somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

John Q.-পিতা পুত্রের ভালোবাসা নিয়ে ভালা লাগার একটি মুভি

০৬ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৩:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিছু অপ্রাসাংগিক কথা দিয়ে শুরু করি। একদম ছোট থেকে আমি নিজের হাতে ভাত খেতে চাইতাম না (অভ্যাসটা এখনো রয়ে গেছে)। আর এই নিয়ে বাবার কি রাগ, মা কেনো আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে? বাবার একটায় অভিযোগ আমি পরনির্ভরশীল হয়ে পরবো। আর বাবা আমার চাইতেন আমি যাতে জীবনের প্রতিটি ধাপে সাবলম্বী হতে পারি। তখন ছোট বলে এই ব্যাপার বুঝতাম না, এখন অনেক বড় হয়েছি। অনেক কিছুই বুঝি, অনেক কিছুই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে শুধু বাবার সাথে আমার দূরত্ব কমেনি। আজকে অনেকদিন পরে একটা মুভি দেখার পর মনে হলো ঈশ আমার বাবা যদি এমন হতেন???



মুভিটির নাম John Q. আমার খুব পছন্দের অভিনেতা Danzel Washington এর অভিনীত এই মুভিতে তার রোল হচ্ছে একজন সন্তান সচেতন বাবার। John Quincy Archibald আর Denise Archibald এর একমাত্র সন্তানের নাম Mike Archibald. বড় হয়ে তার ব্যায়ামাবীর হওয়ার স্বপ্ন। একদিন বেসবল খেলতে গিয়ে দৌড়ানোর সময়ে মুখ থুবরে পড়ে Mike.অভাবে জর্জরিত John কিছু বুঝে উঠার আগেই শুনতে পান তার ছেলের জন্ম থেকেই হার্ট স্বাভাবিকের চেয়ে তিনগুন বড়। আর হার্ট অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে গিয়ে কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা ছাড়া অন্য কোন রাস্তা খোলা নেই। John ইন্সুরেন্স ক্লেইম করতে গিয়ে খবর পান যে তার পরিবারের জন্যে যে ইন্সুরেন্স আছে সেইটা দিয়ে এই রোগের চিকিৎসা সম্ভব নয়। যেইখানে Mike এর চিকিৎসার জন্যে দরকার $250,000 সেখানে John এর ইন্সুরেন্স কাভার করে শুধুমাত্র $20,000. John এর সর্বাত্মক চেষ্টার পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের কোন সাহায্য করতে তো অস্বীকার করেই উলটা Mike কে হাসপাতাল থেকে জোর করে রিলিস করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।উপায়ন্তু না দেখে John হাসপাতালের ডাক্তার নার্স সহ কিছু সাধারণ রোগীকে জিম্মি করে নেয় অস্ত্রে মুখে। সন্তানের জন্যে নিজের হার্ট পর্যন্ত দিতে প্রস্তুত John কি শেষ পর্যন্ত পারে Mike কে বাচাতে?

পিতা পুত্রের মধুর সম্পর্ক নিয়ে অনেক মুভি আছে। কারো কাছে এইটা হয়তো খুব একটা ভালো নাও লাগতে পারে, তবে কিছু অসাধারণ মূহুর্ত আছে যা আপনাকে আচ্ছন্ন করে রাখবে আপনাকে কিছুক্ষণের জন্য হলেও। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে ডায়লগ আরো একটু ভালো হতে পারতো, কিছু কিছু জায়গায় ডায়লগ বেশ দুর্বল মনে হয়েছে। এছাড়া স্ক্রিপ্ট, ডিরেকশান,পিকচারায়জেশান, আমার কাছে সব-ই ভালো লেগেছে। মুভির টেকনিকাল ব্যাপারগুলো আমি ভালো বুঝি না। ঐগুলো আমি আপনাদের সবার উপর ছেড়ে দিলাম।

আরেকটু অপ্রাসাংগিক কথা বলে শেষ করি, একটা সময় পর্যন্ত আমার মনে হত আমার বাবা আমাকে ভালোবাসে না, কিন্তু একদিন আমি বেহুশ হয়ে যাওয়া পরে যখন আমার হুশ আসে তখন দেখতে পায় আমার বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাদছে। সেদিন প্রথম বুঝতে পারলাম ভালোবাসার কথা সবসময় মুখ ফুটে বলতে হয় না, কিছুটা অনুভবেও বুঝে নিতে হয়। একিভাবে আমার মনে হত আমি আমার বাবাকে একদম ভালোবাসি না। কিন্তু চিকিৎসার জন্যে যখন আমার বাবা ইন্ডিয়া গেলো তখন হঠাৎ একদিন রাস্তা দিয়ে হেটে আসার সময় মোটরসাইকেলের হর্ন শুনে মনে হলো আমার বাবার বাইক। পরক্ষণেই আমার মনটা ভারী হয়ে উঠে এই ভেবে যে না জানি আমার বাবা কেমন আছে? সম্পর্ক সে যতই তিক্ত হোক তাকে সুযোগ দেওয়া উচিত। হয়তো আমরা বাপ বেটার সম্পর্ক বন্ধু মত হয়ে উঠেনি কখনোই কিন্তু তার মানে এইটা কিন্তু কখনোই না যে আমরা একে অপরকে ভালোবাসি না। হয়তো বুকে জড়িয়ে ধরে কখনো বাবাকে বলতে পারবও না বাবা তোমাকে অনেক ভালোবাসি, কিন্তু রাতের আধারে বালিশে ভেজা আমার চোখের জল জানে আমি আমার বাবাকে কতখানি ভালোবাসি।
শেষ করার আগে এইটুকু বলতে চাই পৃথিবীর সকল পিতা পুত্রের সম্পর্ক হোক বন্ধু চেয়েও মধুর।

বিঃদ্রঃ আমার এই রিভিউ অনেকের কাছে হয়তো সত্যিকার অর্থে রিভিউ বলতে যা বোঝায় তা মনে নাও হতে পারে, আসলে আমি সেইভাবে লিখতেও চাইনি। আমার উদ্দেশ্য পিতা পুত্রের সম্পর্ককে আমাদের নিজেদের মত করে দেখাতে। এই মুভির কাজটি অনেকাংশে সঝজ করে দিলো। ভালো থাকেন সবাই, সবসময়।
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×