২০২০ সালের মাঝামাঝি দিকের ঘটনা। মহামারী করোনার আঘাত সয়ে শাহ জালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন অনলাইন ক্লাস শুরু হয়েছে। এই সময় আমার কাছে খবর আসলো, আমার ডিপার্টমেন্ট ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের অনেক শিক্ষার্থী ল্যাপটপের অভাবে ঠিক মতো ক্লাস করতে পারছে না। কি করা যায়? এতোজনকে তো একসাথে ল্যাপটপ দেওয়া সম্ভব না!
তাই, ঠিক করলাম, আমার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কয়েকটা ল্যাপটপ কিনবো। রায়ান্স কম্পিউটার তখন ১০-১২ মাসের কিস্তিতে ল্যাপটপ বিক্রি করছে। ডিপার্টমেন্টের একটি ফেসবুক পেজে ঘোষণা দিলাম যে ১০-জনকে ল্যাপটপ কিনে দেওয়া হবে। তবে, শর্ত- প্রতি বছর একবার নিজের অবস্থা জানিয়ে রিপোর্ট লিখতে হবে আর চাকরী পেলে ডিপার্টমেন্টের অভাবী কোন শিক্ষার্থীকে ল্যাপটপ কিনে দিতে হবে।
তবে, একটু হতাশ হয়েই লক্ষ্য করলাম, যারা আবেদন করেছে, তারা ঠিক মতো সম্বোধন বা নিজের প্রয়োজনকে ভালো ভাবে তুলে ধরতে পারেনি। অনেকেই ল্যাপটপ দিয়ে কি করবে তা ভালো ভাবে ব্যাখ্যা করতে পারলো না।
কয়েক দিনে এমন গেলো, হঠাৎ একদিন, একটি এম,বি,এ'র একটি মেয়ের আবেদন পেলাম। আমি তাঁর ইংরেজী জ্ঞান দেখে সত্যিই অভিভূত! বুঝতে পারলাম, মেয়েটি অসাধারণ কেউ হবে, দেশকে ভবিষ্যতে কিছু একটা দিতে পারবে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলা, মেয়েটার পরিবারের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। তাকেই ল্যাপটপ দিব্যও বলে ঠিক করলাম।
গত সপ্তাহে, মেয়েটি জানিয়েছে, কিভাবে সে ল্যাপটপটিকে কাজে লাগিয়ে পড়ালেখায় ব্যবহারের পাশাপাশি নিজের আয়ের একটি উৎস তৈরি করেছে। এখন সে টাকা জমিয়ে ডিপার্টমেন্টের আরেকজন শিক্ষার্থীকে একটি ল্যাপটপ কিনে দিতে যাচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৮