somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাত্র এক মিনিটেই ঘুমিয়ে পড়ার দারুণ কৌশল দিলো আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন.।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ঘুম না আসা খুবই যন্ত্রণাকর একটি ব্যাপার। বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করা এবং ঘড়ির দিকে তাকিয়ে রাত পার করার যন্ত্রণা যারা ভুক্তভুগি তারাই বলতে পারবেন। ঘুম না হওয়ার সবচাইতে প্রথম ও প্রধান কারণ হচ্ছে মন অস্থির থাকা। আর মন অস্থির হয়ে থাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে মানসিক চাপ। মানসিক চাপ হওয়ার কারণে ঘুম আসতে চায় না একেবারেই। –

রাতে বিছানায় শুয়ে এপাশ-ওপাশ করেন? যতই চেষ্টা করুন না কেন কিছুতেই দু’চোখের পাতায় ঘুম আসে না। জানতেন কি ? মাত্র এক মিনিটেই ঘুমিয়ে পড়তে পারেন আপনি!

ঘুম নিয়ে মানুষের সমস্যার কোন কমতি নেই। বেশীরভাগ মানুষ সময়মত ঘুমাতে পারেন না। বিছানায় শোবার পরও ঘুম আসার কোন খবর থাকে না। যার ফলে দেখা যায় বিভিন্ন ধরণের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা। যাই হোক, আমাদের সকলের পর্যাপ্ত পরিমাণ ও সময়মত ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে। এর জন্য কিছু সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করলেই নিদ্রাজনিত সমস্যা দূর হতে পারে।

না, কোনও ম্যাজিক নয়! এমনটাই হতে পারে বলে দাবি করেছেন মার্কিন মুলুকের গবেষকরা। আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের গবেষকদের দাবি, দৈনন্দিন জীবনে স্ট্রেস ও ইনসোমনিয়ার গলায় গলায় বন্ধুত্ব! একটা থাকলে অন্যটা নাকি এসে যাবেই আপনার জীবনে। আর রাতে ঘুম না আসার পিছনে নাকি যাবতীয় দায় ওই স্ট্রেস-এর। তবে ঘুমোবেন কী করে? তা-ও আবার এক মিনিটে! এক মিনিটে ঘুমোনোর জন্য শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা প্রয়োজন। কী ভাবে? জেনে নিন তা—

• প্রথমে জিভের ডগাটা রাখুন সামনের দাঁতের সারির মাংসল জায়গায়। পুরো ব্যায়ামের সময় জিভ সেখানেই থাকবে।

• এ বার বেশ জোরে ‘হুশশশ’ শব্দ করে মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস ছাড়ুন।

• এ বার মুখ বন্ধ করে আস্তে আস্তে নাক দিয়ে নিঃশ্বাস নিন। এ সময় মনে মনে এক থেকে চার গুনুন।

• শ্বাস ধরে রেখে এক থেকে সাত গুনতে শুরু করুন।

• আট গুনে শ্বাস পুরোপুরি ছেড়ে দিন। একই ভাবে ‘হুশশশ’ শব্দ করে শ্বাস ছাড়তে থাকুন।

• এটা হল প্রথম বারের ব্যায়াম। এ ভাবেই মোট চার বার ব্যায়ামটা করুন।

গবেষকদের দাবি, এতে স্ট্রেস কমবে। ফলে ঘুমও আসবে তাড়াতাড়ি। মাত্র এক মিনিটেই!

Sleeping-beauty1
অনেকেই ভাবতে পারেন এই প্রক্রিয়াটি কেন কাজে দেবে বা এই প্রক্রিয়ায় কেন ১ মিনিটের মধ্যে ঘুম চলে আসবে। এই বিশেষ ধরণের নিঃশ্বাসের পদ্ধতিতে শুধুমাত্র আপনার ফুসফুসের উপরে প্রভাব ফেলে না এই পদ্ধতিতে মস্তিষ্কের উপরেও কাজ হয় যা ঘুমাতে সহায়তা করে। আপনি যখন শুয়ে ঘুম না আসা নিয়ে চিন্তা করতে থাকেন এবং অপেক্ষা করেন তখন আরও বেশী মানসিক চাপ সৃষ্টি হয় যা আরও বেশী ব্যাঘাত ঘটে।

ঘুম যেন এক রহস্য দ্বীপ। আবছা আলো-আঁধারে ঢাকা। ‘ঘুম ঘোরে কে আসে মনোহর?’ আবার, ‘কখনো জাগরণে যায় বিভাবরী।’এ শরীর যার, যে জগতে এর বাস, তার যেন তেমন ভূমিকাই নেই, বিস্মৃত সে এ জগৎ সম্বন্ধে।আমরা সবাই এমন অবস্থায় জীবনের এক-তৃতীয়াংশ সময় কাটাই।

কাম ক্লিনিকের গবেষক বলেন যখন আমরা দুশ্চিন্তা করি এবং চিন্তা করতে থাকি তখন আমাদের মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাব ঘটে। এতে করেই অনেক বেশী ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে থাকে। যখন এই ৪-৭-৮ নিঃশ্বাসের ব্যায়ামটি করা হয় তখন অক্সিজেন আমাদের মস্তিষ্কে ভালো করে পৌছায়। যখন আপনি ৪ সেকেন্ড শ্বাস নেন তক্ষন তা আপনাকে শান্ত করে এবং যখন ৭ সেকেন্ড দম ধরে থাকেন তখন মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌছায়। এরপর আপনি যখন দম ছাড়েন তখন আপনার দেহ থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড দূর হয়ে যায়। এতে আপনার হার্টবিটও কমে আসবে এবং আপনার দুশ্চিন্তা কমে আসবে। আপনার দেহ ও মন রিলাক্স হবে। আর এ কারণেই ঘুমের উদ্রেক ঘটে। চেষ্টা করেই দেখুন না। –
——————————————–




বিভিন্ন জরিপে দেখা যায় শতকরা ৮৬% মানুষ কখনো না কখনো ঘুমের সমস্যা বা অনিদ্রায় ভুগেছে। বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ ঘুমের ওষুধ গ্রহণ করে শুধুমাত্র একটুখানি শান্তির ঘুমের জন্য। শুধুমাত্র ওষুধ নয়, ব্যবহার করা হয় ঘরোয়া টোটকাও। যেমন, বিছানায় যাবার আগে উষ্ণ পানিতে গোসল করা বা গরম দুধ পান করা। এসব করার পরও অনেকের ঘুম আসে না। তাই রইলো কিছু ঘুম আনার কৌশল।

নাকের বাম ছিদ্র দিয়ে নিঃশ্বাস নিন :
যোগব্যায়ামের এই কৌশলটি আপনার রক্তচাপ কমাবে এবং আপনাকে শান্ত করবে। বাম কাত হয়ে শুয়ে একটি আঙুল দিয়ে নাকের ডান ছিদ্রটি চেপে ধরে বন্ধ করুন। এরপর বাম ছিদ্র দিয়ে আস্তে আস্তে, গভীরভাবে শ্বাস নিন।

পেশির শিথিলতা :
মাংসপেশির শিথিলতা শরীরকে ঘুমের জন্য তৈরি করে তোলে। বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে পাড়ুন। গভীর শ্বাস নিন এবং ধীরে ধীরে নাক দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। একই সঙ্গে আপনার হাঁটু ভাঁজ করে পায়ের দিকে চাপ দিন এবং ছাড়ুন। একই ভাবে শরীরের অন্যান্য পেশিগুলো যেমন কাঁধ, পেট, বুক, ঊরু, বাহু ইত্যাদিতে চাপ প্রয়োগ করুন এবং শিথিল করুন।

জোর করে জাগুন :
নিজেকেই চ্যালেঞ্জ করুন যে জেগে থাকবেন। এতে আপনার মন বিদ্রোহী হয়ে উঠবে। এটাকে বলা হয় ‘স্লিপ প্যারাডক্স’। চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকুন এবং বারবার নিজেকে বলতে থাকুন যে আপনি ঘুমাবেন না। এতে কিন্তু কাজ হবে উল্টো! অর্থাত্‍ আপনি তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়বেন।

সারাদিনের পুনরাবৃত্তি :
সারাদিনের প্রতিটি খুঁটিনাটি মনে করার চেষ্টা করুন। কথাবার্তা, দৃশ্যাবলি, শব্দ ইত্যাদি মনে করতে করতে আপনার ঘুমানোর মতো মানসিক অবস্থা তৈরি হয়ে যাবে।

চোখ ঘোরানো :
চোখ বন্ধ করুন এবং আপনার চোখের মণি ঘোরাতে থাকুন। এতে আপনার ঘুমের হরমোন বেড়ে যাবে।

কল্পনা করুন :
দৃশ্য কল্পনা করার মেডিটেশন বেশ কাজে দেয় এ ব্যাপারে। নিজেকে কল্পনা করুন কোনো সুন্দর পরিস্থিতির দৃশ্যে। ফুলের সুবাস নেয়া, ফুলের বাগানে হেঁটে চলা, ঘাসের অনুভব অথবা পায়ের নিচে বালি ইত্যাদি কল্পনা করুন। মন শান্ত হবে এবং ধীরে ধীরে ঘুম চলে আসবে।

নিঃশ্বাসের ব্যায়াম :
এটি মেডিটেশনের একটি বিশেষ ধাপ। একটি আরামদায়ক অবস্থানে বসুন। চোখ বন্ধ করুন, কাঁধ নামিয়ে দিন, চোয়াল আরামে রাখুন, তবে মুখটা হালকাভাবে বন্ধ রাখুন। নাক দিয়ে গভীরভাবে শ্বাস নিন, তবে বুক ভরে নয়, পেট ভরে! এবার মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। এভাবে অন্তত ছয়বার করুন। এরপর এক মুহূর্ত স্থির হয়ে বসে থাকুন। নিজেকে বলুন, আমি ঘুমের জন্য তৈরি। এর পর ধীরে ধীরে উঠে পড়ুন এবং বিছানায় চলে যান।

সঠিক জায়গায় চাপ প্রয়োগ :
শরীরে এমন কিছু বিশেষ জায়গা রয়েছে যেখানে মৃদু কিন্তু দৃঢ়ভাবে চাপ প্রয়োগ করলে ঘুম আসে। দুই ভ্রূ’র ঠিক মাঝখানে, নাকের একদম উপরের অংশে বুড়ো আঙুল রাখুন। ২০ সেকেন্ড চেপে ধরে রাখুন তারপর আঙুল সরিয়ে নিন। এভাবে আরো দুবার করুন। এবার বিছানার ধারে বসুন এবং ডান পা উঠিয়ে বাম হাঁটুর ওপরে রাখুন। হাঁটুর হালকা জায়গাটি খুঁজে বের করুন এবং দ্বিতীয় হাঁটু দিয়ে একইভাবে চাপ দিন। এক পায়ের সাহায্য নিয়ে আঙুল দিয়ে অন্য হাঁটুর উল্টো পিঠের জায়গাটি খুঁজে বের করুন। বুড়ো আঙুল এবং হাতের অন্য চার আঙুল দিয়ে হাঁটুতে মৃদুভাবে চেপে ধরুন।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৫৯
১৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×