somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শুভ জন্মদিন পাগলা!!

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৮:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পাকিস্তান আর্মি তখন ছিল অনেক সুসজ্জিত। বিশ্বের অন্যতম সেরা সেনাবাহিনী ছিল তাদের। এমন সময় ডাক পড়ে স্বাধীনতার। বাঙ্গালী লাঠিচুড়া আর দেশীয় অস্ত্র নিয়েই ঝাপিয়ে পড়েছিল হানাদারদের।

কিছু তাড়ছিড়া লোক ছিল আমাদের। রক্ত দেওয়ার জন্যই যেন ওদের জন্ম হয়েছিল। এতোটুকুও চিন্তা করেনি নিজের প্রতি। লক্ষ্যটা ছিল দেশের, লক্ষ্যটা ছিল বিজয়ের।

সে লক্ষ্যে তারা অর্জন করেছিল। অর্জন করেছিল ত্রিশ লক্ষ্য শহীদ আর দুই লাখ মা- বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বিশ্ব মানচিত্রে ছোট্ট একটু জায়গা, নাম ছিল বাংলাদেশ।

সেই দেশের আরেক তাড়ছিড়া পোলা। নাম মাশরাফি বিন মর্তুজা। বল-ব্যাট নিয়া দৌড়াদৌড়ি করে। লক্ষ্যটা বিজয়ের পতাকাটা বিশ্বের দরবারে উচু করার।

বিশ্বের তাবৎ বাঘা বাঘা প্লেয়াররা যেখানে একবার ইঞ্জুরিতে পইড়াই বললেন নাহ খেলা সম্ভব না, সেখানে বারবার অপারেশন করে পঙ্গুত্বের শঙ্কা চোখের সামনে ঝুলিয়ে তিনি বললেন দেশের হয়ে খেলব না...?? হতেই পারেনা...!

মানসিকভাবে এতোটা শক্তি কোথা থেকে পান এই প্রশ্নের উত্তরে ম্যাশ জানান “বারবার ইনজুরি থেকে ফিরে আসার প্রেরণাও পাই সেসব বীর মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকেই। এমনও ম্যাচ গেছে আমি হয়তো চোটের কারণে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছিলাম না। দুই-তিনটা বল করেই বুঝতে পারছিলাম সমস্যা হচ্ছে।

তখন তাঁদের স্মরণ করেছি। নিজেকে বলেছি, ‘হাত-পায়ে গুলি লাগার পরও তাঁরা যুদ্ধ করেছিলেন কীভাবে? তোর তো একটা মাত্র লিগামেন্ট নেই! দৌড়া... আমরা পতাকার জন্য খেলি, খেলি সোনার বাংলার জন্য


ম্যাশের এই ডেডিকেটেড মাইন্ড দেখে অনেকেই বলেন যে একাত্তরের আগে মাশরাফির জন্ম হলে হয়ত আমরা ৭ জন নয় নিশ্চিৎভাবেই ৮ জন বীরশ্রেষ্ঠ পেতাম।

ক্রিকেটের মাঠের এই ফাস্ট বোলার ব্যাক্তিজীবনে অত্যন্ত সাদাসিধে মানুষ। তাকে অনায়েসেই বলা যায় মানবতা নামক কোনো বইয়ের শ্রেষ্ঠতম চরিত্রগুলোর একটি।

একবার এক সাংবাদিক মাশরাফিকে জিজ্ঞেস করেছিলেন ‘তোমার জুনিয়র অনেক ক্রিকেটার তোমার দশ গুণ ধনী।’ মাশরাফি ভ্রু কুঁচকে বলল, ‘আমার সিনিয়র অনেক মানুষ যে আমার চেয়ে দশ গুণ গরীব, সে খেয়াল আছে? শুধু ধনীদের হিসাব করেন কেন! হিসাবের নেশা খুব খারাপ।’

এই পাগলাটা আছে বলেই আমরা স্বপ্ন দেখতে পাই, স্বপ্নকে নতুন করে সাজাতে চাই। কিভাবে দেশের জন্য কিছু করতে হবে আর কোনো ইচ্ছা থাকলে নানা প্রতিকূলতাকে পাশ কাটিয়ে কিভাবে কিভাবে ছুটতে হয় লক্ষ্যপানে..

মাশরাফি নামটা তাই ক্রিকেটের মাঠ ছাড়িয়ে অনুপ্রেরণার পর্যায়ে চলে গেছে। এমনই এক অনুপ্রেরণা যে তার নাম শুনলেই দেশকে ভালোবাসতে শেখায়। শেখায় দেশের জন্য, লাল সবুজের পতাকাকে উড়িয়ে দেবার অনুপ্রেরণা যোগায়...

পৃথিবীতে সম্ভবত আমরাই একমাত্র জাতি যাদের অনুপ্রেরণা, মানবতা, দেশপ্রেম, আবেগ, ভালোবাসা এইসব অনুভূতি একজনের কাছ থেকে পেতে পারছি..

আমাদের অনুপ্রেরণার জন্য রবার্ট ব্রুসের মাকড়সা কিংবা রাজ্য জয়ের কাহিনী না পড়লেও চলে, কেননা আমাদের একজন মাশরাফি বিন মর্তুজা আছে। আমাদের বাবা-মায়েরা অনায়েসেই মাশরাফির গল্প বলতে পারে..

আমরা সত্যিই সৌভাগ্যবান যে আমরা পৃথিবীর সবচেয়ে সাহসী ও দেশপ্রেমিক ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজার সময়ে জন্মেছি !!

এই মানুষটাকে নিয়ে লেখতে চাইলে ১০-১৫ উপন্যাস অনায়েসেই লেখা যেতে পারে, কিন্তু উনাকে নিয়ে লিখতে গেলেই যেন কলম কিংবা কিবোর্ড চালাতে পারিনা। সেটা হতে পারে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা কিংবা একরাশ মুগ্ধতার জন্য...

শুভ জন্মদিন মাশরাফি। শুভ জন্মদিন জুনিয়র মাশরাফি ‘সাহেল মর্তুজা’। শুভ জন্মদিন গুরু। শুভ জন্মদিন কৌশিক। শুভ জন্মদিন পাগলা।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৮:২৯
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'

লিখেছেন নীলসাধু, ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬




আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×