somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চীনাদের অতিথিয়তা

২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৮:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোটবেলা থেকেই একটি কথা প্রাইয় শুনতাম যে বাঙ্গালীরা অতিথীপরায়ন।কালের বিবরতনে তা হারিয়ে যেতে বসেছে কিনা তা আপনারা ভালোই বলতে পারবেন। তবে আমি অনুভব করি তা হারিয়ে যাবার পথে। ছোটবেলায় নানার বাড়িতে দেখেছি কোন মুসাফির পানি খেতে চাইলে পানির সাথে অন্য কিছু দেওয়া হতো যেমন মুড়ি বা মোয়া বা পিঠা যদিও আমার নানা অবস্থা সম্পন্ন কৃষক ছিলেন না।কিংবা ঘরে কোন মেজবান আসলে ঘরের সবচেয়ে বড় মরোগ জবাই করা হত।বড় হয়ে বুঝতে পেরেছি সেটা ছিল কৃষ্টি, কালচার বা সংস্কৃতি।আজ ঘরে আর মুরগী পালন হয়না সংস্কৃতিও লালন হয় না। প্রায়ই এক যুগ পড়ে আমাদের পুরানো সেইকৃষ্টি, কালচার বা সংস্কৃতি ভিন্ন দেশে এসে খুজে পেলাম।সেই প্রসঙ্গ শুরু করার আগে একটু ভুমিকা না টানলেই নয়।

আমার স্ত্রীর ল্যাবমেট ওয়াঙ্গ ফা চুন গত বছরেই পিএইচডি পাট সম্পন্ন করে নিজ গ্রামেই ব্যবসা শুরু করেছে এবং সেই বছরেই বিবাহ করেছে।সেই সূত্রমতে বিবাহতে আমার স্ত্রীকে নিম্নত্রন করেছে।যেহেতু গত বছরে আমাদের আগমন এবং গুছিয়ে উঠতে না পারার কারনে আমাদের আর যাওয়া হয়নি বা সম্ভবপর হয়ে উঠেনি।কারন তার শহর বেইজিং থেকে ১২০০ কিঃমিঃ দূরে কিন্তু কোন এক সময়ে আমাদের যেতেই হবে এমন কথা আমাদের কাছ থেকে আদায় করে ছেড়েছে।চীনে প্রতিবছর ১লা অক্টোবর থেকে ৭ই অক্টোবর বিজয় দিবসের ছুটি থাকে।আমাদের চিন্তা ছিল এই সময়টা আমরা কোথাও বেড়াতে যাবো। যেহেতু আগেই ওয়াঙ্গ ফা চুন এর সাথে যোগাযোগ করলাম আমরা আসতে চাই।আমরা আসতে চাই শুনে সে যারপরনাই আনন্দিত হলো।

বিজয় দিবসের ছুটিতে চীনে আমাদের দেশের ঈদের ছুটির মতো অবস্থা থাকে।আগে থেকে টিকেট কেটে না রাখলে যাতায়াত করা খুবই মুশকিল। তাই আমাদের যা্ত্রা ৯ই অক্টোবর রাতের ট্রেনে ।১২০০ কিঃমিঃ পথের ট্রেন জা্রনি।সেই অভিজ্ঞতা আরেক দিন লিখব।আমরা পরের দিন সকালে নানজিং পৌছালাম।তারা আগেই আমাদের জন্য স্টেশনে অপেক্ষা করছিল।খুজে পেতেই যা একটু দেরী হয়েছে।সারাদিন ঘুরে সন্ধায় তাদের বাসায় গেলাম।রাতের আয়োজন দেখি এলাহী কারবার।যেহেতু আমর মুসলিম সেই বিষয়টা মাথায় রেখেই তার সব আয়োজন করেছে।তাই সেখানে ছিল আমাদের দেশী মাছের আধিক্য যেমন শোল মাছ,শিং মাছ,তেলাপিয়া মাছ চিংড়ি মাছ।মেজবান আসবে আর মাংস থাকবেনা তা কি হয় তাই ব্যবস্থা রেখেছে হালাল বেইজিং Duck।আর ছিল হরেক রকম শাক এবং ভাজির ব্যবস্থা।যেটা ছিল না তা হলো পোলাও কিংবা বিরিয়ানী অবশ্য আশা করিনি তবে অল্প পরিমান ভাতের ব্যবস্থা ছিল (চীনের উত্তর অংশের লোকেদের খাবার মেনুতে ভাতের আইটেম থাকেনা বললেই চলে-খাবার ব্যবস্থা নিয়ে আরেকদিন বিষদ আলোচনা করবো)।পরেরদিন আমাদের ভ্রমন ওয়াঙ্গ ফা চুন এর গ্রামের বাড়ি।যেখানে গিয়ে পেয়েছি অভিন্ন সংস্কৃতি।

পরেরদিন আমরা সকাল ৯টায় যাত্রা করলাম।গ্রামের বাড়ি শহর থেকে ৫০/৬০ কিঃ িমঃ এর পথ কিন্তু সময় মাত্র ৩০ কি ৪০ মিনিটের।সেখানে যাওয়া মাত্রই জুস ,দুধ, ফল এবং সূ্রযমুখী ফুল ও মিষ্টিকুমড়া বীজের ভাজা (চীনাদের প্রিয়)সবার শেষে গ্রীন ট্রী দিয়েছে।দুপুরের খাবার খাওয়ার আগে শুনি আমাদের জন্য মুরগী কোরবানী করা হয়েছে। আমাদের জন্য আবার সেই মাছের আধিক্য তবে এবার আমাদের দেশীমাছের পাশাপাশি লোকাল মাছও ছিল।সাথে কয়েক রকমের শাক ও ভাজিও ছিল।আসার সময় চিরায়ৎ বাংলার রপ যেতে নাহি দিব তবুও যেতে দিতে হয়।বার বার ওয়াঙ্গ ফা চুনের পিতা মাতার একটা দিন থেকে যাওয়ার জন্য আমাদের অপরাগতার কথা বললে তবে আবার আসার।ফেরার পথে ওয়াঙ্গ ফা চুনের শুশুর বাড়িতে দেখা করতে গেলাম।সেখানে খাওয়ার জন্য অনেক জুড়াজুড়ি।যখন কোন ভাবেই আমাদের খাওয়াত পারলোনা তখন তের ক্ষেত থেকে আখ কেটে প্যাকেট করে দিয়ে দিল।যেন মেজবান কে খালি মুখে ফেরত দওয়া যাবেনা।এ যে বাঙ্গলারই সংস্কৃতি।
১২টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×