মেমসাহেবকে আমি ভালোবেসেছিলাম ২০০২ সালের ১৫ ই ফেব্রয়ারী। দিনটা মনে আছে কারন সেদিন ছিলো ভালোবাসা দিবসের পরের দিন। যদিও ভালোবাসা দিবস বলতে তখন কিছুই বুঝতাম না। আমাদের লেখালেখির গুরু শফিক রেহমান ভাই তখন মাত্র এ দিবসটা বাংলাদেশে আমদানী করছেন। আর সে দিবস উপলে যায় যায় দিন পত্রিকাটি বিশেষ একটি সংখ্যা প্রকাশ করেছিলো। আমার একটি লেখা ছিলো তাতে। আমি চট্টগ্রাম বইমেলাতে একটা দোকান দিয়েছিলাম, সে দোকানে প্রচুর বিক্রি হতো এ সংখ্যাটি। দিবসটির পরদিন কিছু বই আনলাম দোকানে বিক্রি করার জন্য। সেখানে ছিলো মেমসাহেব বইটি। নামটা আনকমন দেখে এক বসায় পড়ে ফেললাম। আর সে সময়ই ভালোবেসে ফেললাম মেমসাহেবকে। এরপর বারবার পড়া, একটু একটু করে জানা মেমসাহেবকে। আর ভালোবাসা। এমনি ভালোবাসা যে কখোনো বাসেনি কেউ।
কেমন আমার মেমসাহেব? বইয়ের নায়ক বাচ্চুর ভাষায় প্রথম দিনের মেমসাহেবের কথা বলি : এমন বুদ্ধিদীপ্ত উজ্জল গভীর ঘন কালো টানা টানা দুটি চোখ আগে কখোনো দেখিনি। একবার নয়, দুবার নয় বারবার দেখলাম। অসভ্যের মতো, হ্যাংলার মতো আমি শুধু সেদিকেই তাকিয়ে থাকলাম। আমি যদি খোকনদার মতো সাহিত্যোর ছাত্র হতাম তবে হয়তো কালিদাসের মেঘদুতের কোট করে বলতাম : তন্বী শ্যামা শিখরদশনা পক্কবিম্বাধরোষ্ঠী, মধ্যো মা চকিতহরিনীপ্রেনা নিম্ননাভি:. . .
শুধু কি এই? অবশ্যই না। মেমসাহেবের আছে মায়া, পৃথিবীজোড়া মায়া। আমি ভাবি- মেমসাহেব কাদে আমার জন্য, মেমসাহেব হাসেও আমার জন্য। মেমসাহেব গংগার বুকে ভেসে ভেসে আমার বুকে মাথা রেখে শোয়, পৃথিবীর সব সুখ খোজে।
তবে নিমাইবাবু একটা ভুল করেছেন। তার মেমসাহেবকে তিনি মেরে ফেলেছেন উপন্যাসে। আমি অবশ্য অতটা নিষ্ঠুর নই। আমি যে পাতায় মেমসাহেবের মৃত্যু হয়েছে সে পৃষ্ঠা থেকে বাকী পৃষ্ঠাগুলো বই থেকে ছিড়ে ফেলেছি।
আর তাই আমার মেমসাহেব আজো বেচে আছে আমার হ্রদয়ের গোপন কোণে ।
তুমি ভালো থাকো মেমসাহেব, আমার মেমসাহেব। পৃথিবীর সব সুখ নিয়ে তুমি ভালো থাকো, সুখে থাকো।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




