আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা ও সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত নায়েক দীনেশ চক্রবর্তী। আমি বালুচর দুর্গাবাড়ির সেবায়েত। আমার বাবার নাম ধীরেন্দ্র চক্রবর্তী। পূণ্যভূমি সিলেট ৩৬০ আউলিয়ার দেশ। শাহ জালাল, শাহ পরান, শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু, শ্রী শ্রী দূর্গা মাতার সংস্পর্শে একটি ধর্ম নিরপেক্ষ সিলেটে আমরা বাস করি।তাঁকে সবাই বলতেন গুণী একজন মহাপুরুষ। আমাদের ধর্মের মতে বিশিষ্ট একজন সন্যাসী। আমাদের সব ধর্মের লোকের সাথে যোগাযোগ, মেলা-মেশা এবং আত্মীয়তা আছে। অন্য ধর্মের বিয়েতেও যাওয়া-আসা আছে।
শাহ জালাল বাবা সম্পর্কে পূর্বপুরুষ থেকে শুনে আসছি। তিনি ৩৬০ আউলিয়া নিয়ে সিলেট এসেছিলেন। গৌর গবিন্দ রাজা নদীর সব নৌকা সরিয়ে ফেলায় নদী পার হতে পারছিলেন না। তখন শাহ জালাল বাবার একজন সাহাবী বললেন- গুরু আপনার জায়নামাজ নদীতে বিছিয়ে পার হয়ে যান। তখন শাহ জালাল বাবা নদীতে জায়নামাজ বিছিয়ে ৩৬০ জন আউলিয়া নিয়ে নদী পার হয়ে গেলেন।
যখন গৌড় গোবিন্দ রাজা দেখলো তিনি চলে আসছেন, তখন সে ভয় পেয়ে উধাও হয়ে গেলো। তখন গৌড় গোবিন্দ চিন্তা করলো, আমি তো ভয় পেয়ে চলে আসলাম। কিন্তু, মানুষটাকে কিভাবে দেখবো! তখন সে সাপের রুপ ধরে শাহ জালাল বাবাকে দেখে আসলো। এরপরে, শাহ জালাল বাবা যখন আজান দিয়েছিলেন, তখন, গৌড় গোবিন্দ রাজার সাত তলা বিল্ডিং ভেঙ্গে পড়েছিলো।
আমরা মানুষ হিসেবে শাহ জালাল বাবার মাজারে যাই। শাহ জালাল বাবার কাছে ক্ষমা চাইতে মোমবাতি, আগরবাতি, শিন্নি, প্রসাদ আমরা বাবার মাজারে দেই। সিলেট তো চলছেই শাহ জালাল বাবার নামে।
ভেদাভেদ ছাড়া সকল মানুষকে যদি ভগবান এক করে দিতেন, আমি তাতে খুশি হতাম। সবাই মিলে-মিশে থাকাই মঙ্গল।
[হযরত শাহ জালাল (রহ)-এর উপর ডকুমেন্টারী করতে সম্প্রতি সিলেট গিয়েছিলাম। সেই সময়ে এই সাক্ষাৎকারটি দিয়েছিলেন বালুচর দুর্গাবাড়ির সেবায়েত দীনেশ চক্রবর্তী। নিচের গানটি সেই ডকুমেন্টারির অংশ। ডকুমেন্টারীটি ১ম রমজানে মুক্তি পাবে।]
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:১৮