কুরআন শরীফ একেবারে নাযিল হয়নি , বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন আয়াত নাযিল হয়েছিলো । এক্ই সাথে বিভিন্ন বড় বড় সুরার বিভিন্ন আয়াত নাযিল হতো , পরে জিব্রাঈল (আাঃ) মহানবী (আঃ) কে বলে দিতেন কোন আয়াত কোন সূরাতে যাবে । তাই মহানবী (সাঃ) ও জানতেন না কখন কোন সূরার কোন আয়াত নাযিল হচ্ছে ।
কুরআনের সবচেয়ে বড় সূরা হলো সূরা বাকারা । এ্ই সূরার আয়াত সংখ্যা হলো ২৮৬ । সূতরাং ১ থেকে ২৮৬ নম্বর আয়াতের মধ্যবর্তী আয়াত সংখ্যা হলো ১৪৩ নম্বর আয়াত ।
আমরা অনেকেই জানি আল্লাহ সুবহানাতায়ালা কুরআনে বলেছেন তিনি মুসলমানদের মধ্যবর্তী জাতি হিসেবে তৈরী করেছেন । যেখানে ইহুদীরা হলো চরম ঘাড় ত্যাড়া জাতি আর খ্রীষ্টানরা হলো উদাসীন । ইহুদীদের কথা হলো তাড়াই একমাত্র আল্লাহর পছন্দনীয় জাতি, নবী রাসূল অন্য কোন জাতি থেকে আসতে পারেনা এবং তারাই দুনিয়া শাসন করবে । তারাই একমাত্র বেহেশ্তে যাবে । আর খ্রীষ্টানরা ধর্ম কর্ম নিয়ে এত মাথা ঘামায় না, খুবই উদার । তারা মনে করে ঈসা (আঃ) তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য জীবন দিয়ে গেছেন । সুতরাং যতই পাপ করি না কেন কোন সমস্যা নাই , সব মাফ । তারা ঈসা (আঃ) হাত ধরে বেহেশ্তে চলে যাবে । অন্যদিকে আমরা মুসলমানগণ মাঝখানে আছি । ইহুদীদের মত এরকম গোড়া মনোভাব পোষণ করিনা আবার খ্রীষ্টানদের মত এরকম উদারও না । আমাদের বিশ্বাস হলো আমাদের পাপ পূণ্যের হিসাব আল্লাহ কাছে দিতে হবে এবং আল্লাহর রহমতে মাফ পেয়ে ইনাশাল্লাহ আমরা বেহেশ্তে যাব । সুতরাং সেই হিসেবে আমরা হলাম মধ্যবর্তী জাতি ।
আমরা যে মধ্যবর্তী জাতি এই কথাটা আল্লাহ পাক সূরা বাকারাতে উল্লেখ করেছেন এবং উল্লেখ করেছেন সূরা বাকারার মধ্যবর্তী আয়াতে ।
"এমনিভাবে আমি তোমাদেরকে মধ্যপন্থী সম্প্রদায় করেছি যাতে করে তোমরা সাক্ষ্যদাতা হও মানবমন্ডলীর জন্যে এবং যাতে রসূল সাক্ষ্যদাতা হন তোমাদের জন্য। "
========================================================================
সূরা বাকারায় আল্লাহ বণী ইসরাঈলদের বলছেন যে,
'হে বনী-ইসরাঈলগণ, তোমরা স্মরণ কর আমার সে অনুগ্রহ যা আমি তোমাদের প্রতি করেছি এবং তোমরা পূরণ কর আমার সাথে কৃত প্রতিজ্ঞা, তাহলে আমি তোমাদেরকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ করব। আর ভয় কর আমাকেই।
তোমরা কি মানুষকে সৎকর্মের নির্দেশ দাও এবং নিজেরা নিজেদেরকে ভূলে যাও, অথচ তোমরা কিতাব পাঠ কর? তবুও কি তোমরা চিন্তা কর না?'
বণী ইসরাঈলদের মধ্যে কিতাব ছিলো এবং জ্ঞান ছিলো- তারপরেও তারা পথভ্রষ্ট হয়ে গেল -, কারণ তারা তাদের জ্ঞান নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করে নাই । তারা কিতাব পড়ত কিন্তু চলত তাদের মন মত । যার ফলে তারা অভিশপ্ত হয়ে গেল । আমাদেরকে আল্লাহ কুরআন ও হাদীস দিয়েছেন । কিতাব ও জ্ঞান । আমরাও যদি তাদের মত কুরআন ও হাদিস পড়ি আর বাস্তব জীবনে প্রয়োগ না করি তাহলে আমাদের অবস্হাও তাই হবে এবং হচ্ছে ।
সূরা বাকারা খুবই বরকতময় সূরা । এই সূরা পড়লে বা শুনলে সাথে সাথে আল্লাহর রহমত নাযিল হয় । আমাদের উচিত প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার হলেও সূরা বাকারা পড়া এবং শুনা । আল্লাহ আমাদের উপর রহম করুন । আমিন ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৩