আমি তখন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে ডেপুটেশনে সেখানে আমাকে ২০১৩ সালে নিয়োগ দেওয়া হয়। গিয়ে দেখলাম, দূর্নীতির এক আখড়া বানিয়ে রাখা হয়েছে সিটি কর্পোরেশনকে। একটা ঘটনা বলি।
তখন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কচুরিপানা পরিষ্কারের জন্যে ২ কোটি টাকা বাজেট ছিলো। কাজ এলাকাগুলোর জলাশয়গুলোর কচুরিপানা শুধু পরিষ্কার করা। আমি ভেবে দেখলাম, শুধু এই কাজের জন্যে এতো টাকা খরচ হয়! আমি সরিজমনে মাঠ পরিদর্শনে বের হলাম। গিয়ে দেখি যেসব শ্রমিক কচুরিপানা পরিষ্কার করেন, তাদেরকে দিনে মাত্র ৩০০ টাকা দেওয়া হয়। আমি বললাম যে, এখন থেকে তাদের মজুরি ৬০০ টাকা। তারপরও, সব জলাশয়ের কচুরিপানা পরিষ্কার করতে মাত্র ৫০ লক্ষ টাকা খরচ হলো। প্রায় ১.৫ কোটি টাকা বেঁচে গেলো!
তা দেখে, আমার কাছে প্রস্তাব আসলো যে, আমি যেন ১ কোটি নিয়ে বিল করি আর বাকি ৫০ লক্ষ টাকা কর্মকর্তা - কর্মচারীদের মাঝে বিলিয়ে দেই! আমি সাথে সাথে প্রস্তাবটা রিজেক্ট করে দিয়ে যারা এমন প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলো তাদের বিরুদ্ধে উপর মহলে রিপোর্ট করি।
এরপরে, ঠিক কলাম, ঐ বেঁচে যাওয়া দেড় কোটি টাকা দিয়ে মশা মারার ফগার মেশিন কিনবো। এর আগে কোরিয়ান ফগার মেশিন কেনা হতো। মাত্র ৪০০০০ টাকার মেশিন ৯০০০০ টাকা দিয়ে কেনা হয়! এরপরে কিছু দিনের মাঝে সেসব ফগার মেশিন নষ্ট হয়ে যায়। আমি ঠিক করলাম ফ্রান্স থেকে 'জি টু জি' প্রক্রিয়ায় উন্নত ফগার মেশিন কিনবো। কোরিয়ার অকেজোগুলো দিয়ে চলবে না। আর, টেন্ডার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিলাম।
আমাকে সরানোর জন্যে কর্মাচারীরা এক জোট হয়ে গিয়েছিলো। আমি যে ১ বছর সেখানে ছিলাম, ঢিট করে দিয়ে এসেছিলাম পুরো প্রতিষ্ঠানকে।
======
ব্রিগেডিয়ার ডাঃ আফজালুর রহমান-এঁর কাছ থেকে আজ শোনা এই জবানবন্দিটি
================================================
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০২৫ রাত ১১:১৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



