হোটেল। অচেনা কোন শহরে একজন পথিকের একটু বিশ্রামের, একটু নিদ্রার জায়গা। হোটেল সর্ম্পকে ছোট থেকে শুনেছি আর বাংলায় সিনেমায় তো প্রায় দেখতাম, বিশেষ করে বাংলায় সিনেমায় ভিলেনদের অবৈধ হীরার লেনদেন করার একটি অবধারিত স্থান ছিল হোটেল।
কিন্তু আমার হোটেল বাস করার সুযোগ আসল অনেক পরে। অষ্টম শ্রেণীতে বৃত্তি দেওয়ার জন্য খুলনা শহরে আসতে হল, শহরে তখন অসংখ্যা আত্নীয় থাকলেও স্যারের অনুরোধে আমার বাবা স্যারের সাথে হোটেলে থাকার অনুমতি দিলেন, স্যারের মেয়েও সে বছর আমাদের সাথে বৃত্তি দিতে এসেছিল। কোহিনুর নামে এক হোটেলে আমরা ছিলাম। তিন দিন-দুই রাতে সেই হোটেল বাস এক চরম অভিজ্ঞতা!! অন্য একদিন হয়তো লিখব।
এরপর কক্সবাজার হোটেলই বেশি থাকা হয়েছে, অন্য অন্য স্থানে খুব কম। কক্সবাজারের কথা বলি, সিজনে এরা গলাকাটা ভাড়া রাখে এই ধরুন গত বছর ১৬ই ডিসেম্বর আমরা একটি কর্টেজে রুম নেই ভাড়া রাখে ৩০০০ টাকা তাও আগে বুকিং দিয়ে ছিলাম বলে, গিয়ে দেখি ৫০০০ পর্যন্ত উঠেছে কিন্তু এই রুমের স্বাভাবিক ভাড়া হল ১০০০-১২০০ মধ্যে। আরো কমেও পাওয়া যায়।
এতক্ষন হোটেল নিয়ে এক কথা বলার কারণ আমার প্রাণের খুলনা শহরের এক হোটেলের জনকল্যামূখী সেবা দেখে সত্যি মনটা ভাল হয়ে গেল। এমনিতেই দেশের কোন ভাল খবর দেখলে চোখে জল চলে আসে তার উপর নিজের শহর হলেতো কথাই নেই।
"হোটেল টাইগার গার্ডেন ইন্টারন্যাশনাল" তিন তারকা হোটেল, টানা পাঁচ বছর ধরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ভর্তি হতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শিক্ষার্থীদের তারা বিনা মূল্যে থাকা–খাওয়ার ব্যবস্থা করে আসছে। শুধু খাওয়া বা ফ্রি থাকার ব্যবস্থা না হোটেল থেকে নিজেদের পরিবহনে পরীক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছেও দেয় তারা।
খবরটি শুনে সত্যিই মনটা ভরে গেল। বাংলাদেশের প্রতিটি ব্যাবসায়ী যদি এরকম একটু চিন্তা করত! আমরা সত্যি সত্যি মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর হয়ে যেতাম খুব তাড়াতাড়ি, রসিকতা করে বলতে হতো না।
কৃতজ্ঞতা প্রথম আলোর প্রতি, যাদের মাধ্যমে আমার প্রাণের শহরের একটি ভাললাগার বিষয় জানতে পারলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ২:৩২