somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি মিষ্টি প্রেমের কাহিনী----ওয় (OY)

২৭ শে জুন, ২০১০ রাত ৯:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বহুদিন ধরে ব্লগ এর সাথে কোন যোগাযোগ নাই । কালকে রাতে একটা তেলেগু মুভি দেখলাম "ওয়"(OY) । মুভিটা দেখে এত ভাল লাগল ভাবলাম সবার সাথে এর কাহিনীটা শেয়ার করি ও আবার ব্লগে একটু রেগুলার হই ।খুবই সাধারন একটা প্রেমের কাহিনী কিন্ত কেন যেন খুব ভাল লাগল কাহিনীটা । এখনকার মুভিগুলার মতন নেই কোন মাত্রাতিরিক্ত রংচঙ্গা ভাব , নেই ২৫ বছরের নায়িকার ৫ বছরের খুকিদের জামা পরে উদ্দ্যাম নৃ্ত্য ,নেই কোন পরকীয়া ,দর্শকপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্য নেই কোন জোর করে ঢুকিয়ে দেয়া অ্যাডাল্ট সিন । নায়ক হল "রং দে বাসান্তি " খ্যাত সিদ্ধার্থ(মুভিতে নাম উদয়) , নায়িকার নাম শ্যামিলী (আমি চিনি না :( )(মুভিতে নাম সন্ধ্যা)।

কাহিনী শুরু হয় ২০০৮ এর বিদায়কাল এবং ২০০৯ এর আগমন এর সময় থেকে । উদয় একটা বেঞ্চএ বসে ২০০৯ এর প্রারাম্ভকালের প্রথম বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে থাকে । আজকে তার জন্মদিন । গত বছর এর আগ পর্যন্তও সে এ দিনটা মহা উৎসবের মধ্য দিয়ে পালন করত , পাবে গিয়ে বন্ধুদের সাথে আনন্দ ফূর্তি করে যেহেতু একই সাথে নতুন বছরের প্রথম দিন এবং তার জন্মদিনও। এরপর ই কাহিনী চলে যায় দুই বছর পিছনে ২০০৭ এর প্রথম দিন এবং উদয় এর জন্মদিন ।সেদিন প্রথম উদয় সন্ধ্যাকে দেখে একটি পাবে যেখানে সবাই নেচে গেয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নিচ্ছে সেখানে একটি মেয়ে সবার থেকে আলাদা এক কোনে বসে পড়াশোনা করছে , তার পরনে অতি সাধারন সেলোয়ার কামিজ , চোখে চশমা , এই পরিবেশে সম্পূর্নই বেমানান । উদয় তার পুরোপুরি বিপরীত , বিরাট এক ধনীর একমাত্র সন্তান সে , জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য সকাল দায়িত্ব থেকে মুক্ত থেকে শুধুমাত্র আনন্দ ,ফূর্তি ও বন্ধুদের সাথে আড্ডাবাজির মধ্যে দিয়ে জীবন পার করা । প্রথম দেখাতেই সন্ধ্যাকে ভাল লেগে যায় উদয় এর । সন্ধ্যার সাথে কথা বলার চেষ্টাও করে সে কিন্তু সন্ধ্যা অপরিচিত কারো সাথে কথা বলতে তেমন আগ্রহ দেখায় না । আর উদয় তাকে পাবে এসে এভাবে বসে থাকার কারন জানতে চাইলে সন্ধ্যা জানায় নতুন বছর কে বরন করার জন্য তার পছন্দ নতুন বছরের প্রথম বৃষ্টিতে ভিজে তাকে বরন করে নেয়া এভাবে নেচে গেয়ে না ।এরপর উদয় সন্ধ্যার বাসার ঠিকানা বের করে তার বন্ধু ফেটসো এর সাহায্য নিয়ে । সেখানে গিয়েই উদয় সন্ধ্যা সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে পারে যে সে আর ১০ টা সাধারন মানুষ এর মতন না , সবকিছুতেই সে সকল ভূল ত্রুটি থেকে দূরে থাকে , কোনরকম অনুষ্ঠান সে সেলিব্রেট করে না এবং তার জ্বালায় প্রতিবেশী কেউ ই সেলিব্রেট করতে পারে না কারন কোনরকম শোড়গোল তার একদমই পছন্দ নয় । তার বাবা মা এবং পরিবারের সবাই ই মারা গেছে এবং সন্ধ্যা কলেজে পড়ার পাশাপাশি বাসায় একটা নার্সারী চালায় যা তার আয়ের একমাত্র উৎস ।তার বাড়ীও একটা কোম্পানীর কাছে মর্গেজ আছে এবং টাকার জন্য কয়েকদিন পর পরই কোম্পানীর পাঠানো লোকরা তাকে বিরক্ত করে ।উদয় নানা ভাবে সন্ধ্যাকে সাহায্য করতে চেষ্টা করে , এবং যে কোম্পানীর কাছে সন্ধ্যার বাড়ি মর্গেজ থাকে তা উদয় এরই কোম্পানী , উদয় সন্ধ্যাকে কিছু না জানিয়ে সেই সমস্যার সমাধানও করে। এভাবে সে আস্তে আস্তে সন্ধ্যার বন্ধু হবার চেষ্টা করে । সে নিজেকে গরীব এবং সাধারন চাকুরীজীবি প্রমান করে বহু কষ্টে সন্ধ্যার বাসায় পেইংগেস্ট থাকার ব্যবস্থা করে । সন্ধ্যার সাথে একই বাসায় থাকতে থাকতে উদয় সন্ধ্যার মন জয় করার চেষ্টা করে তাতে উদয় কে সাহায্য করে সন্ধ্যার বান্ধবীর ৩ মেয়ে যারা ভ্যাকেশন এ সন্ধ্যার কাছে বেড়াতে আসে ।তাদের কাছেই উদয় সন্ধ্যার আদর্শ জীবনসঙ্গীর নানা বৈশিষ্ট সম্পর্কে জানতে পারে যার কোনটাই উদয় এর নেই ।সন্ধ্যার ইচ্ছা তার যার সাথে বিয়ে হবে তার বড় যৌথ পরিবার থাকবে, কিন্তু উদয় এর মা অনেক আগেই ক্যান্সার এ মারা যান আর কিছুদিন আগে তার বাবাও মারা গেছে , আছে শুধু একজন ডাক্তার মামা । সন্ধ্যা ধনীদের পছন্দ করেনা সেখানে উদয় বিশাল এক কোম্পানীর এমডি ,তার বাবা মারা যাওয়ার পর সে সেই কোম্পানী চালায় । সন্ধ্যাকে খুশি করার জন্য উদয় তার নকল পরিবার ভাড়া করে আনার পরিকল্পনা করে কিন্তু পরে সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায় এবং উদয় সন্ধ্যাকে সত্যি কথা বলে দেয় ।উদয় সন্ধ্যাকে তার জন্মদিনে ১২ মাসে জন্য ১২ টি উপহার দিয়ে নিজের মনের কথা জানায় । সন্ধ্যার জবাব উদয় পেয়ে যায় যখন সন্ধ্যা তার ইন্সুরেন্স করায় এবং উদয় কে নিজের নমিনী বানায় । উদয় যখন নিজেকে এ জগতের সবচেয়ে সুখি একজন মানুষ ভাবতে শুরু করেছিল ঠিক তখনই ইন্সুরেন্স কোম্পানী থেকে তাকে জানানো হয় সন্ধ্যার ইন্সুরেন্স রিজেক্ট হয়েছে কারন এর জন্য করা মেডিকেল টেস্টে সন্ধ্যার ক্যান্সার ধরা পড়েছে ।
উদয় সন্ধ্যাকে কিছু না জানিয়ে তার মামার সাহায্য চায় , উদয় এর মামা তাকে বলেনা যে সন্ধ্যার ক্যান্সার লাস্ট স্টেজ এ , সে উদয়কে পরামর্শ দেয় মেডিকেশন এর পাশাপাশি যদি সন্ধ্যাকে সবসময় হাসিখুশি রাখা যায় তাহলে সে তাড়াতাড়ি সেরে উঠবে । উদয় তার মাকে ক্যান্সার এ হারিয়েছে এবং তার বাবা কোনদিনই তার মায়ের এ অবস্থায় তার দেখাশোনা করে নাই যে কারনে সে কোনদিনই তার বাবাকে ক্ষমা করতে পারে নাই । উদয় সন্ধ্যাকে তার জীবনের সে সব শখ ও ইচ্ছা এর কথা জিজ্ঞাস করে যা সন্ধ্যা কখনই চিন্তা করে নি যা বাস্তবে পূরণ হতে পারে । সন্ধ্যা তখন তার সেসব শখ গুলার কথা উদয়কে বলে যেমন একই সময়ে সে ২ জায়গায় থাকতে চায় , সে পাখীর মতন উড়তে চায় , সে হেলিকাপ্টরে করে ঘুরতে চায় এবং সর্বশেষ সে কাশিতে যেতে চায় যার জন্য সে বেশ কয়েক বছরে ধরে একটু একটু করে টাকা জমাচ্ছিল ।উদয় একে একে তার সবগুলো ইচ্ছা পূরণ করে এবং কাশি যাওয়ার পথেই ২জন আরো ভালভাবে ২জনকে জানার সুযোগ পায় । কাশি থেকে ফিরার পর উদয় এর বুঝানোর কারনে প্রথম বারের মতন সন্ধ্যা কোন উৎসব সেলিব্রেট করে ।সন্ধ্যা বাসায় ক্রিসমাস পার্টির আয়োজন করে এবং তার সকল প্রতিবেশী যাদের সাথে কখনই তার যোগাযোগ ছিলনা সবাইকে আমন্ত্রন জানায় । এরপরই সন্ধ্যার শরীর হঠাৎ করে অনেক খারাপ হয়ে যায় এবং ওকে হসপিটাল এ ভর্তি করতে হয় । উদয় তখন আবিষ্কার করে সন্ধ্যার ক্যান্সার লাস্ট স্টেজ এ । সে তখন তার মামাকে এ অবস্থার জন্য দায়ী করে তখন উদয়ের মামা তাকে বোঝায় যে তখন যদি উদয়কে সন্ধ্যার এই অবস্থার কথা জানানো হত তখন হয়ত কেমো দিয়ে তাকে সুস্থ করার চেষ্টা করা হত , কিন্তু বাস্তবে তার কোনটাই তখন আরা কাজে আসত না মাঝখান দিয়ে এইকয়েকদিন সন্ধ্যার তার জীবনের শেষ দিনগুলা যে সুন্দর ভাবে উদয় এর সাথে কাটাল এবং তার জীবনের সকল সুপ্ত ইচ্ছা গুলা পূরণ করার সুযোগ পেলতা কখনই পেতনা ।এরমধ্যেই সন্ধ্যা একদিন তার অসুখের কথা জেনে যায় এবং তার শেষ দিনগুলা সে হসপিটাল এ না কাটিয়ে উদয়ের সাথে কাটাতে চায় । এভাবে বছরের শেষ দিন এসে যায় । সন্ধ্যা উদয়কে তার জন্মদিনে ১১ টি উপহার দিয়ে ১২ নং উপহার হিসাবে সারাজীবন উদয় এর সাথে কাটানোর ইচ্ছা প্রকাশ করে যা আর সম্ভব না । সন্ধ্যা উদয়কে পাবে গিয়ে উদয় এর জন্মদিন সেলিব্রেট করার কথা বলে কিন্তু উদয় সন্ধ্যাকে তার প্রিয় জায়গায় নিয়ে আসে এবং বছরের প্রথম বৃষ্টিতে ভিজে তারা সেলিব্রেট করে ।তারপরের জন্মদিন আর সন্ধ্যা উদয়ের সাথে হয়ত সেলিব্রেট করতে পারবেনা কিন্তু উদয় এরপর থেকে এভাবেই তার জন্মদিন ও নতুন বছর সেলিব্রেট করে যাতে সন্ধ্যার স্মৃতি সারাজীবন উদয়ের সাথে থাকে ।

এত বড় এবং বোরিং কাহিনী পড়ে হয়ত অনেকেই বিরক্ত হয়ে যাবেন তাদের কাছে আগেই ক্ষমাপ্রার্থী ।আমি এত ভাল ভাবে হয়ত কাহিহী বলতে পারি নাই , মুভিটা দেখতে পারেন
লিংক
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১০ রাত ৯:৪২
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×