somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাকা মহানগর আ'লীগের কাউন্সিল অনিশ্চিত

০৭ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ৮:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

Click This Link

শরিয়ত উল্লাহ খান
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পর পর কাউন্সিল হওয়ার কথা থাকলেও দীর্ঘ ৯ বছরেও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কোনো কাউন্সিল হয়নি। এতে তৈরি হচ্ছে না নতুন নেতৃত্ব, ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখছেন পুরনোরা। ফলে সাংগঠনিক দিক থেকে দুর্বল হয়ে পড়েছে সংগঠনটি। ঈদের পর এবার কাউন্সিল হওয়ার কথা থাকলেও তার কোনো আলামতই দেখা যাচ্ছে না বলে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকে। কোনো প্রকার উদ্যোগ নেই প্রথম সারির নেতাদের মাঝেও। তাই কাউন্সিলের বিষয়টি অনিশ্চিত বলে মনে করছেন তারা। এমনকি কাউন্সিল আদৌ হবে কিনা তাও নিশ্চিত নয়। নগর আওয়ামী লীগের অনেকে সরাসরি অভিযোগ করে বলেন, সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কারণেই কাউন্সিল হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে কাউন্সিলের কথা বলা হলেও তারা এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগই নেননি। তারা আরো বলেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পাওয়ার পর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দলের সভানেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করবেন এবং সেই ওয়ার্কিং কমিটিই সব কাজ করবে, এটাই কথা ছিল। কিন্তু তা তারা করেননি। আবার এসবের জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছে নগর নেতাদের কেউ কেউ। তারা বলেছেন, নগর আওয়ামী লীগ সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত, কিন্তু কেন্দ্রীয় কোনো নির্দেশনা না পাওয়ার কারণেই কাউন্সিল করা সম্ভব হচ্ছে না। গত ২০ জুন মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ বর্ধিত সভায় সংগঠনের নেতাকর্মীরা দ্রুত কাউন্সিল করার দাবি তোলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দু'মাসের মধ্যে নগর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। রমজানের মধ্যে ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের কাউন্সিল করার কথা বলেন তিনি। কিন্তু এরপর কেন্দ্র থেকে এখন পর্যন্ত আর কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ যায়যায়দিনকে বলেন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল নিয়ে এখন কোনো চিন্তা-ভাবনা নেই। তারপরও কাউন্সিলের জন্য পদ-পদবি নিয়ে দলাদলি শুরু হয়ে গেছে নগর নেতাদের মধ্যে। ইতোমধ্যে কয়েকটি গ্রুপে বিভক্তও হয়ে পড়েছেন নগর নেতারা। সভাপতি এম এ আজিজ ও সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামসহ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত তারা। মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় ২০০৩ সালে। এতে ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র প্রয়াত মোহাম্মদ হানিফ সভাপতি ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া সাধারণ নির্বাচিত সম্পাদক হন। কিন্তু ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর মোহাম্মদ হানিফের মৃত্যুতে সঙ্কটের মুখে পড়ে সংগঠনটি। সে সময় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান সিনিয়র সহ-সভাপতি ওমর আলী। কিছু দিন পর নেতাকর্মীদের বিরোধিতার মধ্যে পদত্যাগ করেন তিনি। এরপর কেন্দ্রীয় নির্দেশে এ কে এম রহমতউল্লাহকে দায়িত্ব দেয়া হয়। কিছুদিনের মধ্যে তাকেও সরে দাঁড়াতে হয়। এরপর অন্যতম সহ-সভাপতি কামাল আহমেদ মজুমদার, আলহাজ মকবুল হোসেন, ডা. এইচ বি এম ইকবালকে ডিঙিয়ে আবারো পাঁচ নাম্বার সহ-সভাপতি এম এ আজিজকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়। ওয়ান-ইলেভেনের মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া দেশত্যাগ করলে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব অর্পিত হয় অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের ওপর। দল ক্ষমতায় এলে দেশে ফিরে আসেন মায়া। এক বছরের মাথায় তিনি আবার সাধারণ সম্পাদকদের দায়িত্ব পান। নেতাকর্মীদের অভিযোগ সংগঠনের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকরাও বড় কর্মসূচি ছাড়া নগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আসেন না। বেশিরভাগ নেতাই ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত। অনেকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি এবং দখলবাজির অভিযোগও উঠেছে বিভিন্ন সময়ে। কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যবেক্ষণ না থাকায় নগর নেতাদের কার্যক্রম নিয়ে জবাবদিহি করতে হচ্ছে না। এর আগে সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে মহানগরের নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হয়ে উঠলেও পরে তা স্থগিতের ঘোষণায় ফের ঝিমিয়ে পড়েন তারা। অভিযোগ রয়েছে, এম এ আজিজ কর্মসূচি ছাড়া সংগঠনের কার্যালয়েই আসেন না। সহ-সভাপতিদের অধিকাংশই নক্ষত্র দূরে রয়েছেন সংগঠনের কর্মকা- থেকে। ঢাকার সাবেক মেয়র হানিফের পুত্র নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খোকন ওয়ান ইলেভেনের সময়ে পিডিতে যোগ দেন। এরপর থেকে তিনি নগর আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রায় সম্পর্কহীন। নগরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, প্রচার সম্পাদক আবদুল হক সবুজসহ হাতেগোনা কয়েকজন নেতা ছাড়া কাউকে দলীয় কার্যালয়ে দেখা যায় না। কাউন্সিল বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারবেন না। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বলতে পারবেন। মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ বলেন, তারা কাউন্সিলের জন্য প্রস্তুত। দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা যেদিন নির্দেশ দেবেন সেদিনই কাউন্সিলের কাজ শুরু করতে পারবেন। তবে আশা করা যায় ঈদের পর দু-এক মাসের মধ্যেই কাউন্সিল হবে। মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ সেলিম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সম্মেলন না হওয়ায় কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা কমে গেছে। কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথে কাউন্সিল হলে নেতাকর্মীরা যেমন চাঙ্গা থাকে তেমনি নেতৃত্বেও পরিবর্তন আসে। মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ বলেন, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের মূল চালিকাশক্তি নগর কমিটি। দীর্ঘদিন কাউন্সিল না হওয়ায় কর্মীরা ঝিমিয়ে পড়েছে। এখন দ্রুত কাউন্সিল দিতে হবে। এখন কাউন্সিলের জন্য সংগঠনের নেতাদেরকেই এগিয়ে যেতে হবে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×