somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সত্যপথিক শাইয়্যান
অন্যদের সেভাবেই দেখি, নিজেকে যেভাবে দেখতে চাই। যারা জীবনকে উপভোগ করতে চান, আমি তাঁদের একজন। সহজ-সরল চিন্তা-ভাবনা করার চেষ্টা করি। আর, খুব ভালো আইডিয়া দিতে পারি।

আমার ব্যবসাটি পুঁজিবাদী কোন সংস্থা নয়

০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



লাল কোর্তাধারী কেউ একজন সম্প্রতি আমার একটি পোস্টে মন্তব্য করেছিলেন যে, আমার ব্যবসা থেকে পাওয়া লভ্যাংশ যেন আমি কোন সামাজিক কর্মকান্ডে ব্যয় না করি। বরং, সেটি যেন পূনরায় আমার ব্যবসাতেই বিনিয়োগ করি। একটু চিন্তা করলাম। লোভ মানুষকে ধ্বংস করে। আর, সম্পদ যত নিজের কাছে থাকবে, তা ততো লোভের সৃষ্টি করবে। তাই, নিজের ব্যবসায় লাভের টাকা ফিরিয়ে নেওয়া মানে লোভের কাছেই ধরা দেওয়া, পুঁজিবাদের দিকেই এগিয়ে যাওয়া।

সমাজ চিন্তাবীদ সৈয়দ মবনু'র মতে, পুঁজিবাদীদের মধ্যে আমরা প্রধানত চারটি বৈশিষ্ট্য দেখতে পাই-

১) ব্যক্তির সম্পত্তিতে স্বত্বাধিকারী ব্যতীত অন্য কারো কোন অধিকার নেই।
২) অর্থোপার্জনের যে কোন পথ বা পন্থা সেই ব্যক্তি অবলম্বোন করে।
৩) সম্পদের মালিক যেখানে ইচ্ছে সেখানে সম্পদ খরচ করে।
৪) জনসাধারণের স্বার্থকে উপেক্ষা করে একজন যত ইচ্ছে তত সম্পদ সঞ্চয় করতে পারে।


পুঁজিবাদীদের কবলে পড়ে দেশের অবস্থা খুব একটা ভালো অবস্থায় নেই। শহরাঞ্চল থেকে ছটিয়ে পুজিবাদীদের সংস্থাগুলো আজ গ্রামের দরিদ্র মানুষদের হাস-মুরগী, ডিম, গরু এমনকি বৌ-ঝিদের ইজ্জতের দিকে হাত বাড়াচ্ছে। পুঁজিবাদীদের অর্থ সমাজের উচ্চ শ্রেণীদের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। সবাই এখন ইয়া নফসি, ইয়া নফসি অবস্থা।

পুঁজিবাদীদের চরম শত্রু মার্ক্সবাদীরাও আজ মুখ বন্ধ করে বসে আছেন। জনগণের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের উর্ধ্মূল্যের মধ্যে গুদামজাতকারী কালোবাজারীদের উৎপাতের দিক থেকে মুখ অন্য দিকে ফিরিয়ে নিয়েছেন। ঋণের ভারে জর্জরিত মানুষের স্বার্থ রক্ষা আর তাঁদের দিয়ে হয় না।

১৯৭১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত, আমাদের বৈদেশিক ঋণ ছিলো প্রায় ২১২৫ বিলিয়ন টাকা। সরকার তার উন্নয়ন প্রকল্পের জন্যে আরো ৭০,৫০২ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার চিন্তা করছেন। ঋণ নিয়ে দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, ঠিক আছে। কিন্তু, দেশের মানুষের মানসিকতার উন্নয়ন হচ্ছে কি? হেফাজতের তান্ডব দেখে তা মনে হচ্ছে না।

দাতা সংস্থাগুলো ঋণের বোঝা চাপিয়ে কিভাবে একটি দেশকে পরনির্ভরশীল করে তোলে, সেটার একটি প্রমাণ পাওয়া যায় মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা 'এন,এস,এ'-এর সাবেক এজেন্ট জন পার্কিন্সের লেখা একটি বই থেকে। সেই বইতে তিনি চাকুরীকালীন নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে লিখতে গিয়ে বলেছিলেন-

প্রথমত বিশাল অংকের আন্তর্জাতিক ঋণ প্রদানকে ন্যায়সঙ্গত করার ব্যাপারে আমাকে কাজ করতে হবে...। দ্বিতীয়ত, সেই ঋণ নেওয়া দেশটিকে কিভাবে দেউলিয়া করা যায় আমাকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে যাতে সেই দেশটি দাতা দেশগুলোর কাছে চিরতরে বাধা পড়ে। এতে করে যখন সামরিক ঘাটি স্থাপনে তাদের ভূমি, জাতিসংঘে ভোট দান কিংবা তাদের প্রাকৃতিক সম্পদ আমাদের কাছে দরকার পড়বে, তখন তারা আমাদের সহজ শিকারে পরিণত হবে।

তিনি আরো লিখেছেন-

আমার মতো মানুষদের কাজের ফলে ইকুয়েডরের মতো একটি দেশের দারিদ্র সূচক ৫০ থেক ৭০ শতাংশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। বেকারত্ব বা অর্ধ-বেকারত্ব ১৫ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ শতাংশে। দেশের ঋণের পরিমাণ ২৪ কোটি ডলার থেকে বেরে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার কোটি ডলারে। দেশের জাতীয় সম্পদের মাত্র ৬ শতাংশ ব্যয় হয় দরিদ্র জনগণের জন্যে, যা আগে ছিলো ২০ শতাংশ।

নিজের ব্যবসার লভ্যাংশ আবার নিজের ব্যবসাতেই ফিরিয়ে নেওয়া আমাকে পুঁজিবাদী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করারই নামান্তর। যদিও, আমি যে সম্পদ অর্জন করি বা করছি, সেটার সিংহভাগই মানুষের কল্ল্যাণে নিয়োজিত ব্যক্তিদের প্রকল্পে দানের জন্যে। আমার প্রতিষ্ঠান কখনোই পুঁজিবাদী ধ্যান-ধারণায় দূষিত হবে না।







সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:১৩
১১টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×