সূরা বাকারার ১৮৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন যে, তোমরা যখন সফরে থাক বা অসুস্হ হও তখন রোজার মাসের সেই রোজা গুলো না রেখে হয় তোমরা কোন মিসকীনকে সেই পরিমাণ দিন তাদেরকে খাইয়ে দাও অথবা পরে যখন সুস্হ হও বা সফর থেকে ফিরে আসো তখন রোজা গুলো রাখতে পার । তবে তোমাদের জন্য রোজা রাখা উত্তম - যদি তোমরা জানতে রোজা রাখার কি উপকারিতা !
সুতরা আল্লাহ বলছেন যে, আমরা যদি জানি রোজা রাখার উপকারিতা জানি তাহলে আমরা রোজাই রাখতাম - মিসকীনকে খাওয়ানো থেকে আমরা কষ্ট করে রোজা রাখাই পছন্দ করতাম । অবশ্য আমরা যদি দুটোই করি তাহলে অবশ্য আরো ভালো ।
আমরা প্রকৃতপক্ষে রোজার কি উপকারিতা তা জানি না । যদি জানতাম তাহলে আমরা বেশী করে রোজাই রাখতাম ।
ঠিক তাই হচ্ছে -
পাশ্চাত্যে আলোড়ণ সৃষ্টি হয়ে যখন গিয়েছে জাপানী গবেষক রোজার উপকারিতা উপর গবেষণা করে নোবেল প্রাইজ পেলেন ।
পাষ্চাত্য বিশ্বে যারা রোজা রাখার বা না খেয়ে থাকার উপকারিতা জানতে পারলেন তারা বেশীদিন বাচার জন্য এবং শরীরকে সুস্হ রাখার জন্য এখন রোজা রাখার প্রতিযোগিতা শুরু করেছে ।
২০১৬ জাপানী গবেষক গবেষণা করে দেখলেন যে, আমরা যখন না খেয়ে থাকি , ১২- ১৪ ঘন্টা পর শরীরের সেলগুলো শরীর থেকে পুরানো বা অসুস্হ সেলগুলোকে পরিস্কার করার কাজ শুরু করে এবং তাদের থেকে যতটুকু সম্ভব এনার্জি সম্ভব সংগ্রহ করে । আরে যেটা হয়- নতুন সেল তৈরী করার প্রক্রিয়া শুর করে । না খেয়ে থাকলে যেহেতু শরীরে কোন খাবার প্রবেশ করে না তখন শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো বিশ্রাম পায় - যেমন কিডনী, পাকস্হলী এবং লিভার । এই অবসর সময়ে তারা মনযোগ দেয় পুরোনো এবং অসুস্হ সেলগুলোকে পরিস্কার করার কাজে । যেগুলো পুরোপুরো বাতিল সেগুলোকে খেয়ে ফেলে আর যেগুলো থেকে কিছু অংশ পুনরূদ্ধার করা সম্ভব সেগুলো থেকে সেই অংশটুকু কাজে লাগিয়ে এনার্জি সংগ্রহ করা হয় এবং বাকী অংশ খেয়ে ফেলে শেষ করে ফেলা হয় ।
সুতরাং রোজা রাখলে আপনার শরীরের বাতিল সেলগুলো দূর হয়ে যায় এবং নতুন সেল তৈরী হয়ে আপনি হয়ে উঠেন ফ্রেস বা নতুন দেহ গঠিত হয় ।
এরূপ প্রক্রিয়া না হওয়ার কারণে পুরোনো কোষ জমা হয়ে হয়ে শরীরে বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি তৈরী হয় । যেমনঃ আল-জেইমার্স, ডিমেন্টসিয়া, ক্যান্সার এবং ডাইবেটিস রোগ এই সব রোগ শরীরে বাসা বাধে । সুতরাং এরকম বিনা পয়সায় রোগ নিরাময় কেনা পছন্দ করবে ।
আমাদের শরীর একটা ঘরের মতনই । তাকে নিয়মিত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হয় । ময়লা-আবর্জনাযুক্ত ঘরে থাকলে যেমন আমরা এমনিতেই অসুস্হ হয়ে যাই তেমনি শরীর নামক ঘরের পরিস্কার পরিচ্ছ্ন্ন হওয়ার উপায় হলো রোজা রাখা । বছরে আমরা যখন একমাস রোজা রাখি শরীর তখন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হওয়ার কাজ করে । আল্লাহ সুবহানাতায়লা আমাদের রোজা দিয়েছেন যেন আমরা আল্লাহর জন্য রোজা রাখি, না খেয়ে থাকার কষ্ট বুঝি , গরীব মানুষের দুঃখ উপলব্ধি করতে পারি আর সাথে সাথে যখন আল্লাহর ভয়ে না খেয়ে থাকি তখন আল্লাহ ভীতি মনে জাগ্রত হয় - হ্যা আল্লাহ আছেন । তিনি দেখছেন , আর কেউ না দেখলেও আল্লাহ অবশ্যই দেখছেন । ফলে আমরা গোপনে খেয়ে ফেলিনা । এই ভীতিটা যদি সব সময় থাকে তাহলে আমরা অন্য পাপ কাজ থেকেও নিজেকে দূরে রাখি- যে আল্লাহ সব কিছু দেখেন । এটাই রোজা রাখার মূল উদ্দেশ্য । নিজেদের মধ্যে তাকওয়া বা আল্লাহ ভীতি জাগ্রত করা ।
সুতরাং মাবুদ যে বলেছেন কুরআনে যদি তোমরা রোজার উপকারিতা জানতে - রোজা রাখাই তোমাদের জন্য উত্তম । আজকে চিকিৎসা বিজ্ঞান সেটাই প্রমাণ করল এবং যারা উপকারিতা জানে তারা খূশী মনে রোজা রাখে ।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩০