সব কিছু যেনো স্হবির হয়ে আছে, কোথাও কোনো কিছু ঠিক মতো চলছে না, একটা বিপদ আসন্ন মনে হচ্ছে, মনে হচ্ছে সব কিছু ধুমড়ে মুছরে আছড়ে ভেঙ্গে পড়বে, আর মারা পড়বে লক্ষাধিক মানুষ, এমনিতেই তো কত মানুষ মারা পড়ছে, ইঞ্জিন চালিত নৌকায় চড়ে বিদেশ পাড়ি দিতে গিয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে, ধর্ষণের পরে হাত পা বেধে মেরে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে, অনন্ত নামের ব্লগার কেবল নিজের স্বাধীন মত প্রকাশ করার অজুহাতে তাকে জীবন দিতে হলো, নেপালে ভূমিকম্পে হাজারে বিজারে মানুষ মারা যাচ্ছে, এমনিতে রোগ-শোকে ভোগেও মানুষ মারা যাচ্ছে, পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে মারা যাচ্ছে দুর্বুত্তরা, দুর্যোগে পড়ে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা মারা পড়ছে দেদারসে, রাজনৈতিক কোন্দলে পড়ে মানুষ মারা পড়ছে, নিজ দলের হাতে পড়ে শুধুমাত্র ক্ষমতার লড়াইয়ে টিকে থাকতে মারা পড়ছে বেঘোরে, এতো গেলো শুধু মারা যাওয়ার হিসাব, তারপর আসি নারী কিংবা মেয়েদের সভ্রমহানির বিষয় নিয়ে…..না, এটা লেখার দরকার নেই, কেননা কোনো কিছুই লিখে এখন আর বিচার পাওয়া যায় না। বরং বিচার চাইতে গিয়ে লাঞ্চিত হতে হচ্ছে অসহায় মানুষদের। তাই তারা আর বিচারও চাই না, শুধু লাশটা ঠিকঠাকমতো দাফন করার জন্য তারা লাশ টা চাই। এই হলো বর্তমান অবস্হা।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আইন ও শালিস কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল – নিজেই বলেন যে দেশের ৯৯ ভাগ মানুষ মনে করেন যে দেশে কোনো ন্যায় বিচার নেই, দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিরাই ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অন্তরায়। অথচ ন্যায় বিচারের প্রত্যাশা সব মানুষেরই। মানবাধিকার ফোরাম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এক কথা বলেন। অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল আরও বলেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিতহলেই কেবলমাত্র সে দেশের মানুষ পূর্র্ণাঙ্গ স্বাধীনতা ভোগ করবেন। দেশের মানুষের মধ্যে শান্তি বিরাজ করবে। অন্যাথায় স্হবিরতা দেখা যাবে প্রতিটি ক্ষেত্রে। মানুষ তাদের উৎসাহ উদ্দীপনা হারিয়ে ফেলবে।
এই যে নির্বাচন গেলো, মনে হয় না এই নির্বাচনে মানুষের মাঝে কোন উৎসাহ ছিলো, যারা দলীয় কর্মী কেবল তারাই এই ভোটাভুটিতে অংশগ্রহণ করেছে, আর চলেছে টাকার খেলা। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী যেভাবে নির্বাচনী ছক করা হয়েছে ঠিক সেইভাবেই নির্বাচন হয়েছে, তাদের দলীয় প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছে। বিএনপি বা জাতীয় পার্টি একপ্রকার মরে আছে বলেই মনে হয়, এদের হাতে কোনো ইস্যু নেই তাছাড়া কিইবা আর আন্দোলন করবে? কার জন্য আন্দোলন করবে, সরকার যেভাবে দলীয় নেতা কর্মীদের জেলে পুরে রেখেছেন তাতে তাদের আন্দোলন আর না করায় ভালো, তাতে কিছু বিএনপি কর্মী অন্তত জেলখানা থেকে দূরে আছেন।
একদা কাদের সিদ্দিকী বলেছিলেন, একজন প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা করতে পারেন না। কিন্তু এমন দিন আসতে পারে যেদিন সংবিধানের এমন লঙ্ঘনের দায়ে আপনার ফাঁসিও হতে পারে। এতো গেলো কাদের সিদ্দিকীর কথা যারা রাতে এক কথা বলে আবার দিনে আরেক কথা বলে, তাই কারো কথাকেই গুরুত্ব দিই না, নিজের মতো করে চলার চেষ্টা করি। তবে অন্যায় দেখলে অবশ্যই আওয়াজ করবো, বিচারের জন্য অবশ্যই এগিয়ে যাবো…দেশে কত বিচার যে আটকে আছে, সেই সাগর-রুণী থেকে শুরু করে সর্বশেষ অনন্ত দাসের হত্যাকারীদের বিচার এখনো হয়নি, হবে তবে সময় লাগবে..আমরা সকলে একত্রিত না হলে কিভাবে জোর কন্ঠে বলবো অনন্ত দাসের বিচার কার্য শুরু করুন এখনই।
আজ এই পূর্যন্ত আগামীতে আবারও দেখা হবে, সেই পূর্যন্ত মরি কিংবা বাচিঁ, ব্লগার হত্যার বিচার ছাড়া আমরা এক চুল ও লড়বো না, কেননা আমরা সকলেই ব্লগার। শুভ ব্লগিং।