প্রশিক্ষক / প্রতারক: একুশে টেলিকম এন্ড ভেরাইটিজ স্টোর, বিশ্বনাথ রোড, রশিদপুর, সিলেট
বিকাশ এজেন্ট নাম্বার : 01776756382
৫/৪/১৪, বিকাল আনুমানিক ৫:০০
ঢাকা থেকে ৪২০০টাকা আসবে, হাইওয়ের পাশে ঐ বিকাশ সেন্টার দেখে যাই টাকা তুলতে। দোকানী হিরোইঞ্চি চেহারার ১ যুবক। ১০টি ফোননাম্বার লেখা ১টি কাগজ আমার সামনে মেলে ধরে ৪র্থ নাম্বারটি (01671229636) ঢাকায় পাঠাতে বলে হিরোইঞ্চি। পাঠাই। মেসেজ আসে।
কিছুক্ষণ মোবাইল টেপাটেপি করে হিরোইঞ্চি বলে- আপনে ত ভালামানুষ বইলা মনে অয় না, টাকা না আনাইয়াই টাকা নিতে চান। করেন কী?
কথা শুনে চমকে উঠি। বলি- আমি ওসমানী মেডিক্যালের ডাঃ। হয়েছে কী?
বলে- মেসেজ আইছে ঠিকঐ, টাকা ত আসে নাইকা। ফেইক মেসেজ দেওন কই থাইকা শিখছেন?
আমায় মেসেজ ও তার বিকাশ ব্যালেন্স দেখায়, তার কথা ঠিকই, ৪২০০ টাকার মেসেজ এসচে কিন্তু ব্যালেন্স ৯৬৭টাকা। ৫-৬বার কল দিই ঢাকায়, তারা ১০০% কনফার্ম করে, ট্রানজেকশন কোড পাঠিয়ে দেয়। পড়ি মহাফাঁপড়ে।
আমি বিকাশ হেল্পলাইন 16247এ কল দিতে চাই, হিরোইঞ্চি বাধা দিয়ে বলে- না না আপনে কল দিয়েন না, দারান আমি বিকাশ ম্যানেজাররে কল দেই।
আল্লাহই জানে কাকে কল দেয় সে, কথা শেষে জানায়, আজকে এই ম্যানেজার ছুটিতে, হেল্প করতে পারব না।
বলি- এখন উপায়?
বলে- আপনে ঢাকার দোকান থাইকা টাকা ব্যাক নেওয়াইয়া অন্য জাগা থাইকা ছারান।
বলি- ঐ এজেন্ট টাকা পাঠিয়ে দিয়েছে বলছে, সে এখন টাকা ব্যাক দেবে?
হিরোইঞ্চি বলে- তাইলে ত আমার আর কিচ্ছু করার নাই।
হিরোইঞ্চির তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও কল দেই 16247এ। ম্যানেজার সাহেব কমপ্লেইন শুনে বলেন- যে এজেন্টের কাছে টাকা এসচে তার এজেন্ট নাম্বার থেকে এখুনি আমাদের কল দিতে বলেন।
হিরোইঞ্চি তা করতে সোজা অস্বীকৃতি জানায়, তবে ধরা খাওয়া সমাগত দেখে পিঠ বাঁচানোর জন্য আবার কিছুক্ষণ মোবাইল টেপাটেপি করে জিহবা কামড়ায়, বলে- ওহহো মিসটেইক হয়া গেছে।
বলি- কী?
সে তার ১০টি ফোননাম্বার লেখা ঐ কাগজটি দেখিয়ে বলে- আপনেরে আমি লাস্ট নাম্বারটা ঢাকায় দিতে কইছিলাম না?
বলি- না তো, ৪র্থটা দিতে বলেছেন। ১০০% সিউর।
বলে- ওহ দেখেন মিসেটেইকটা এইখানেই হইছে। আমার এই মোবাইলটা ডুয়াল সিমের, ঐ কাগজের ৪র্থ আর ১০ম সিম দুইটা এই মোবাইলে ভরা আছে। আপনে টাকা আনাইছেন ৪র্থটাতে, কিন্তুক আমি ত এতক্ষণ ব্যালেন্স চেক করতাছি ১০ম টার। ওহ ছরি।
বলি- এটা আপনার ব্যবসা, আপনি এই মিসটেইক করেছেন আর এতক্ষণ ধরে বুঝতে পারেন নি, বিশ্বাস করলাম না।
রেগে গিয়ে বলে- অই মিঞাঁ আঙুল দেখাইয়েন না। টাকা দিতাছি নিয়া ফুটেন।
চোরের মার বড় গলা আর কী। কিন্তু অচেনা জায়গা, দেখা যাবে চোরের কয়টা মাসতুতো ভাই জুটে গেছে, শেষটায় আমাকেই বেইজ্জত হয়ে ফিরতে হবে। টাকা নিয়ে চলে আসি। বিকাশ হেল্পলাইনে জানাই, তারা দায়সারা জবাব দেয়। ১জন পুলিশের সাথে কথা বলি, সে জানায় প্রমাণ ছাড়া কিছু করার নেই। কী আর করা, সত্যিই তো আমার কাছে কোন প্রমাণ নেই। চোর কি আর প্রমাণ রেখে চুরি করে? প্রমাণের অভাবে এভাবেই ভুগে যাই আমরা। শেষে হয় চোর কি জয় আর চোরের মার বড় গলা। আর এভাবেই আমার ঝুলিতে জমা হয় বিকাশ প্রতারণা প্রশিক্ষণ, সার্টিফিকেট নেই- এই যা।