃত হচ্ছে ২০০৯ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে।
এক ঝলকে দেখে নেয়া যাক মার্কিন প্রেসিডেনশিয়াল গাড়িতে কী কী আছে—

কালো রঙের লিমুজিন-ঘরানার গাড়িটির নির্মাতা জেনারেল মোটর্স। পোশাকি নাম দ্য বিস্ট হলেও অনেক সময়ে তাকে ‘ক্যাডিলাক ওয়ান’ বা ‘লিমো ওয়ান’ বলে ডাকা হয়। সাধারণভাবে প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেট কার বলা হয়। ক্যাডিলাক মডেলের চিহ্ন বহন করলেও গাড়িটির বহু অংশই শেভ্রলে কোডিয়াক ট্রাকের থেকে নেয়া। - গাড়িটি স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, টাইটেনিয়াম ও সেরামিক দিয়ে তৈরি। দরজায় আট-ইঞ্চি পুরু স্টিল প্লেটের বর্ম রয়েছে (যেমনটি যুদ্ধের ট্যাঙ্কে থাকে) যা বুলেট থেকে রকেট, আইইডি হামলা- সব প্রতিরোধ করতে সক্ষম। এমনকি, জানলার কাচও পাঁচ-ইঞ্চি পুরু বহুস্তরবিশিষ্ট। ফলে, স্টিলের বর্ম ও কাচ মিলিয়ে বিস্টের দরজার ওজন আর একটি বোয়িং ৭৫৭ বিমানের দরজার ওজন প্রায় সমান। চালকের দরজার কাচ ছাড়া আর কোনো জানলা খোলা যায় না। ফলে, রাসায়নিক ও জৈবিক হামলা হলেও প্রেসিডেন্ট অক্ষত থাকবেন।
গাড়ির স্যাসির ওজন প্রায় ৬,৩৫০ কিলোগ্রাম। পুরো গাড়ির ওজন প্রায় ৮ টন। তুলনায় রোলস রয়েস ফ্যান্টম-এর (বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ গাড়ির মডেল) স্যাসির ওজন মাত্র ২,৫৫০ কেজি। ফলে গাড়ি না বলে একে ট্যাঙ্ক বলাই উচিত।
শুধু গাড়ির স্যাসিই নয়, তার তেলের ট্যাঙ্কও আর্মার-দিয়ে মোড়া. যাতে তাকে তাক করে কোনো হামলা না হয়। পাশাপাশি, ফুয়েল ট্যাঙ্ককে মুড়ে থাকে একটি ফোমের জ্যাকেট। যাতে কোনো কারণে আগুন ধরে গেলেও তেলের ট্যাঙ্কে কোনো বিস্ফোরণ ঘটবে না।
বিস্টের পুরো গাড়ি যেখানে অত্যাধুনিক, সেখানে চাকাই বা বাদ যাবে কেন! গাড়ির চাকাগুলো কেভলার (বুলেটপ্রুফ) দিয়ে মোড়া। ফলে কোনোভাবে তাতে ফুটো হবে না, বা হাওয়া বের হবে না। যদিও বা কোনোভাবে সে রকম পরিস্থিতি হয়ও, বা চাকার রবার খুলে গেলেও, তার স্টিলের রিমের সাহায্যেই প্রেসিডেন্টের গাড়ি দিব্যি দৌড়বে।
গাড়ির ডিকিতে প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার জন্য সব উপকরণই মজুত থাকে। যেমন টিয়ার গ্যাস, শটগান। রয়েছে অক্সিজেন সিলিন্ডার, প্রেসিডেন্টের রক্তের গ্রুপের মানানসই রক্তের পাউচ, আপত্কালীন মেডিক্যাল কিট, নিজস্ব অত্যাধুনিক অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা– যেমন দেখা যায় জেমস বন্ডের ছবিতে।
গাড়ির চালকের আসনে থাকেন ইউএস সিক্রেট সার্ভিসের অফিসার। যিনি এই গাড়ি চালাতে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। ওই বিশাল ও ভারি গাড়ির মুখকে মুহূর্তের মধ্যে উল্টো অভিমুখে ঘোরাতে তিনি সিদ্ধহস্ত। চালকের সুবিধের জন্য গাড়িতে রয়েছে নাইট-ভিসন ক্যামেরা, ইনফ্রা-রেড সেন্সর। ফলে, নিকষ আঁধার হোক বা ধোঁয়ায় ভরা পরিবেশ— কোনো পরিস্থিতিতেই গাড়ি চালাতে অসুবিধে হবে না।
গাড়িতে রয়েছে অত্যাধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিস্টে রয়েছে বিশেষ জিপিএস প্রযুক্তি, ওয়াই-ফাই ও স্যাটেলাইট ফোনের ব্যবস্থা। যার মাধ্যমে যেকোনো সময়ে গাড়ি থেকেই ভাইস-প্রেসিডেন্ট, পেন্টাগন, সামরিক কর্তা ও বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে ‘পোটাস’ বা ‘ইগল’ (মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এই কোডনামেই ডাকা হয়) যোগাযোগ বজায় রাখতে পারেন। গাড়িতে বসেই প্রেসিডেন্ট যোগাযোগ করতে পারবেন পৃথিবীর যে কারো সাথে। চাইলে পৃথিবীর যেকোনো স্থানে পরমাণু হামলার নির্দেশও দিতে পারবেন! - এহেন একটি গাড়ি তৈরি করতে খরচ পড়ে প্রায় ১৫ লাখ মার্কিন ডলার। তবে, সব ভালো হলেও বিস্টের অপারগতা এক জায়গাতেই, তা হলো এই গাড়ি বেশি উচ্চগতি তুলতে পারে না। সুপারচার্জার থাকা সত্ত্বেও এত ভারী গাড়ি ঘণ্টায় ৬০ মাইলের বেশি গতি তুলতে অক্ষম। শুধু তাই নয়, এই গাড়ির তেল খরচও যথেষ্ট। গড়ে ৩ লিটারে এক কিলোমিটার। তবে, গাড়ির সওয়ারির নাম যখন বারাক হুসেন ওবামা, সেখানে তেলের খরচ কম হলো না বেশি, তাতে কী-ই বা এসে যায়! -
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৪৯
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×