আরবের হাজার রজনী গল্পগ্রন্হ নিয়ে আলিফ লাইলা নামে একটি মেঘা সিরিয়াল প্রচার হত, প্রতি শুক্রবার ঝলক দিয়ে চলে যেত এক সপ্তাহের অপেক্ষা.......। বর্তমান সরকার কর্তৃক রাজাকার তালিকা তেমনি ঝলক দিয়ে প্রকাশিত হল, এক বিশাল বিতর্ক জন্ম দিয়ে অপেক্ষা পালা ধরিয়ে পরবর্তী পর্বের আয়োজন চলছে, জানিনা এক সপ্তাহ পরে তা আবার প্রকাশিত হবে নাকি এক বছর পরে তবেই এটা বলা যায় এই ঝলক প্রকাশিত তালিকা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বিশাল বিতর্ক জিইয়ে থেকে গেল।
প্রথম বিতর্ক:
প্রথমে বলা হল- এটি পাকিস্থানী শাসকদের দ্বারা লিপিবদ্ধ তালিকা, সরকার শুধু প্রকাশ করেছে!!!
পরে আবার বলা হল- এটি দালাল আইনে যাদের নামে মামলা হয়েছিল তাদের তালিকা!!!
কোথায় পাকিস্থানী শাসকগোষ্টী আর কোথায় ৭২-৭৪ সালের দালাল আইনে মামলা!!! এত বড় একটি কাজ তারা করল কিন্তু ঠিকমত বলতে পারল না কোন সময়ের এই তালিকা!!!
ভবিষ্যত বিতর্ক:
এইমধ্যে অনেকেই এই তালিকা ডাউনলোড দিয়ে রেখেছে, এই সরকার আবার তালিকা প্রকাশিত করবে এবং দেখা যাবে আওয়ামলীগের যাদের নাম আসে বেশিভাগ নাম হাওয়া হয়ে যাবে, পুরানো আর নতুন তালিকা পাবলিক মিলাবে আর শুরু হবে বিতর্ক। পরবর্তী প্রকাশিত তালিকা খুব বেশি গ্রহণযোগ্য হবে বলে মনে হয় না।
আওয়ামী লীগকে ভবিষ্যতে অনেক কিছু মোকাবেলা করতে হবে:
রাতের ভোট এক সময় এ দেশে শেষ হবে, ফিরবে গনতন্ত্র। ক্ষমতায় আসবে জনগনের সরকার। সেই সরকার যদি এই প্রকাশিত তালিকা ধরে আওয়ালীগের নেতাদের বিচার করে তখন কি পরিমাণ সমস্যা আওয়ামলীগ মোকাবেলা করবে তা খালেদা জিয়ার মামলা থেকে বুঝা যায়। খালেদা জিয়ার মামলাটি করা হয়েছিল তিন উদ্দিনের আমলে, অবশ্য সেই সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নামেও ছিল মামলা। বর্তমান লীগের নেতারা সবসময় বলে খালেদা জিয়ার মামলা বর্তমান সরকার করেনি, ফখরুদ্দিনের আমলে করা মামলা অতএব এই মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য করা নয়।
খুব সহজে বিতর্ক এড়িয়ে এই তালিকা করা যেত:
রাজনৈতিক ইচ্ছা না থাকলে এই তালিকা খুব সহজে গ্রহযোগ্য করা যেত, প্রতি থানা ভিত্তিক দল-মত নির্বিশেষে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ৫ সদস্যের তালিকা করে এই তালিকা তাদের কাছে দিলে তারা যাচাই বাচাই করে নিজেদের মতামত নোট আকারে দিত এবং তালিকা প্রকাশের সময় সেই নোট সংযুক্ত করে দিলে আশা করি কোন বিতর্ক থাকত না।
মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, রাজাকারদের তালিকা, যুদ্ধে নিহতদের তালিকা এই জাতির খুবই আবেগীয় একটি বিষয়, এটা নিয়ে দলীয় সার্কাস খেলা ঠিক নয়।
পৃথিবীর সব স্বৈরাচার নিপাত যাক, গনতন্ত্র মুক্তি পাক।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৪