
কয়েক দিন আগে একটি পোস্ট দিয়েছিলাম। ঢাকার লালমাটিয়া আড়ং-এর নিচে ১২-১৫জন দুঃস্থ, গৃহহীন মানুষ রাতে চাদর পেতে ঘুমায়। আমি তাদেরকে প্রথম দেখি শীতের প্রথম দিকে। প্রায়ই খোঁজ নিতে যেতাম মানুষগুলো কি করছেন জানতে। একদিন রাতে বৃষ্টি হলো। ঘর থেকে বেরিয়েও যেতে পারলাম না।
পরের দিন ভোর ৬-টার সময় সেই জায়গায় গেলাম। সেই কনকনে শীতেও কিছু মানুষ তখনো শুয়ে আছে। গায়ে একটি করে পাতলা চাদর দেওয়া। সেই দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা দিব্যি ঘুমাচ্ছেন। সেই দিন সকালেই ঠিক করলাম, এদের জন্যে বাসস্থান করে দিতে না পারি, বৃষ্টির রাতে শান্তিতে কিছুক্ষণ ঘুমানোর ব্যাবস্থা করে দিবো।
কি করা যায়? আমি ফোল্ডেবল মাউন্টেনিং টেন্ট বা তাঁবুর কথা জানতাম। এখন, আমি যদি প্রত্যেক রাতে কয়েকটি মাউন্টেনিং টেন্ট আড়ঙের সামনে পেতে রাখি, আর সকাল বেলা তুলে নিই, তাহলে অন্ততঃ রাতেরবেলা থাকার কোন ঝামেলা থাকবে না দুঃস্থ মানুষগুলোর।
এখন সেই তাঁবু পাতলেই তো চলবে না! কর্তৃপক্ষের অনুমতি না থাকলে যেখানে সেখানে তাঁবু ফেললে চলবে কি? চলে গেলাম স্থানীয় কমিশনার অফিসে। কিন্তু, বিধি বাম! কমিশনার সাহেব অনুমতি দিলেন না। কারণ, রাস্তার উপড়ে এভাবে তাঁবু ফেলা খারাপ দেখাবে!
বললেন প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করতে। আমি তেজগাঁও থানার পুলিশের এডিসির সাথে দেখা করতে গেলাম। জানতে পারলাম, পুলিশ সপ্তাহ চলছিলো বলে তিনি অফিসে আসেননি। ভারপ্রাপ্ত একজন অফিসারের সাথে কথা বলতেই তিনি আটকে উঠলেন! বললেন- ''কি বলে, মশাই! তাঁবুর ভিতরে যদি কোন অকারেন্স ঘটে তাহলে কে দায়িত্ব নেবে? সবাই তো আপনাকেই ধরবে!''
এরপরে তিনি শুরু করলেন কিভাবে এক বড়লোকের ছেলে হেরোয়েনখোর হয়ে রেললাইনের কাছের বস্তিতে থাকতো। সেই ছেলেকে তিনি কিভাবে পথে নিয়ে আসলেন সেই গল্প আমাকে শুনালেন।
আমিও মাথা নিচু করে দিব্যি বাসায় এসে নাকে তেল না দিয়ে ঘুমাতে গেলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৩৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



