somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইমাম মাহদি (আঃ) এর যুগে ৩য় বিশ্বযুদ্ধ- সূত্রপাত

২২ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইজমালিভাবে মুতাওয়াতির অগণিত হাদিস ও রেওয়াতে ইমাম মাহদি(আঃ) এর আবির্ভাবের নিকটবর্তী সময় বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার কথা বর্ণিত আছে। তবে এ যুদ্ধ আমাদের বর্তমান শতাব্দীর ঘটে যাওয়া ১ম , ২য় বিশ্বযুদ্ধের উপর আরোপ করা সম্ভব নয়। কারণ এসব রেওয়াতে উক্ত যুদ্ধের যে বৈশিষ্ট আছে তা ১ম ২য় বিশ্বযুদ্ধের থেকে ভিন্ন । বিশেষ করে নিহতের সংখ্যা এবং সময়কালের ক্ষেত্রে ভিন্নতা প্রকট। বরং কতিপয় রেয়াতে প্রমাণ হয় , এ যুদ্ধ ইমাম মাহদি এর আবির্ভাবের বছর বা তাঁর পবিত্র আবির্ভাবকামী আন্দোলন শুরু হবার পর হবে। কিছু নমুনা দেয়া হল ,

হযরত আলী (আঃ) – আল কায়েম আল মাহদির আবির্ভাব ও আন্দোলনের নিকটবর্তী সময়ে দু ধরনের মৃত্যু হবে – লাল মৃত্যু ও শ্বেত মৃত্যু । হঠাৎ লাল ও রক্তবর্ণ বিশিষ্ট পঙ্গপালের আবির্ভাব হবে । তবে লাল মৃত্যু অর্থ তরবারি বা মারনাস্ত্র দ্বারা মৃত্যু এবং শ্বেত মৃত্যু অর্থ প্লেগ বা মহামারী ।

আল কায়েম আল মাহদির আবির্ভাব ও আন্দোলনের নিকটবর্তী সময়- এ বাক্যাংশ থেকে প্রতিয়মান হয় যে, এ যুদ্ধ ও লাল মৃত্যু (রক্তপাত) ইমাম মাহদি এর আবির্ভাবের নিকটবর্তী সময় সংঘটিত হবে । তবে রেওয়াতে এ যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার স্থান নির্দিষ্ট করা হয়নি।

ইমাম বাকির (আঃ) – ভয় ভীতি , ভুমিকম্প , ফিতনা এবং যে সব বিপদে মানব জাতি জড়িয়ে যাবে সেগুলোর পর পরই কেবল আল কায়েমের আল মাহদির আবির্ভূত হবেন ও কিয়াম করবেন । এর আগে মানব জাতি প্লেগ মহামারীতে আক্রান্ত হবে । এর পরে আরবদের মাঝে যুদ্ধ রক্তপাত হবে , বিশ্বে মত বিরোধ বাড়বে , ধর্মে দ্বিধা বিভক্তি দেখা দেবে এবং তাদের সার্বিক অবস্থা এমন হবে, একে অপরকে হত্যা করতে দেখে সবাই কেবল নিজের মৃত্যু কামনা করবে ।

ইমাম সাদিক (আঃ) – কায়েম আল মাহদির আবির্ভাবের ও বিপ্লবের আগে এমন এক বছর অবশ্যই আসবে যখন মানুষ তীব্র খাদ্যাভাবে কষ্ট পাবে এবং তাদের হত্যা করার দরুন আতঙ্ক আচ্ছন্ন করবে।

ইমাম বাকির (আঃ) – প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যবাসী পরস্পর মতভেদ করবে। কিবলাপন্থী ( মুসলমান ) এবং বিশ্ববাসীও অসহনিয় ভয়ভীতি আতঙ্কে থাকবে। এর আকাশ থেকে আহ্বানকারী আহ্বান করা পর্যন্ত তারা এ অবস্থার মধ্যেই থাকবে। যখন আকাশ থেকে গায়েবী আহ্বান ধ্বনি শুনবে তখন তোমরা হিজরত করবে।---

আবু বাসির – ইমাম সাদিক (আঃ) বলেছেন যে পর্যন্ত দুই তৃতীয়াংশ মানুষ ধ্বংস না হবে সে পর্যন্ত ইমাম মাহদির আবির্ভাব হবেনা।

আমি ( আবু বাসির) জিজ্ঞাসা করলাম, মানবজাতির এত বড় অংশ শেষ হয়ে গেলে কেই বা বেঁচে থকবে ? তিনি বলেন – এক তৃতীয়াংশের মধ্যে থাকতে কি তোমরা (মুসলমান) পছন্দ করোনা ?

হযরত আলী (আঃ)- হে লোক সকল , বশীভূত করার জন্য যে উটের লাগাম পায়ের খুরের নিচে দিয়ে গলিয়ে দেয়া হয় এবং তার ভীতি ও অস্থিরতা বেড়ে যায় সেই উটের মত তোমাদের দেশ ও জনপদকে ধ্বংস বা দাহ্য পদার্থের দ্বারা পাশ্চাত্যে এক মহাযুদ্ধের আগুন প্রজ্জলিত করার আগেই আমাকে তোমরা জিজ্ঞাসা করো। ঐ যুদ্ধ যখন বাঁধবে তখন তা উচ্চস্বরে গর্জন করতে থাকবে। সে সময় ঐ ব্যক্তির জন্য আক্ষেপ কারণ যে , সে রক্তের প্রতিশোধ গ্রহণ করবে...। এ যুদ্ধ চলাকালীন নাজরান থেকে এক ব্যক্তি বের হয়ে ইমামের ( ইমাম মাহদি) আহবানে সাড়া দেবে। সেই হবে ইমামের আহবানে সাড়া দানকারী প্রথম খৃষ্টান। সে ক্রুশ এবং তাঁর আশ্রম ভেঙ্গে দেবে অতপর নিপীড়িত জনতার সাথে হেদায়াতের পতাকা সহ নুখাইলার দিকে যাবে।
সেদিন তিন হাজার হাজার ইহুদী ও খৃষ্টান পরস্পরকে হত্যা করবে।

তবে প্রাচ্য তার নিজের পায়ের দ্বারা ফিতনা সৃষ্টি করার আগে – ইমামের এ বাণী থেকে প্রতিয়মান হয় যে , এ যুদ্ধের সূত্রপাত "প্রাচ্য অর্থাৎ রাশিয়া "থেকে হবে অথবা এ থেকে প্রাচ্য এলাকায় দ্বন্দ্ব সংঘর্ষের বিষয় প্রতীয়মান হয়।

দাহ্য পদার্থের দ্বারা পাশ্চাত্যে এক মহাযুদ্ধের আগুন প্রজ্জলিত করা হবে- এ বাক্য থেকে প্রতীয়মান হয় , ধ্বংসের প্রকৃত কেন্দ্র পাশ্চাত্যের দেশ এবং সামরিক ঘাটি , রাজধানী এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হবে।

বাহ্যত ইমামের বাণীর অর্থ হচ্ছে পৃথিবীর বুকে মানুষের সমবেত হওয়ার স্থানটির নাম হবে ফারুক। তখন মানুষ বিশ্বের প্রত্যন্ত অঞ্চলের থেকে ইমাম মাহদি এর সাথে মিলিত হওয়ার জন্য ঐ স্থানে সমবেত হতে থাকবে ; তাঁর সামরিক ঘাঁটি কুফা ও হিল্লার মাঝে অবস্থিত। কারণ নাজরানের সন্ন্যাসী নিপীড়িত জনগণের কয়েক প্রতিনিধির সাথে ঐ স্থানে থেকেই তাঁর কাছে উপস্থিত হবে।

বিশ্ব যুদ্ধের সময়কাল – রেয়াত সমূহে থেকে যা জানা যায় তা হচ্ছে , এ যুদ্ধের সময়কাল ইমাম মাহদি আঃ এর আবির্ভাবে কালের খুব নিকটবর্তী হবে, যেমন এ যুদ্ধ তাঁর আবির্ভাবের বছরেই হবে......। যদি সব রেয়াতের বৈশিষ্টগুলোর মধ্যে সমন্বয় করি তাহলে এ কথা বলাই উত্তম , উক্ত বিশ্ব যুদ্ধ বহু পর্যায় বিশিষ্ট হবে। কারণ এ যুদ্ধ ইমাম মাহদি এর আবির্ভাবের কিছু আগে থেকে শুরু হয়ে বাকী পর্যায় তাঁর আবির্ভাবের আন্দোলনের পরেও চলতে থাকবে। এ যুদ্ধ চলাকালেই তিনি হিজাজ অঞ্চল মুক্ত করবেন ।ঐ বিশ্বযুদ্ধ ইমাম মাহদির ইরাক বিজয়ের পর শেষ হবে। আর রুশ জাতি অথবা তাদের বাকী অংশের বিরুদ্ধে ইমাম মাহদির যুদ্ধ বিশ্ব যুদ্ধ শেষ হবার পরেই সংঘটিত হবে। কারণ রেয়াতে বর্ণিত- ইমাম মাহদি (আঃ) যে সেনাবাহিনী গঠন করবেন সেটাকে তিনি তুর্কীদের ( রুশ জাতি) বিরুদ্ধে প্রেরন করবেন এবং সমূলে ধ্বংস করবেন ।


সংগ্রহ - ইমাম মাহদী (আঃ) এর আত্মপ্রকাশ ( আসরে যুহুর )

লেখক -আল্লামা আলী আল কুরানী


অনুবাদক - মুহাম্মদ মুনির হসেন খান

প্রকাশকাল- ফেব্রুয়ারি ২০০৮

WORLD WAR III XVX
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৯
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×