মুসলমানদের হাতে যখনই ক্ষমতা উঠেছে, তখনই তারা প্রথাগত জ্ঞানের প্রসারে স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয় না করে মসজিদ-মাদ্রাসা বেশি করেছে বলে অভিযোগ করা হয় প্রায়ই। এ ব্যাপারে অটোমান বা উসমানীয় রাজাদের প্রতি সবচেয়ে বেশি আঙ্গুল তোলা হয়। যেহেতু, আব্বাসি বা উসমানীয় রাজারা বেশি দিন ক্ষমতায় ছিলেন, সেহেতু তাদের দিকে খেয়াল বেশিই দেওয়া হয়ে যায়, যা আসলে ভুল।
সবচেয়ে বড় ভুল হচ্ছে, সকল অটোমান রাজাদের খলিফা হিসেবে ধরে নেওয়া। অটোম্যান বা আব্বাসীরা খলিফা কিনা তা নিয়ে অনেক মতভেদ আছে। সবচেয়ে পপুলার মতামত হচ্ছে, ইসলামের শেষ নবী (সাঃ)-এর মৃত্যুর পর খেলাফত ৩০ বছর চলেছিলো। যেহেতু, অটোমান বা আব্বাসীরা খলিফাই ছিলেন না, সেহেতু তাদের কাছ থেকে ভালো তেমন কিছু আশা করাটাই উচিৎ নয়। তবে, বিশ্বের প্রথম দিকের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মুসলমানদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে শুনা যায়। ইউরোপের অন্ধকার যুগে মুসলমানদের হাতেই জ্ঞান-বিজ্ঞানের চাবিকাঠি ছিলো বলে মতামত প্রকাশ করেছেন অনেক ইউরোপীয় চিন্তাবিদ।
আরেকটা কথা বলতেই হবে। জ্ঞান কখনোই একক কোন সভ্যতার সম্পত্তি নয়। আজকের এই জ্ঞান-বিজ্ঞান মানব সভ্যতার ধাপে ধাপে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মুসলমানরা যেমন নিজের একক কৃতিত্বের দাবী করতে পারে না, ঠিক তেমনি অন্য কোন সভ্যতাও করতে পারবে না।
ইসলামী সভ্যতার আগে যেমন পিথাগোরাসরা ছিলেন, তেমনি নিউটন আর আইনস্টাইনদের আগে ইবনে সিনা, আল-বিরুনীরা বিজ্ঞানের কর্ণধার হয়েছিলেন।
আর, সেজন্যেই, জ্ঞানের আলোর দিকের সকল কৃতিত্ব যখন এইসব সভ্যতা নিজেদের মাঝে ভাগাভাগি করে নিয়েছে, অন্ধকার দিকের দায়ভাগটা কেন নিবে না? কেন তারা তা না করে একের দায় আরেকজনের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে!
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৫৯