আমি যখন যুক্তরাজ্যের একটি ভার্সিটির ছাত্র সংসদে বিজনেস ফ্যাকালটি থেকে প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হলাম, একদিন আমার কাছে শিক্ষক সমিতি থেকে একটা খবর আসলো। আমার ফ্যাকালটি থেকে বেশ কিছু শিক্ষার্থীদের এসাইনমেন্ট গণহারে প্লেজারিজম সফটওয়্যারে আটকে যাচ্ছে। কারো কারো ৭০% পর্যন্ত নকল ধরা পড়ছে। কি ব্যাপার!
আমি প্রথমে পাত্তা দিলাম না। আমাদের ভিপি ছিলো বাংলাদেশি। সে বললো, চেপে যান! আপনি তদন্ত করলে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা আটকে যাবে! পরের বার আপনার যদি ভিপি হবার ইচ্ছা থাকে, বাঙ্গালী আর ভারতীয়রা আপনাকে ভোট দিবে না।
কিন্তু, ভিসি অফিস থেকে যখন আমার কাছে ফোন এলো, আমি বললাম, আমাকে তোমাদের ইলেক্ট্রনিক সিস্টেমে ঢুকতে দাও। দেখি কি অবস্থা। তাঁরা আমার কথায় রাজি হলেন। সিস্টেমে ঢুঁকে দেখি, আমাদের দেশের বেশ কিছু শিক্ষার্থী নকল ধরার সফটওয়্যারে ধরা পড়েছে।
প্রথমে, ধরা পড়া কিছু শিক্ষার্থীকে আমি জেরা করলাম। তারা তো কিছুতেই কিছু বলতে চায় না। এক পর্যায়ে ভয় দেখালাম, তোমরা যা করছো, তা আমাদের দেশের জন্যে অপমানজনক। তোমাদের যদি ভার্সিটি থেকে বের করে দিতে চায়, আমি কিন্তু তোমাদের ডিফেন্ড করবো না। ভালো চাইলে বলো, এভাবে নকল ধরা খাওয়ার মানে কি!
তাদের একজন শেষে মুখ খুললো। জানালো যে, একজন ভারতীয় ছেলে এই চক্রের নাতের গুরু। সে শিক্ষার্থিদের এসাইনমেন্ট টাকার বিনিময়ে দেশ থেকে করিয়ে নিয়ে আসে। এমনকি অনলাইন পরীক্ষাগুলোও দেওয়ানোর ব্যবস্থা করে দেয়। অন্যদিকে ক্লাস ফাঁকি দেওয়া শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দোকানে জব করে।
আমি এদেরকে ট্র্যাকে করে বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আই,বি,এ এর কিছু ছেলেকে সনাক্ত করতে সক্ষম হই। এই ছেলেগুলো দেশে বসে বিদেশের শিক্ষার্থীদের এসাইনমেন্ট করে দিতো! বেশ ভালো ব্যবসা! একেকটা এসাইনমেন্টের জন্যে তারা ৫০০০ - ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত নিতো। এটা কয়েকশো কোটি টাকা অবৈধ বাজার!
এই গ্যাংগুলো এখনো সক্রিয় যারা আমাদের শিক্ষার্থীদের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুন, ২০২৫ রাত ১২:১৩