মানুষ তাঁর চারপাশে যা দেখে, তা নিয়েই এগিয়ে যায়। চারপাশে তাকিয়ে যদি দেখে, দেশ ছেড়ে মানুষ চলে যাচ্ছে, তখন সেও দেশ ছেড়ে চলে যেতে চায়। যেমন - আমার সিলেটের বেশিরভাগ মানুষই ছেলেকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দিতে চান, মেয়েকে বিলেতে বিয়ে দিতে চান। তাই তো, ঘরের সেরা ছেলেটি দেশের বাইরে চলে যায় - হয় পড়াশোনা করতে অথবা কাজ করে খেতে। নিজের সন্তানদের মাঝে সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েটার বিয়ে হয়ে যায় বিলেতি বরের কাছে! এমনই চলছে!
আমার দাদা'র ছেলে-মেয়ে, নাতিপুতিদের বেশিরভাগই থাকেন দেশের বাইরে। লক্ষ্য করে দেখেছি, পরিবারের সবচেয়ে মেধাবী আত্মীয়রাই দেশের বাইরে চলে গিয়েছেন। আমার মতো অমেধাবীরা দেশে ফিরে এসে ধুঁকছেন!
আমার বড় দুই চাচা লন্ডনপ্রবাসী হয়েছেন স্বাধীনতার পরপরই! বড় চাচার ছেলেদের একজন ডাক্তার, আরেকজন ব্যাংকার। মেঝ চাচার দুই ছেলের বর্জন আইটি বিশেষজ্ঞ, আরেকজন ফিল্ম ডিরেক্টর। সেঝ চাচা ছিলেন বাংলাদেশের পদ্মা ওয়েলের রেসিডেন্স ম্যানেজার। তাঁর দুই মেয়েই প্রবাসী - ঢাকা ভার্সিটির গ্র্যাজুয়েট। এরপরে আমার আব্বা যিনি কৃষি ডিপার্টমেন্টে ডেপুটি ডিরেক্টর ছিলেন। তাঁর ৫ ছেলের ৩জনই দেশের বাইরে থাকেন। বাকিরাও যাওয়ার পথে। বাবার দুই ছোট ভাইয়ের একজন মুক্তিযোদ্ধা ও স্থপতি। আরেকজন দেশে থাকতে আমেরিকান একটি কোম্পানীতে জব করতেন। তাঁদের ছেলেমেয়েদের মাঝে -১-জন ছাড়া বাকিরা দেশের বাইরে!
এবারে আসি, ফুফুদের কথায়। বড় ফুফু ছিলেন বেগম সুফিয়া কামালের সহযোগীনী। তাঁর ৪ ছেলে-মেয়েদের মাঝে ২-জন বাইরে থাকেন। মেঝ ফুফুর ৫ ছেলে-মেয়ের সবাই আমেরিকা প্রবাসী। সবাই ইঞ্জিনিয়ার, কারণ আমার মেঝ ফুফা ছিলেন ওয়াপদা'র চেয়ারম্যান। সেঝ ফুফু ডাক্তার। তাঁর ছেলে-মেয়েরাও প্রবাসী। দুইজনের একজন পিএইচডি, আরেকজন ইঞ্জিনিয়ার। বাকি ৩ ফুফুর বাচ্চাদের অনেকেই বিদেশে থাকেন।
এই যখন অবস্থা, বিলেত ফেরত সামান্য একটি মাস্টার্স করা সবার চেয়ে পিছিয়ে পড়া এই আমি দেশে বসে আছি। এইরকম অবস্থা আমার সিলেটের বেশিরভাগ পরিবারেরই! ব্লগার মুঘল সম্রাট ঠিকই বলেছেন। ব্যাক বেঞ্চারেরাই দেশ চালাচ্ছেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১০:৩৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


