খুব ছোট বেলায় বাবার উপর বেজায় রাগ ছিল । অভিযোগ অনেক । খেলতে দেয় না , সব কার্টুন দেখতে দেয় না আরো কত কি ? কিন্তু এখন ভাবি কি বোকাই না ছিলাম ।জীবনে প্রথম যখন কম্পিউটার দেখি ,আবাক হয়ে দেখতাম মনিটর টাকে ।এই মনিটরকে মনে করতাম কম্পিউটার এবং ভাবতাম কি জিনিস বানাইছে আল্লাহ্ ।কিছুদিন পরে বুজলাম আসলে কী বোর্ড টাই হলো কম্পিউটার ।এরও অনেক দিন পর এক বড় ভাই বললেন নিচের বক্সটা হলো CPU এবং আসল কম্পিউটার ।এই ধারোনাটা বহন করেছি অনেক বছর।
আমাদের এক বড় ভাইয়ের বাসায় তখন কম্পিউটার ছিল। তাকে আমার মনে হত অনেক বড় এক কম্পিউটার বিজ্ঞানি।তার কম্পিউটার রুমে একবার ঢুকতে পারলে জীবন সার্থক হয়ে যেত। তখন শুনতাম কম্পিউটার খুব সহজে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়।আর ভাবতাম এই জন্যই একে এসি রুমে রাখা হয়!! কিন্তু ঠাণ্ডা লাগলে তো আর তারাতারি ভাইরাস আক্রমণ করবে ???
এখনো মনে পড়ে ১৯৯৮ সালে বাসে করে চট্রগ্রাম থেকে ঢাকা আসছি এসি বাসে । আমার বাম পাসে এক ছাত্র যাচ্ছে । তার কোলে তাওল পেচানো একটি বস্তু ।তার এক সঙ্গি ড্রাইভারকে বলছে ভাই আমরা একটা হার্ডডিস্ক নিয়ে যাচ্ছি গাড়ি যেন বেশি লাফালাফি না করে । ঐ সময়েতো শীততাপ নিয়ন্ত্রিত রুম ছাড়া কম্পিউটার চিন্তাই করা যেত না । আর সেই রুমে যেতে হবে খালি পায় ।আর কম্পিউটার কেনার আগে বাসায় এসি অবশ্যই লাগাতে হবে।
২০০৩ অথবা ২০০৪ সালে মালায়সিয়া থেকে ছোট ভাইয়ের জন্য একটি পেন ড্রাইভ এনেছিলা ২৫৬ মেগাবাইট ।শুনে ছিলাম বন্ধু মহলে তার, মানে আমার ভাইয়ের মুল্য বেরে গিয়েছিল ।অনেক তাকে খওয়া বাবদ ঐ পেন ড্রাইভ ব্যবহারের জন্য নিয়ে যেত।এবার তার জন্য ১ টেরা বাইট একটা হার্ড ডিস্ক এনেছি ।কিন্তু তার মনে ঐ রকম খুশি দেখলাম না যেটা দেখেছিলাম ২৫৬ মেগাবাইট পেন ড্রাইভ দেবার সময়।
আজ খুবই অবাক হই যখন দেখি আমার সারে চার বছরের ছেলে নিজে কম্পিউটার অন করে , গেম খেলে, গান শুনে আবার ShutDown করে ।
আমার মরহুম আব্বাজানকে ধন্যবাদ । তার কারনেই কম্পিউটার নামের বস্তুটির সাথে অনেক আগেই আমাদের বন্ধুত্ব হয়েছিল। ।
লেখাটি আমি পুলিশ মামুদের জন্য উৎসর্গ করলাম।