যে জলে সংসার গড়ে, শিকড় ছেড়ে;
আপ্রাণ সাধনা তোমার, আঁকড়ে ধরার
সে জলের বাহু। অস্পর্শ বুকের অস্থির কম্পনে
যার সুখে দোলাও মাথা। কাঁপাও পাতা।
কলমি লতা, সে তোমার সুখ নয়। প্রেমও না।
স্রোতের সাথে বিনিময় হয়না।
যে জলে চাঁদের ছায়া, সেখানেই বসত তোমার।
সে জলই ধারণ করে আকাশের বিশালতা।
কলমি লতা, এটাই নিষ্ঠুর সত্য;
সে জলে অনাহূত তুমি। আহ্লাদের নৃত্য তোমার ;
ম্লান হয়ে গেছে আজ। বিষণ্ণ তুমি একা হয়ে গেছ।
অথচ, পাশে আছে প্রিয় জল। তোমার অদৃশ্য ছল-ছল
চোখের পানে তাকাবার তাঁর নাই অবসর!
সে জল বহুগামী। বহু ঘাটে নোঙ্গর ফেলে;
কৌশলে তীর ভাঙে। মায়ার আঁচলে জড়িয়ে
টেনে নিয়ে চলে কচুরিপানার দল। কি নিপুন ছল;
কাদা। পলি। সাথে চলে তাঁর।
কলমি লতা, সে পলিতেই গড় পুনঃসংসার!
ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত তোমার ঘুম ভাঙে।
সব জড়তা, অস্থিরতা শেষে;
সীমাহীন উল্লাসে। চোখ মেলে দেখ নিজেকে।
এক সন্ন্যাসী হাওয়া-কাফেলার দল এসে
স্পর্শ করে তোমার মাথায়। হাত বুলায়
নুয়ে পড়া বিবর্ণ পাতায়। আকাশে সূর্য হাসে।
তোমার ঘরে আসে, রৌদ্র-দূত।
হাওয়া,রৌদ্র একসাথে বলে কথা;
কণ্ঠে ধারণ করে, এক পৃথিবী নিরবতা।
ফিসফিসিয়ে বলে;
কেমন আছো, কলমি লতা!