আমি যখন খুব ছোট ছিলাম, স্বৈরাচারী সামরিক শাসক হোসেন মুহাম্মদ এরশাদ 'রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম' করেন। বাড়ির সবাই তখন এ নিয়ে কানাঘুষা করছিলেন। স্বভাবতই, আমার মনে তখন প্রশ্ন জেগেছিলো- রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম অর্থ কি? রাষ্ট্রের কি ধর্ম থাকতে পারে? আর, রাষ্ট্র ধার্মিক করলে- তা কি ইসলাম সম্মত? সাথে সাথে আরেকটি প্রশ্ন জেগেছিলো- 'ইসলামী রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম' - এই দু'টির মাঝে কোন ব্যবধান আছে কি?
যখন জ্ঞান হলো, তখন জানতে পেরেছিলাম, শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক, মাওলানা শামসুদ্দিন কাসেমী প্রমূখ আলেম যারা রাজনীতির মাঠে তখন এরশাদের বিরুদ্ধে ছিলেন তারা সবাই এরশাদের এই কর্মকে ভন্ডামী বলে আখ্যায়িত করেছিলেন এবং তা কোনক্রমেই ইসলামি নয় বলেছিলেন।
কিন্তু, যখন আমাদের দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলোগুলো - কোন প্রতিবেশী দেশ কিংবা পশ্চিমা দুনিয়া'র দয়া-দাক্ষিণ্য পেতে রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম বিলের বিরোধিতা করে, তখন এদেশের আলেম সমাজ বা মুসলিম সমাজ তা আত্মসম্মানবোধের জায়গা থেকে গ্রহণ করে নিলেন।
মূলত আলেম সমাজ কিংবা ধর্মপ্রাণ মুসলমান এখনও রাষ্ট্র ধর্ম ইসলামকে গ্রহণ করছেন প্রতিপক্ষের ইসলাম বিদ্বেষের প্রতিবাদ স্বরূপ। প্রকৃত অর্থে ইসলামে রাষ্ট্র ধর্ম বলে কোন জিনিষ নেই। ইসলামের কাছে গ্রহণযোগ্য হলো - ইসলামি রাষ্ট্র, ইসলামি হুকুমত কিংবা খিলাফত আলা মিন হাজিহিন নবুওয়াহ অর্থাৎ মহানবী হযরত মুহম্মদ (সঃ) যেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করে গিয়েছেন, ঠিক সেসরকম একটি রাষ্ট্র।