নারীবাদ নিয়ে একটা চমৎকার কথা বলেছিলেন আবুল কাশেম ফজলুল হক স্যার। আমাকে দেওয়া একটা সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, "মানবতাবাদ এমন একটা জিনিস, যেটা দিয়ে নারীবাদকে প্রতিস্থাপন করা যায়।" আসলে এটা এমন একটা ব্যাপার, যা বোঝার জন্য খুব বেশি পণ্ডিত, জ্ঞানী হতে হয় না। শুধু নারীবাদ দিয়ে কেবল মানুষের একটা অংশের প্রয়োজন কিছুটা হয়তো সার্ভ করা যায়; তবে এক্ষেত্রে সমস্যা হলো, পুরুষদের প্রয়োজন ও অধিকারের জন্য কথা বলতে গেলে তখন আবার 'পুরুষবাদ"-এর আমদানি করতে হয় বা হবে। পুরুষবাদ বলে বিষয়টা কি সবাই মেনে নেবে? তাই তো, নারীবাদ বা পুরুষবাদ নয়, মানবতাবাদ দিয়েই নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। নারীবাদ'কে মানবতাবাদের পার্ট বলে দেখা তাই একটা আদিখ্যেতা বা বিলাসিতা। যেমন, বিলাসিতা পুরুষবাদকে মানবতার পার্ট হিসেবে দেখা।
আরেকটা ব্যাপার হলো, নারীবাদ কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমন উগ্র ও তীব্র প্রতিক্রিয়াশীল অবস্থায় পৌঁছেছে যে সেখানে এটাকে আর বর্তমানে ভালো কিছু বলা সম্ভব না। নারীবাদ বা নারী-সংক্রান্ত বিষয় অনেকের কাছেই ধর্মের মতো একটা স্পর্শকাতর বিষয় হিসেবে পরিণত হয়েছে। একারণে নারী-সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়েই এইসব নারীবাদের ধ্বজ্জাধারীদের সাথে আপনি একমত না হলে, তারা আপনার প্রতি হেট প্রিচ করতে শুরু করে। যেখানে, ফেসবুকে ব্লক বা আনফ্রেন্ড খুবই মামুলী ব্যাপার। এর অনেক বড় শিকার আমিই। প্রচুর নারীবাদী আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টে ছিলেন বা আছেন। অনেক সময় নারী সংক্রান্ত অনেক বিষয়ে নারীদের স্বপক্ষে কথা বলতে গিয়েও আমি উগ্র নারীবাদীদের আক্রমণের শিকার হয়েছি। কারণ, নারীদের সপক্ষে কথা বললেও তাদের সাথে আমি শতভাগ মন যুগিয়ে মতামত প্রকাশ করতে পারিনি, সেটাই ছিল অপরাধ। অনেকটা উগ্র জাতীয়তাবাদের ধারক বা উগ্র ধার্মিকদের মতো আচরণ তাদের। তাদের সাথে সামান্য কিছু দিক দিয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করলেই তারা আমাকে অপছন্দ করা শুরু করে। যার শেষ হয় ফেসবুকে আনফ্রেন্ড বা ব্লক করে এবং আমার নামে নেতিবাচক প্রচারণা করে।
কাজেই নারীবাদ বর্তমানে যে জায়গায় চলে গিয়েছে এবং যেহেতু এটা শুধু একটা অংশেরই পারপাজ কেবল তথাকথিতভাবে সার্ভ করতে পারে, তাই নারীবাদ জিনিসটাকেই সবার বর্জন করার সময় সমাগত। আমি আশা করতে পারি না যে নারীবাদীরাও বর্তমান দুনিয়ার পুরুষদের সমস্যা বুঝবেন এবং সেই অনুযায়ী তারা এগিয়ে আসবেন। আর এটাও সত্য বর্তমানে পুরুষরাও কম নির্যাতীত হচ্ছেন না। এরকম অজস্র প্রমাণ বর্তমান মিডিয়ায় রয়েছে। যেমন, কেউ পুরুষবাদী হলে নারীদের সমস্যাও তার চোখের আড়ালে রয়ে যাবে। কাজেই হতে হবে, মানবতাবাদী। মানবতাবাদের মাধ্যমেই নারী-পুরুষ সবার সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। কাজ করতে হবে তাই, নারী-পুরুষ সবার প্রয়োজনে ও স্বার্থে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




