শুনে আমি আকাশ থেকে পড়লাম! বায়তুলমাল কেন জামায়াতে ইসলামীকে দিতে হবে? বায়তুলমালের অর্থ হলো- বিভিন্ন উৎস হতে অর্জিত ও রাষ্ট্রের কোষাগারে জমাকৃত ধন-সম্পদকেই বায়তুলমাল বলা হয়। ইসলামী রাষ্ট্রের সকল নাগরিকেরই এতে সম্মিলিত মালিকানা রয়েছে।
পরে আমি জামায়াতের বই টি খুঁজে বের করলাম। বইটির নাম ব্যক্তিগত রিপোর্টবই।
বইটির ১৫ নং পাতায় ৫নং লাইনে লেখা আছে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের ইয়ানতই (এককালীন বা মাসিক নিয়মিত সাহায্য) বায়াতুলমালের আয়ের মূল উৎস। তাই আমাদের সকলকেই এ ব্যাপারে আল্লাহর পথে ব্যয়ের আর্থিক কুরবানীর আদর্শ স্থাপনের চেষ্টা করতে হবে।
১৪ এর পাতায় লেখা আছে '' এ খরচ নয়, বরং আল্লাহকে দেয় করয।
একই পাতার ২১ নং পাতায় লেখা আছে এ পথে অর্থ ব্যয় করলে আখিরাতে কি প্রতিদান পাওয়া যাবে তা তাদের কে বুঝিয়ে দিন এবং বলুন যে, খোদার পথে ব্যয় করা মানে তাঁকে সাহায্য করা, আর তার অর্থের এর চেয়ে উৎকৃষ্ট ব্যবহার আর কিছুই হতে পারেনা।
বুঝেন অবস্থা, কি ভাবে মিথ্যা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করে নিজেদের দলে ভিড়ানোর চেষ্ট করছে।
আমি জামায়াতের ধর্ম ব্যবসার নমুনা দেখে অবাক হয়ে গেলাম। কিভাবে সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভুতিকে কাজে লাগিয়ে তারা কোটি কোটি টাকা প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছে। বায়াতুলমাল তুলতে পারে শুধুমাত্র ইসলামীক রাষ্ট্র, এবং ব্যায় হবে রাষ্ট্রিয় কাজে। অথচ সামান্য একটি রাজনৈতিক দল ইসলামের নাম করে বায়তুলমালের নামে নিয়মিত চাঁদাবাজী করছে, এবং নিজেরা ভোগ করছে। এবং তারা বলছে তাদের কে বায়তুলমাল দেওয়া এ খরচ নয়, বরং আল্লাহকে দেয় করয। (এই কথা যদি কেউ বিশ্বাস করে আমি নিশ্চিত তার ঈমান থাকবে না)
আমার বোধগম্য হলো না জামায়াতকে চাঁদা দেওয়া কি করে খোদার পথে ব্যয় করা হয়, কি করে খোদাকে করয দেওয়া হয়। খোদা কি কখনো বান্দার কাছ থেকে করয গ্রহন করে? জামায়াত যে পথে চলছে সেটাকে কি তার খোদার পথ বলতে চায়? পৃথিবীর ১৪০ কোটি মানুষের মধ্যে কয় ভাগ জামায়াত করে? ১৪০ কোটি মানুষের মধ্যে যারা জামায়াত করে করে না তারা কি আল্লাহর পথে নাই?
একজন মুসলিম হিসেবে আমি মনে করি জামায়াত এই কথা দ্বারা ইসলামকে বিকৃত করেছে। সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দিয়েছে। আমি ইসলামীক মতে বায়তুলমালের সংজ্ঞা দিচ্ছি, আর জামায়াত যে সংজ্ঞা দিয়েছে তাও দিচ্ছি, আপানারা মিলিয়ে দেখুন মিথ্যাচারের শ্রেষ্ঠ নমুনা।
ইসলামী মতে বায়াতুলমালঃ- বিভিন্ন উৎস হতে অর্জিত ও রাষ্ট্রের কোষাগারে জমাকৃত ধন-সম্পদকেই বায়তুলমাল বলা হয়। ইসলামী রাষ্ট্রের সকল নাগরিকেরই এতে সম্মিলিত মালিকানা রয়েছে।
জামায়াতের মতে বায়াতুলমালঃ- ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের ইয়ানতই (এককালীন বা মাসিক নিয়মিত সাহায্য) বায়াতুলমালের আয়ের মূল উৎস। তাই আমাদের সকলকেই এ ব্যাপারে আল্লাহর পথে ব্যয়ের আর্থিক কুরবানীর আদর্শ স্থাপনের চেষ্টা করতে হবে।
মজার ব্যপার হলো তাদের বইতে বায়াতুলমাল কিভাবে কোন কাজে ব্যবহার হবে সে ব্যপারে কোন লেখা নাই। আর আয়ের ব্যপারে বলা হয়েছে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের ইয়ানতই (এককালীন বা মাসিক নিয়মিত সাহায্য) বায়াতুলমালের আয়ের মূল উৎস। কি হাস্যকার।
মজার ব্যপার হলো রাষ্ট্র এই চাঁদাবাজীর ব্যপারে নির্বিকার। আমি জানিনা বাংলাদেশের কোর রাজনৈতিক দলের সাধারন মানুষের কাছ থেকে চাঁদা তোলার অধিকার আছে কিনা। (কারো জান থাকলে দয়া করে জানান। আপডেট দিয়ে দেব।)
৭ নং পাতায় লেখা আছে- জিহাদের কাজে আপনি নিজেকে জামায়াতের একজন উজ্জীবিত কর্মী হিসেবে গড়ে তুলুন।
জিহাদ বলতে তারা এখানে কি বুঝিয়েছে? জামায়াতের ক্যাডার দলে যোগদান করা মানেই কি জিহাদী হওয়া? জিহাদ তো জামায়াতের বাপ-দাদার সম্পত্তি নয়। জিহাদ মানে হলো অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। সেটা সব দেশের সব মুসলিমের জন্য প্রজোয্য। তাহলে জিহাদ কি জামায়াতের কর্মি হওয়া ছাড়া করা যাবে না? এটা কি জিহাদের সংজ্ঞাকে বিকৃত করা নয়? জিহাদের সংজ্ঞাকে বিকৃতি করা কি ইসলামের অবমাননা নয়?
আর তার কি জিহাদ করছে? জামায়াত বা ছাত্র শিবির যা করছে তা কি অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করা হচ্ছে নাকি নিজেদের দল ও পকেট ভারী করার জন্য সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভুতিকে কাজে লাগানো হচ্ছে?
জিহাদী বই প্রচার করার কারণে সারা দেশে অনেক জঙ্গিকে গ্রেফতার করতে দেখা যায় কিন্তু একই অপরাধে জামায়াত কেন পার পেয়ে যাচ্ছে। জামায়াতের এই মহিলা কর্মিগুলোকে ধরে জেলে ঢুকানো উচিৎ।
ইসলামের ৫টি মূল স্তম্ভ রয়েছে। এগুলো হল-
* কলেমা
* নামাজ
* রোজা
* হজ্জ্ব
* যাকাত
জামায়াতে ইসলামীর কর্মকান্ডের সাথে ইসলামের মূল স্তম্ভগুলোর কতটুকু যোগসূত্র আছে তা বিচারের ভার আমি প্রিয় পাঠকদের উপর ছেড়ে দিলাম।
জামায়াতের ৩২ পাতার সাধরণ একটি বইতে তাদের ধর্ম ব্যাবসার এই নমুনা গুলো পেলাম। জানিনা তাদের যে আরো বই আছে সেগুলোতে আরো কত কত নমুনা আছে। জামায়াতের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগসহ আরো অনেক অভিযোগ আছে। আমি সেদিকে যেতে চাই না। শুধু এই চোট্র বই থেকে তাদের যে ধর্ম ব্যবসার নমুনা বের হয়ে এসেছে এই গুলোই আমি হজম করতে পারছি না। তাদের আরো ভিতরে প্রবেশ করলে যে কি পাওয়া যাবে শুধু আল্লাহই বলতে পারে।
জামায়াতের ধর্ম ব্যবসার কোন নমুনা আপনাদের কাছে থাকলে দিতে পারেন। প্রয়োজনে আমার পোষ্টে আপডেট করে দেব।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:২৮