
ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ভাই বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। ইতিমধ্যে, পুরো দেশবাসী তা জেনে গিয়েছেন। হবিগঞ্জের চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলার নির্বাচনী ফলাফলে দেখা গিয়েছে, ব্যারিস্টার সুমন ভাই নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে প্রায় ১ লক্ষ বেশি ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। এই আসনে তার কাছে পরাজিত হোন নৌকা প্রতীকের বিমান প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী।
সুমন ভাইয়ের আসল চ্যালেঞ্জের শুরু এখনই। পিছিয়ে পড়া জনপদ চুনারুঘাট ও মাধবপুরকে ঢেলে সাজাতে হবে। এই কাজটি মাত্র ৫ বছর সময়ের মাধ্যে তিনি করতে পারবেন কি? পারবেন কি বেকারত্বের সংখ্যা কমিয়ে এলাকার তরুন-যুব সমাজকে আলোর পথ দেখাতে? নিজ উদ্যোগে যেমন ৪৯টি ব্রিজ বানিয়েছেন, এখন সরকারী সম্পদের সহায়তায় পারবেন কি প্রয়োজনীয় সংখ্যার ব্রিজ ও রাস্তা তৈরী করতে? তাঁর এলাকার জনপদে খাঁদ্য, বস্ত্র, বাস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা, সংস্কৃতি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, জ্বালানী চাহিদা মিটাতে পারবেন কি? সর্বোপরি, পারবেন কি চুনারুঘাট ও মাধবপুরকে পুরো দেশবাসীর কাছে মডেল হিসেবে তুলে ধরতে?
চুনারুঘাটের বর্তমান অবস্থাঃ
৪২৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের চুনারুঘাট উপজেলার জনসংখ্যা ৩,০২,১১০ জন। এই উপজেলার শিক্ষা হার ৫৪.৮০%। এই উপজেলার কর্মরত ডাক্তারের সংখ্যা মাত্র ১৪-জন। অর্থাৎ, ২১৫৭৯-জনের জন্যে মাত্র ১-জন ডাক্তার রয়েছেন। এই উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ৩৮৫টি গ্রামে এখন পর্যন্ত কোন বৃহৎ শিল্প কারখানা গড় উঠেনি। অথচ, এই উপজেলার সাথে সংযুক্ত রয়েছে ৩টি নদী। এই উপজেলার মানুষদের বাৎসরিক খাদ্য চাহিদা ৬৯,৬৬৪ মেঃ টন। এছাড়াও, চুনারুঘাটে রয়েছে মাত্র ২টি কলেজ। এই উপজেলায় নদীর সংখ্যা ৩টি, পুকুরের সংখ্যা ৩৭১৮টি এবং মাছের মোট উৎপাদন ৩৮২৬.০ মেঃটন হলেও সরকারী জরিপ অনুযায়ী মৎস্যজীবীর সংখ্যা মাত্র ৬৪৭ জন! তাছাড়া, এই উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ২৫টি চাবাগান থাকলেও, দিনে ১৪-১৫ ঘণ্টা লোডশেডিং-এর কারণে উৎপাদনে ধস নেমেছে বাগানগুলোতে। চুনারুঘাটের দৈনিক বিদ্যুৎ চাহিদা ১৫ থেকে ১৮ মেগাওয়াট হলেও পাওয়া যাচ্ছে মাত্র দৈনিক ৩ থেকে ৫ মেগাওয়াট!

মাধপুর উপজেলার বর্তমান অবস্থাঃ
অন্যদিকে, ব্যারিস্টার সুমন ভাইয়ের অন্য এলাকা মাধবপুরের আয়তন ২৯৫ বর্গ কিলোমিটার। ১১টি ইউনিয়ন ও ২৮৮টি গ্রামের জনসংখ্যা ৩,১৯,০১৬ জন। মাধবপুর উপজেলার ৩টি নদী ও বিভিন্ন ছড়ায় প্রচুর সিলিকা বালু ও ভিটি বালু পাওয়া যায়। এই সিলিকা বালু উপজেলার সিরামিক্স কারাখানাগুলতে ব্যবহার হয়। এছাড়াও এই বালু দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়। মাধবপুরে ৩০টি শিল্পকারখানা এবং ৪টি চাবাগান রয়েছে। এই উপজেলার শিক্ষার্থীদের জন্যে মাত্র ৩টি ডিগ্রী কলেজ এবং ৪টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ রয়েছে। পুরো উপজেলায় কোন ভোকেশনাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ণেই। এই অঞ্চলের সাক্ষরতার হার মাত্র ৪০%। মাধবপুরের বাৎসরিক খাদ্য চাহিদা ৭৮,২৬৭ মেট্রিক টন। এই উপজেলায় পুকুরের সংখ্যা ৭,৪৫৪ টি। বাৎসরিক মৎস্য চাহিদা ৬,১৮০ মেঃ টন ও উৎপাদন ৫,৫১৩ মেঃ টন। মাধবপুর উপজেলায় বর্তমানে কর্মরত ডাক্তারের সংখ্যা মাত্র ৩৪-জন।
এই যখন হবিগঞ্জ-৪ আসনের অবস্থা, তখন, ব্যারিস্টার সুমন ভাইকে শুরুতেই যে অনেক চাপ নিয়ে কাজ করতে হবে, তা বলাই বাহুল্য। আশা করা যায়, একজন আপাদমস্তক স্পোর্টসম্যান হিসেবে অনুসারীদের সাথে নিয়ে তিনি তাঁর এলাকার উন্নয়নের বলকে সুচারু ভাবে সঠিক গন্তব্যের পথে নিয়ে যাবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



