somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহাজোট শরিকদের মানভঞ্জনের উদ্যোগ

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

Click This Link

মহাজোট শরিকদের মানভঞ্জনের উদ্যোগ

শরিয়ত খান
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে মহাজোটের ঐক্য টিকিয়ে রাখতে মরিয়া চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। দীর্ঘ চার বছর শরিকদের প্রতি অবহেলা ও বঞ্চনার কারণে জোটের ঐক্যে যে নড়বড়ে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তা আর সহজে মেরামত করতে পারছে না তারা। এখন বুঝিয়ে-সুঝিয়ে এক দলের মানভঞ্জন করছে তো অন্য দল বেঁকে বসছে। আবার কোনো কোনো দল সরাসরি বিরোধী দলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে। এ নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত আওয়ামী লীগ। সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে, মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রধান শরিক জাতীয় পার্টি উল্টাপাল্টা আচরণ করছে। এতে ফাটল ধরছে মহাজোটীয় ঐক্যে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এরই মধ্যে জোটের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, সরকারি ও বিরোধী দল বিএনপি জনসমর্থন হারিয়েছে। জনগণ এদের কাউকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাই আগামী নির্বাচনে তিনি একাই নির্বাচন করবেন এবং তার দলই জিতবে। অন্যদিকে মহাজোটের শরিক ১৪ দলের নেতারাও নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের পথে হাঁটা শুরু করেছে। বদলে ফেলেছে সুর। পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করে ক্ষমতার শেষ সময়ে আওয়ামী লীগ শরিকদের কাছে টানার চেষ্টা করলেও তাতে বিশেষ কোনো লাভ হচ্ছে না। মন গলছে না কারোরই। এছাড়া সরকারের কোনো ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিতেও রাজি নয় শরিক দলগুলো। বিভিন্ন সূত্র জানায়, মহাজোটের বৈঠকেও শরিকদলগুলো ঘুরে ফিরে সরকারের ব্যর্থতাই সামনে নিয়ে আসছে। বৈঠক শেষ হয় দু'-একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্য দিয়ে। কিন্তু ঐক্যের অভাবে এসব কর্মসূচিও বাস্তবায়িত হয় না। গত দেড় মাসে তিনটি বৈঠক হয়েছে ১৪ দলীয় জোটের। যদিও এর আগের গত ৪৭ মাসে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের বৈঠক হয়েছে মাত্র ৬-৭টি। প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে ২৩ দফার ভিত্তিতে মতৈক্য হয় ১৪ দলে। ক্ষমতায় গেলে এসব অঙ্গীকার বাস্তবায়নের আশ্বাসও দেয়া হয়েছিল। সে লক্ষ্যে প্রতিমাসে ১৪ দলের একটি বৈঠক করার কথাও ছিল। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর সেসব কথার কোনোটিই রাখেনি আওয়ামী লীগ। এমনকি ঠিকমত মূল্যায়ন করাও হয়নি জোটের শরিকদের। দীর্ঘ চার বছর ধরে অব্যাহত অবহেলা ও বঞ্চনায় শরিক দলের নেতারা তুষের আগুনে জ্বলেছেন অভিমানে। আর সে অভিমানের আগুন এখন লেলিহান শিখা হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে পুরো জোটে। তাই সে আগুন সহজে নিভবে বলে মনে করেন না অনেকে। শরিক দলের অনেক নেতারা জানান, গত চার বছরে নানা অভিযোগ ও অনুযোগ-পরামর্শ দেয়া হয়েছে আওয়ামী লীগকে। কিন্তু তারা সেসব গা করেনি। এমনকি মহাজোটের প্রতি কোনো রকম দায়ও দেখায়নি জোটের প্রধান এ দল। তা হলে আজ কেন আওয়ামী লীগ মহাজোট টেকাতে এত মরিয়া হয়ে উঠল? মহাজোট কি শুধু আওয়ামী লীগের স্বার্থরক্ষার জোট? এ প্রশ্ন ছুড়ে শরিক নেতারা বলেছেন, এ জোট দেশের স্বার্থ রক্ষার জোট। আওয়ামী লীগের যখন দরকার হবে জোট ব্যবহার করবে, আর যখন প্রয়োজন মনে করবে না তখন ছুড়ে ফেলে দেবে, তা হতে দেয়া যাবে না। জোট সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় ১৪ দলের বৈঠকে জেলা শহরগুলোতে ঝটিকা সফরের মাধ্যমে তৃণমূলে ১৪ দলকে শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরপর দেড় মাস অতিক্রান্ত হলেও তার কোনো অগ্রগতি হয়নি। উল্টো বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে হরতালসহ নানা কর্মসূচির সঙ্গে একাত্ম হয় জোটভুক্ত বাম দলগুলো। কিন্তু সেদিনের বৈঠকে জোটনেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। জোটনেত্রীর কথামত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বানচালে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা ও এ বিচারের দাবিতে জনমত সৃষ্টি, বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসাত্মক কর্মকা- মোকাবেলায় নানা কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে গত ২২ ডিসেম্বর সারাদেশে সমাবেশ ও গণমিছিল কর্মসূচি পালন করে তারা। জানা যায়, সর্বশেষ ১৪ দলের সভা হয় গত ৭ জানুয়ারি। সভায় জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে তেলের বর্ধিত মূল্য কমানোর পাশাপাশি আগামীতে গ্যাস, বিদ্যুৎসহ কোনো ধরনের জ্বালানি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি না করার পরামর্শ দেন শরিকরা। যদি আওয়ামী লীগ তা না করে তাহলে সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার সুস্পষ্ট ইঙ্গিতও দিয়েছেন তারা। এ ব্যাপারে জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরিফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, এ মুহূর্তে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি জনগণ মেনে নেবে না। বর্ধিত মূল্য কমানোর প্রস্তাব দিতে গিয়ে ভারতের জোট সরকার ইউপিএ'র উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ভারতে তেলের মূল্য বৃদ্ধির পরেও শরিকদের চাপে ইউপিএ সরকার ২ টাকা দাম কমাতে রাজি হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেপথে যাচ্ছে না।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×