সেদিন রাতে গিয়েছিলাম মোবাইল দোকানে, দোকানে প্রবেশ করিয়া দোকানির সহিত কুশলাদি বিনিময় সম্পন্ন করিবার আগেই দোকানে অতি পরিচিত এক ভাতৃপ্রতিম বন্ধুমামা প্রবেশ করিলেন।
দোকানদার তাহাকে দেখিয়া বিন্দুমাত্র বিচলিত হইলেন না। অতি উৎসাহে প্রশ্ন করিলেন এতোদিন পর হঠাৎ করিয়া কোথা হইতে তাহার আগমন ঘটিলো। এতোকাল কোথায় ছিলেন?
বন্ধুপ্রতিম মামা কণ্ঠস্বর কঠিন করিয়া সহজভাবে কহিলেন, “এতোদিন ভিতরে ছিলাম।”
দোকানির বোধগাম্য হইলো না। এইবার তিনি খানিক বিচলিত হইলেন। তিনি পুনরায় বলিলেন, “ভিতরে মানে বুঝলাম না।”
বন্ধুমামা বলিলেন, “এতোদিন জেলে ছিলাম। একটা ক্রাইম ঘটাইয়াছিলাম তাই মাস তিনেক জেলের ভিতরে ছিলাম। তোমাদের নগরীতে যাহাকে জেল বলিয়া সম্বোধন করিয়া থাকো, আমরা তাহাকেই ‘ভিতর’ বলিয়া থাকি।
আমি তাহাদের এই কথোপকথনের মাঝে তৃতীয় পুরুষের মতই কর্ম সাধন করিতেছিলাম। মনে হইলো, না কিছু বলা অতীব প্রয়োজনীয়। যখনই কিছু বলিতে উদ্ধত হইলাম তখনই স্মরণ হইলো যে, এই বন্ধুমামার সহিত আমার প্রায়শই কথার সাক্ষাত না হইয়া থাকলেও দুই চক্ষুর মিলন তো প্রায়ই সম্পন্ন হইতেছে।
আমি বুঝিতে পারিলাম যে, আজিকালকার এই অত্যাধুনিক যুগে আসিয়া জেল হাজতে যাওয়াও এক ধরণের ফ্যাশনে পরিনত হইয়াছে। উপলব্ধি করিতে পারলাম যে, এইভাবে চলতে থাকিলে আমরা একসময় স্টাইলিশ জাতি গঠন করিতে পারিবো।
যাহা বুঝিলাম না বা উপলব্ধি করিতে ব্যার্থ হইলাম তাহা হইলো, এই ফ্যাশনের স্টাইলিস্ট তরুণ দিয়া এই জাতি করিবে কি?