নুরুর উপর আর্মির গতকালের হামলাকে আমি দুইভাবে দেখি;
প্রথমতঃ জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধ হোক এটা কারা চায়। বিএনপির মুখে বিগত এক বছরে এই ধরনের দাবী শোনা যায়নি। তার মানে বিএনপি অন্তত চায় না জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধ হোক। চাইবেই বা কেন, জাতীয় পার্টি বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কোন হুমকি নয়। জাতীয় পার্টি থাকলেই বরং বিএনপির লাভ। বিরোধী দল হিসেবে বিএনপির হাতে একাধিক অপশন থাকবে। একতরফা বিরোধী দলের চাপে পড়তে হবে না তখন।
খালি চোখে চিন্তা করলে আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হয়ে যাওয়ার হুমকি রয়েছে। যদি আওয়ামিলীগ জাতীয় পার্টিকে সমর্থন দেয় তাহলে জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হয়ে যেতেও পারে। সেক্ষেত্রে জামায়াত কিংবা এনসিপিসহ নুরুদের যে জোটের আশা করা করা হচ্ছে সেটা ভেঙে যাবে। মুলত জাতীয় পার্টির সাথে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা হলো বিরোধী দল হওয়ার প্রতিযোগিতা। এখানে কে কার দোসর সেটার চাইতে নিজ দলের রাজনৈতিক অবস্থান বড় করার রাজনীতিই হইতেছে আসল।
দ্বিতীয়ত; আর্মির গতকালের একশনে স্পষ্ট মেসেজ দেয়া দেয়া হলো যে আর্মি চায় সঠিক সময়ে নির্বাচন হোক। গতকাল এই একশন দিয়ে অন্য সবাইকে বুঝিয়ে দিতে চাইলো সামনে নির্বাচন পেছানো কিংবা নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তন নিয়ে কেউ যদি মাঠে নামতে চায় আর্মি তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিবে। সেনাপ্রধান গত বছরই বলেছিলো তিনি এবছর ডিসেম্বরে নির্বাচন চান। সরকারও ইতোমধ্যে ফেব্রুয়ারী মাসের জন্য নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। সেনাবাহিনী হয়তো এখন সরকারকে নির্বাচন বাস্তবায়নের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে বলেই ইঙ্গিত দিলো।
মাঝখানে বেচারা ভিপি নুরের জন্য খারাপ লাগছে। সে হচ্ছে গরীবের বউ সবার ভাবীর মত। সব সরকারের আমলেই মাইর খায়। গতকাল যেভাবে মার খাইলো তাতে তার জীবন চলে যাওয়ারও রিস্ক ছিলো। কিন্তু এরকম মব ঘটানোর জন্য তার মত একজন দলীয় প্রধান সেখানে যাওয়াটাই উচিত ছিলো না। সময় এবং পরিস্থিতি বুঝে চলা হলো বিচক্ষণ রাজনৈতিক নেতার লক্ষণ। সে এখানে বিচক্ষণতার পরিচয় দেয়নি। সেনাবাহিনী এভাবে না মেরেও এই মব ঠেকিয়ে দিতে পারতো বলে মনে করি। যদিও আর্মি তার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকালের ঘটনাকে মব ঠেকানো হিসেবে বিবৃতি দিয়েছে। দেখা যাক আর্মি সামনে কিভাবে কোন কৌশলে রাজনৈতিক সকল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে।
- রাজনৈতিক আলাপ
©শামীম মোহাম্মদ মাসুদ
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১১:১৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




