প্রথম অনুচ্ছেদঃ
এতো হিসেব-নিকেষ... এতো অঙ্ক ... এতো ইগো সংক্রান্ত প্রশ্নবানে বিধ্বস্ত করে কোনো লাভ নেই! "দিনশেষে পাখি নীড়ে ফিরবেই" এটা যতটা বাস্তব ঠিক ততটা'ই বাস্তব "সব পাখি নীড়ে ফিরে না"।
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদঃ
"আমি ভালো... সে খারাপ", "সে বেশি ভালো... সে কম ভালো" "সে অতিমাত্রায় ভালো কিংবা সবচেয়ে বেশি খারাপ" এইসব যুক্তিতর্ক দিয়ে কিন্তু জীবন চলে না। জীবনের আরও অনেক কাজ আছে, আরও অনেক দিক আছে। তবে একটা দিক অবশ্যম্ভাবী, চূড়ান্ত... আর সেইটা হল সকল প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হইবে। আর মৃত্যুর পর সবাই কিন্তু একই হয়ে যায়... সবার নাম কিন্তু একই হয়ে যায়... সবার গন্তব্যও তখন এক হয়ে যায়! "লাশ" বাদে তখন তাকে আর অন্য কোনো নামে'ই ডাকা হয় না। অদ্ভুত এক রীতি... জীবিত প্রেসিডেন্টকেও এই জগতে "লাশ" বলে ডাকা হয়। "এই লাশ'টাকে একটু ধরতো"... "তুই লাশের পায়ে ধর"... "লাশের চোখটাকে বন্ধ করে দে’তো"... "লাশ'টাকে সারারাত একা রাখা যাবে না, তোরা কয়েকজন লাশের পাশে সারারাত বসে থাকিস!"
তৃতীয় অনুচ্ছেদঃ
একটা লাশ কখনও একা থাকতে পারে না। কে জানে হয়ত'বা একা থাকতেও পারতো!...কিন্তু পৃথিবীর জীবিত মানুষেরা লাশদেরকে কখনও একা ফেলে রাখে না! তখন মনে হয় জীবিতদের মাঝে দুইটা অনুভুতি কাজ করে। এক...ভয়, আমাকেও একদিন লাশ হতে হবে এই ভয়। দুই.. ভালবাসা, এই লাশটাতো আমার'ই ভাই... আমার'ই চাচা। লাশটাকে সারারাত একা ফেলে রাখি কেমন করে! অথচ, কঠিন হলেও সত্য এই লাশ'টাই মাত্র কিছুক্ষণ আগে... কয়েক'ঘণ্টা আগে যখন জীবিত ছিল তখন তার সাথে কথা বলতে'ই ইচ্ছে করে নি। আনুমানিক ১০ বছর কথা হয়নি... এই লাশটার জীবিত মানুষটা'র সাথে। কারণ অনেকগুলো অনুভূতি হতে পারে ...ঘৃণা, অহং, হিংসা, রাগ, কষ্ট, হতাশা, ইত্যাদি। অথচ মাত্র'ই যখন সেই মানুষ'টা এই লাশে পরিণত হয়েছে তখন থেকেই সবগুলো আবেগ শেষ। জন্ম নিল নতুন এক আবেগ... ভালোবাসা। একমাত্র ভালবাসা'ই সবকিছুর ঊর্ধ্বে... সব আবেগের ঊর্ধ্বে। একমাত্র লাশ'ই সবচেয়ে আপন... সবার চেয়ে আপন!
চতুর্থ অনুচ্ছেদঃ
এই জীবনে নাহয় লাশ হয়েই তোদের আপন হয়ে উঠবো! তবুও'তো তোদের ভালোবাসা পাব... তোদের কাছে পাব! এমনও হতে পারে লাশ’টাও তোদের কালো কপাল মিশ্রিত হাসি দেখবে... জীবিত মানুষের সাথে করা হুবহু একই আচরণ লাশ’টাও পাবে... কি দরকার এতসব সাত-প্যাঁচ ভেবে! ভালোইতো আছি... এতটুকুন একরোগা না হলে সম্মান নিয়ে বাঁচাইতো দ্বায়! এক জীবনে না’হয় আমি ইসরাইল হয়েই রয়লাম! তবু তোদের এই কালো কপাল মিশ্রিত হাসি আমি দেখতে চাই'না... হতে চাই'না তোদের সুখের দিনে দুঃখী একজন।
উপসংহারঃ
আমি জনমপোড়া... এক জনম সাজা কাটানোর জন্যইতো এই পৃথিবীতে আসা... দূর থেকেই শুধু ভালোবাসে যাবো... জনম ভরে তোদেরকেই শুধু ভালোবেসে যাব...
পাদটীকাঃ
মা আলো, তবু বলছি... তুই শুধু ভালবাসাতেই প্রজ্বলিত হবি। সবসময় শুধু ভালোবাসার গানই গাইবি... তোর একজীবনের ভালোবাসা হয়তো'বা তাদের সেই অন্ধকার ঘরকে আলোক'ছটায় প্রস্ফুটিত করতে নাও পারে। তবুও মনে রাখবি... পারতেও'তো পারে... হতেও'তো পারে...এমনটা'ই বিধাতার কাম্য... এমনটাই জগত সংসারের উদ্দেশ্য! সবাই হয়তোবা একদিন বুঝে যাবে যে, "আমরা সবাই একই সময়ের তৈরি কিছু দেহ মাত্র... যাতে বিধাতা'র বসত আছে... যেই তিনি আমাদেরকে বাঁচায়... সেই তিনি নিজেও বাঁচেন (থাকেন) তাতে।"