গত বছরের মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে মদীনা শরীফে এক সন্ধ্যায়, আমি বসে আছি মদিনার মসজিদে নববীর বাবে জিব্রাইল এর সামনে। উল্লেখ্য বাবে জিব্রাইল হলো রাসুলে পাক দঃ এর ঘরে প্রবেশের একটি দরজা এই দরজা দিয়েই জিব্রাইল আঃ আল্লাহর নবী সাঃ এর ঘরে প্রবেশের অনুমতি পেতেন। বাবে জিব্রাইল থেকে কয়েক কদম গেলেই বিশ্ব জাহানের সরদার আমার প্রিয় নবীর রাওজা মোবারক। আমি মদীনার সবুজ গম্বুজ দেখছি আর নিজের অন্তর আত্মাকে শান্তিময় আনন্দে ভরে তুলছি। মনে হচ্ছিলো হায় আমার আল্লাহ আমার মরন যদি এখানে হতো। তাহলে হাজারো সাহাবীর কবরের পাশে হয়তো আমার কবর হতো।
এসব ভাবতে ভাবতে এক সময় হারিয়ে যাচ্ছিলাম এক ভিন্ন জগতে। আমার সফরসংগী ইব্রাহীম ভাই এসে আমাকে জানালেন ফিরতি বাসের টিকেট প্রস্তুত। একটু পরেই আমাদের রওয়ানা দিতে হবে জেদ্দায়। সেখান থেকে পরদিন ফ্লাইটে ঢাকা।
রাত ১২ টায় আমাদের বাস ছেড়ে যাচ্ছে প্রানের শহর মদিনা, মনে মনে বলছি হে দয়াময় ওগো দয়ার সাগর আমি এ শহর ছেড়ে কি করে যাবো? এ কষ্ট আমি কি করে সইবো? আমাদের বাস ছুটে চলেছে জেদ্দা নগরীর দিকে জানালার পাশে আমি তাকিয়ে আছি শেষবারের মতো যদি আরেকবার সবুজ গম্বুজ দেখতে পেতাম। আমি অঝর ধারায় কাঁদছি। মদীনা শহরের বড় বড় দালানগুলো সবুজ গম্বুজকে ঢেকে ফেলেছে বহুদিন ধরে। আমি জানিনা শহর থেকে এতো দূরে চলে আসার পর শেষ সময়ে হঠাত কোথা থেকে যেন একটু ফাঁকা জায়গা দিয়ে আমি মদিনার সবুজ গম্বুজকে দেখে ফেললাম। আমি অবাক এবং বিষ্ময় নিয়ে দেখছি আমার নবীর রওজা। চোখের পানিতে বার বার সে দৃশ্য ঘোলা হয়ে আসছিলো। আমি চোখ মুছে দেখার চেষ্টা করছি। মনে মনে বলছি বিদায় ইয়া রাসুল আল্লাহ বিদায়।
সারাদিনের ক্লান্তি আর মদীনার শোকে আক্রান্ত আমি এক সময় ঘুমিয়ে পড়ি। মাঝ রাতে ঘুম ভেঙ্গে দেখি আকাশে একফালি চাঁদ উঠেছে। কালো কালো পাহাড়ের বুক চিরে তৈরী রাজপথ পাড়ি দিয়ে আমাদের বাস এগিয়ে যাচ্ছে। মরুভূমির স্নিগ্ধ চাঁদের আলোতে দূর ধু ধু প্রান্তে তৈরী করেছে এক মায়াময় জগত। নিজেকে মনে হচ্ছিলো অন্য কোন এক অদেখা ভুবনের যাত্রী। মনের মধ্যে মদীনা যে গভীর রেখা সেদিন একে দিয়েছে সে টান আমি আজো অনুভব করি। আজো হাজারো কষ্টে আমি মদীনাকে বিদায় দেয়ার কষ্ট মনে করি। তখন সব কষ্টই ম্লান হয়ে যায়।
নশ্বর এ ভুবনে অল্প কয়েকদিনের জন্য এসেছি। আজ চলে গেলে কাল দুদিন হয়ে যাবে। তিন চার দিন পর আর কেহ মনেও করবেনা। আজ ক্ষমাপ্রার্থী সেসব মানুষের কাছে যাদের আমার কারনে কষ্ট পেতে হয়েছে। ক্ষমাপ্রার্থী সে সকল মানুষের কাছে যাদের সাথে করা ওয়াদা পূরন করতে পারিনি।
জানি আমি ব্যর্থ। তবুও মনে রেখো আমি চেষ্টা করেছি, আমি চেষ্টা করেছি...........................
আলোচিত ব্লগ
দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা
সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন
ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১
নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়
সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।
হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন
আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই
সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন