somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রোমের নিরো কি আসলেই বাঁশি বাজিয়েছিলো?

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

“রোম যখন পুড়ছিলো, নিরো নাকি বাঁশি বাজাচ্ছিলো।”
যা নিজের চোখে দেখিনা, তা অনেক সময়ই বিশ্বাস করিনা। তাই নিরো কি সত্যিই বাঁশি বাজাচ্ছিলো কিনা তা একদম হলপ করে বলতে পারছিনা। সে তো আর বঙ্গদেশীয় না। বঙ্গদেশীয় সন্তান না হলে ব্যাপারটা তো সত্য নাও হতে পারে।

রোমের ঘটনায় বঙ্গদেশীয়দের সম্পর্ক কি?

বিপদের সময় শুধুমাত্র বঙ্গদেশীয়রাই বাঁশি বাজাতে পারে। শুধু যে বাঁশিই বাজায় তা কিন্তু না, তারা বাঁশি বাজানোর প্রতিযোগিতাও করে।

সাভারে যখন ভবন ধ্বসে হাজার হাজার শ্রমিক চাপা পড়ে আছে তখন দেশের সরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, “হরতাল সমর্থনকারীদের দেয়াল ধরে নাড়া-চাড়া করার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।” বঙ্গদেশে নতুন করে বাঁশি বাজানো তিনিই শুরু করলেন। অসুস্থ রাজনীতির বাঁশি।

ভবন মালিক সোহেল রানা যখন পলাতক সাভার এর সংসদ সদস্য মুরাদ জং তার বাঁশি তে সুর দিলেন, “ধসে পড়া রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই”। তাদের যে সম্পর্কের ছবি সাভারের দেয়ালে দেয়ালে ছাপানো, ফেসবুক, ব্লগের যুগে যে তার বাঁশির সুর যে বড় বেখাপ্পা সেটা তিনি বুঝলেন না।


ও আমিতো ভুলেই গেলাম অন্য দলগুলোর রাজনীতিবীদদের কথা। রাজনীতি করে চুলপাকানো নেতা, সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর কাছে ভবন ধ্বসে পড়ার আরেক থিওরী ছিলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থাকলে এ ধরণের ঘটনা নাকি ঘটত না। নাড়া-চাড়া থিওরীর গালে এই থিওরী একটা ডাইরেক্ট চপোটাঘাত।

মওদুদ আহমেদ তিনি বিজ্ঞ মানুষ, চিন্তা ভাবনা করেই বললেন সেনাবাহিনীর তেমন কোন তৎপরতা দেখা যায়নি। সবকিছুতে গরিমসি। উদ্ধার চলছে ধীর গতিতে। ঊনারা ব্যাপক গতিশীল মানুষ, 3G যুগের মানুষ। তাই দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়া চটপট এসে ছবি তুলে চলে যান!

সাভারের মানুষের শরীরগুলো তখন পচতে শুরু করেছে! হতভাগ্য মানুষগুলো মৃত্যুর পরও সৎকারও যখন ভাগ্যে জুটেনি তখনও তাদের লাশের উপর দাঁড়িয়ে রাজনীতি চললো। নতুন উজানো হেফাজতীদের মাওলানা রুহী ঘোষনা দিলেন আল্লাহর গজব ছিলো সরকারের প্রতি। কিন্তু গজবে সরকারের কেউ তো মরলো না? রানা তো পালিয়ে গেসে? এইটা কোন ধরনের গজব ছিলো? যাইহোক একটু আগেও পত্রিকায় দেখলাম, আরো গজবের কথা তারা বলে রেখেছেন। নারী সমাজকে মাঠে নামালে আরো গজব নেমে আসবে। গজব কি আরো ভবন ধ্বসের রূপ ধরে নাকি ঊনাদের হাত ধরে আসবে বুঝতে পারতেসিনা। এতটুকুই দোয়া, মানুষের প্রানহানি যাতে না হয় বিশেষ করে গরীব খেটে খাওয়া মানুষদের।


এতো বড় বাঁশি বাজার প্রতিযোগিতা, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী চুপ থাকবেন কেন? কিনলেন একটা বাঁশি বলে দিলেন তার বাণি সুরে সুরে, রানাকে বিদেশে পাঠিয়ে সরকার গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন। ঊনার বাঁশির সুর একদম সঠিক হয়ে গিয়েছিলো প্রায়, কিন্তু রানা গ্রেফতার হলো। বঙ্গবীর সাহেব কি বাঁশি বাজান তাই এখন দেখার, সরকারও রানা কে নিয়ে কোন সুর তোলে তাও শোনার বিষয়।


বাঁশি বাজানোর প্রতিযোগিতা শুধু রাজনীতিবীদদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলোনা। মিডিয়া কর্মীরাও ছিলেন প্রতিযোগিতায়। মুন্নি সাহা তার বুদ্ধিদীপ্ত ক্ষনিকের চিন্তা-প্রসুত বিজ্ঞ মতামত দিচ্ছিলেন। ছোটখাটো রিপোর্টাররা তখন টিভি তে লাইভ এক্সক্লুসিভ ইন্টারভিয়্যু নিচ্ছেলিন তখনও আটকে থাকা মানুষগুলোর। এক্সক্লুসিভ রিপোর্টের ভীড়ে হারিয়ে যায় মানবতা।


উপরে যাদের কথাই বললাম, সবাই হয়তো ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। ২/৪ টা খোঁড়া যুক্তিও দাঁড় করাতে পারবেন তাদের বক্তব্যকে সমর্থন করানোর জন্যে। সবই তাদের কাছে শেষ পর্যন্ত ভোটের রাজনীতি।


নিরো কে একা দোষ দিয়ে কি হবে? আমার মনে হয়না নিরো বাঁশি বাজিয়েছিলো। অথবা নিরো নিজেই বাঙ্গালী ছিলো। ওই যুগে কোন ফাঁক গলে হয়তোবা চলে গিয়েছিলো রোমে। বাঙ্গালী কি কি করতে পারে তা বোঝা মুশকিল। কিছু মানুষের বাঁশি বাজানো দেখলাম আবার মানুষের মানবতাও দেখলাম, ক্লান্তিহীন পরিশ্রমও দেখেছি সাভারে। সাধারণ মানুষের সাহায্য-সহযোগিতা না থাকলে আটকে পড়া মানুষগুলোর আর্তনাদ ঢাকা পড়ে যেত নানা দিকের নানা সুরের বাঁশির আওয়াজে। তবে সবাইকে ছাড়িয়ে, সবাইকে পেরিয়ে চ্যানেল আই আর প্রথম আলো ডুগডুগি বাজিয়েছে প্রানভরে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৯:০৩
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×