"কি খুঁজছেন?" রাস্তার পাশের ডাস্টবিনের ময়লায় কি যেন খুঁজছিলেন এক ভিক্ষুক। জীর্ণ কাপড় পড়া মানুষটা আমার কথার উত্তর দিলেন না। হাতে ধরা ময়লা একটি ঠোংগার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন।

সিলেটে আমার অফিসটি যে জায়গায়, সেখান থেকে খুব কাছেই হযরত শাহ জালাল (রহঃ)-এর মাজার। আমার অফিসের কাছেই জেলা জজ সাহেবের বাসার গেইটে এমন এমন সব মানুষ প্রায়ই ভিড় করেন। মানুষগুলো কেমন যেন! অনেকে আমার প্রশ্নের উত্তর দেন, অনেকে আমাকে পাত্তাই দেন না! একদিন এক ময়লা কাপড় পড়া মানুষকে আমি কিছু টাকা দিতে চেয়েছিলাম। মানুষটা আমার দিকে এমন দৃষ্টিতে তাকালেন যে আমি সেখান থেকে এক রকম পালিয়ে এলাম।
ঢাকার জাকির হোসেইন রোডের বিহারী পট্টিতে থাকা ৮০-৯০ বয়সী এমন এক মহিলা আছেন। তিনি রোজ সকালে রাস্তায় এসে বসে থাকেন। কারো কাছে হাত পাতেন না। কেউ কিছু দিলে নেন। না দিলেও ক্ষতি নাই! আমি তাঁকে গত দুই বছরে কারো কাছে হাত পাততে দেখি নাই।
এমনসব অদ্ভুত মানুষদের ভিড়ে পথচলা আমি শহরগুলোর রাস্তায় বুড়ো রিকশাওয়ালাদের কষ্ট করতে দেখি। এসব মানুষদের দেখে চিন্তা করি, যারা 'ইকিগাই' বইটি লিখেছেন, তাঁরা কি এসব খেটে-খাওয়া মানুষদের খোঁজ জানেন কি? একবারও অবসর না নিয়ে নিজেদের জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত খেটে খাওয়া আত্মসম্মানবোধওয়ালা এইসব মানুষদের জীবনের গল্প থেকে সারা বিশ্ব কোন শিক্ষা নিতে পারে কি?
সময়ে পেলেই আমি দেশের মানুষদের এসব কাণ্ড-কারখানা নিয়েই চিন্তা করার চেষ্টা করি। গাজা'র মানুষগুলো একে একে শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাদের জন্যে দুঃখ হয়। কিন্তু, নিজের দেশের এমন অদ্ভুত মানুষদের জন্যে তার চেয়েও বেশি কষ্ট হয়!
PHOTO: AMRAN HOSSAIN, The Daily Star
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৫২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



