১৬ ডিসেম্বর,বিষুদবার বিকালে অল্প শীতের ভেতর রেসকোর্সের মাঠে পাতা একটা টেবিলের সামনে গ্রুপ ক্যাপ্টেন একে খন্দকার এসে খাড়ায়,সংগে আসে জেনারেল অরোরা।একে খন্দকার নিয়াযিকে বলে সারেন্ডার কর,অস্ত্র নামাও,ফুটো এই দেশ থেইক্যা।তখন নিয়াজি বড় বড় সেগুন গাছের তলায় মুখটা শুখনা করে রাখে,তার হুগা দিয়া পাতলা গু পড়ে যেতে চায়,সে কোমরের বেল্ট থেকে রিভলবার বের করে রাখে টেবিলের ঊপর,তখন দাড়িয়াল কাদের সিদ্দিকী আসে,সে এতক্ষণ পিছনে খাড়ায়া এইসব দেখে,কিন্তু নিয়াযি টেবিলে অস্ত্রটা রাখা মাত্র কাদের সিদ্দিকী দুই পাও আগায়া এসে একটা ঘুসি মারে নিয়াযির থোতার উপর,শুয়ারের বাচ্চা,চ্যুতমারানির পোলা,তর মায়রে......সে বলে এবং জেনারেল আমির আব্দুল্লা খান নিয়াযি ওরফে টাইগার নিয়াযি মাটির উপর পড়ে যায়া মুখটা ভ্যাটকাইয়া ফালায়,কানতে কানতে বলে আই এম এ প্রিজনার অফ ওয়ার ,আই ডিজার্ভ প্রটেকশন এন্ড রেসপেক্ট,তখন জেনারেল আরোরা ডাইন হাত উঠায়া দেখে তার পাগড়ি ঠিকাছে কিনা,তারপর কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান আব্দুল কাদের সিদ্দিকির দিকে তাকায়া যখন বলে, হু আর ইউ?তখন আব্দুল কাদের বলে আই এম এ বাঙালি উইথ শক্ত হাড্ডি এন্ড লম্বা বিয়ার্ড,মাই নেম ইজ আব্দুল কাদের,আই এম ফ্রম টাঙ্গাইল,ডুয়িং গুল্লি,ফাইটিং ফর মাই কান্ট্রি-হু আর ইউ?
'মুখের দিকে দেখি'
শহীদুল জহির
পুর্বে পড়া না থাকলে লেখাটুকু পড়ে হয়ত আপনি উত্তেজনায় কাপতেছেন অথবা হাসতেছেন,হয়তো রোমমেটকে পড়ে শুনাচ্ছেন তারপর বলতাছেন মুক্তিযুদ্ধ নিয়া উপন্যাস পড়ছি গল্প কবিতা পড়ছি কিন্তু এইটা কি পড়লাম!!অথবা ভাবতাছেন কি অশ্লিল কথাবার্তা.....রক্তখয়ী যুদ্ধ,পাশবিক অত্যাচার,হায়েনা ৩০ লক্ষ প্রাণ ইত্যাদি...অনেক শুনছি।হুমায়োন আহমেদের জোছনা ও জননির গল্পে মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র থেকে সরাসরি তুইল্যা দিছে অংগপ্রত্যাংগ কিভাবে কোথায় কাটছে,কলেজ লাইব্রেরিতে মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র হাতে পেয়ে আরো বিস্তারিত জানি...কিন্তু কোথাও এইরকম একটা লেখা পাইনাই যেখানে এইরকম একটা হু আর ইঊ??বলছে।আর কোন লেখা পড়ে এইরকম মজা বা শান্তিও পাইনাই।
একবার কল্পনা করেন আপনি একটা এলাকা বা গ্রামে থাকেন অন্য একটা এলাকা থেকে উইড়া অ্যাইস্যা জুইড়া বইস্যা বাবা,ভাই,মা বোন, মাও হয়ত না হয়ত আপনার আত্নীয় বা বন্ধু কিম্বা তাওনা শুধু গ্রামের পরিচিত কিছু মুখ...মারলো অপমান করলো এলাকার মেধাবি ছেলেটাকে...জুরে বসা লোকদের হাতে পেলেন...
শহীদুল জহির সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ঘটনায় বিবরনে জিঞ্জিরায়,চরাইল গ্রামে পালানো,মিলিটারিদের বৃত্ত তৈরি,একতলা বাসায় আশ্রয়......কথাগুলার উল্লেখ আছে,এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়া তার অসাধারন উপন্যাস "জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা" তেও ঠিক একই ধরনের বিবরন আছে,প্রথম বয়ান গল্পেও জিঞ্জিরায়,চরাইল এর বিষয়গুলা আসছে।বাস্তবের সাথে কল্পনা মিলিয়ে যে বাস্তবতা......'মুখের দিকে দেখি' উপন্যাসের এই ঘটনাটা কাদের সিদ্দীকের দারা ঘটানোর কারন?
অনিমেষ আইচ-"না মানুষ" সিনেমাটা শহীদুল জহিরের লেখা অবলম্বনে বানাইতাছে সম্ভবত "যে রাতে পূর্নিমা ছিল" নামক উপন্যাস থেকে এরকম মনে হওয়ার কারন সিনেমাতে দুই ডাকাত,পতিতালয় আছে যা উপন্যাসেও আছে।আর এই ধারনা সঠিক হলে আইটেম গানে শিমলার নাচটা হলো নায়ককে বাচানোর উদ্দেশ্যে
নুরুল আলম আতিক-নুরুল আলম আতিকের বিভিন্ন লেখা নিয়া একটা ছোট একটা বই আছে যেখানে শহীদুল জহিরের কথা উল্লেখ আছে এবং উনার চতুর্থমাত্রা নামে নাটক আছে আর শহীদুল জহিরের চতুর্থমাত্রা নামের গল্প আছে কোন কানেকশন আছেকিনা জানিনা নাটকটা বছরখানেক আগে নেট এ খুজছিলাম পাইনাই গল্পটাও পড়িনাই।
মুস্তফা সারোয়ার ফারুকী-ফারুকির সাক্ষাৎকার বা লেখায় মহল্লার চুরপুলিশ খেলা বিষয়টার উল্লেখ পাইছিলাম যা শহীদুল জহিরের "ইন্দুর বিলাই খেলা" আয়ডিয়ার রিলেটেড মনে হইছে...আর স্পার্টাকাস একাত্তর এ দুই জমজ ভাইকে ধরতে আসলে একেকবার একজনকে দেখায় জার আয়ডিয়াও "ইন্দুর বিলাই খেলা" থেকে নেয়া মনে হইছে।আর ফারুকীর মায়া নামের একটা নাটক আছে যেখানে সন্তান কালো হওয়ার কারনে বাপে সন্দেহ করে সন্তানটা তারনা।(নাটকটা অনেক অসাধারন লাগছে নাটকের বিষয় আর এন্ডিঙ্গের কারনে একজন মা যে জানে সন্তানটা তার কিন্তু দেখা গেল হাসপাতালে জন্মের সময় অন্যের সন্তানের সাথে পাল্টপাল্টি হইছে,সন্তান লালনের ক্ষেত্রে কি কাজ করব্র তথ্য নাকি যা বলা হয় রক্ত...)শহীদুল জহিরের সাক্ষাৎকারে আছে গ্রামের মানুষ এইরকম প্রশ্ন করে মজা করে(তুমরা এত কালা পুলায় এত ধলা হইছে ক্যালা?মায়া নাটকের আয়ডিয়াটাও আমার মনে হয় এইখান থেকে আসছে।
দেখে বা লেখা পড়ে আমার যা মনে হইছে তাই বললাম তথ্যে ভুল থাকলে শুধরায়া দিয়েন।নেটেতো এদের সম্পর্কে তেমন কিছু নাই যে চেক করে দেব।
এত কথা পড়ে মেজাজ খারাপ হয়ে থাকলে বা নাথাকলেও উপন্যাসের অংশটুকু আর একবার পড়েন ভালো লাগব।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৪৯