আগের পর্বের জন্যঃ Click This Link
প্রথম পর্বের জন্যঃ Click This Link
আপনি কি জানেন স্থানীয় বাজারে চামড়া-জাত পণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি ক্রেতা কারা?
ভাবতে থাকুন? পরের পর্বে আমি উত্তর দিব। মনে হয় অনেকেই উত্তর শুনে অনেকেই খানিকটা বিস্মিত হবেন!
এবার আমরা যে বিষয় নিয়ে আলাপ করব সেটা হচ্ছে স্থানীয় বাজারে চামড়া ও চামড়া-জাত পণ্যের চাহিদা:
একসময়ে দেশের অভ্যান্তরে কনজ্যুমার মার্কেটের একচেটিয়া অধিকার ধরে রেখেছিল বিশ্বখ্যাত জুতা তৈয়ারি কোম্পানি ‘বাটা’। নথিতে দেখা যায় বাটা শু কোম্পানি পূর্ববঙ্গে তাদের যাত্রা শুরু করেছিল ১৯৬২ সালে। পাকিস্তানে ১৯৫১ সালে- আর ভারতে শুরু করে ১৯৩১ সালে।
২০১৩ সালে নাকি ওরা ৩৬ মিলিয়ন জোড়া জুতা তৈরি করেছিল। তার মানে আমাদের জনসংখ্যা অনুপাতে প্রায় প্রতি পাঁচজনের একজনের জুতা তৈরি করেছিল তারা।
তারা বলছে তাদের টঙ্গী ও ধামরাইয়ে অবস্থিত ফ্যাক্টরিতে প্রতিদিন গড়ে ১৬০০০০ জোড়া জুতা উৎপাদন করতে সক্ষম। কিন্তু সক্ষমতা আর উৎপাদনের মুল চিত্র; আসলেই কি এক?
আমাদের আগের জেনারেশন ও তার আগের জেনারেশনের চামড়ার জুতার মুল ভরসার জায়গা ছিল ‘বাটা’। বাটার একটা স্যান্ডেল বা জুতা পরে ২/৪/১০ বছর কাটিয়ে দেয়া কোন ব্যাপারই ছিল না! বাটার একটা স্যন্ডেল বা জুতা কেনা মানে সেটা পরে চোখ বন্ধ করে হাটে মাঠে ঘাটে ঘুরে বেড়ানো! বাটার আরেক নাম ছিল’ অ-ক্ষয় কোম্পানি’। একটা কোম্পানির কতটা প্রভাব বিস্তার করলে এমন নাম কিনতে পারে এখন ভাবার বিষয়!
একসময় আধুনিকতার সাথে তাল মেলাতে গিয়ে- ও অধিক মুনাফার আশায়, তারা তাদের ব্যবসার ধারায় আনে আমূল পরিবর্তন। ক্যানভাসের জুতা, রাবারের স্যন্ডেল ও জুতা, কেডস সহ অন্যান্য আধুনিক উপকরণের তৈরি এসব প্রোডাক্ট দিয়ে তারা দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার আরও ভালভাবে দখল করে নেয়। কোন এক সময়ে মুদির দোকানে বাটার জুতা স্যান্ডেল বিক্রি হত। মূল্যের শেষের অংশটা সবার দারুক আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল .৯৯ পয়সা মানে এক পয়সা ফেরত দেয়া। পরে সেটা .৫০ পয়সা হলে মানুষের মনে এখনো গেঁথে আছে .৯৯ পয়সা।
নব্বুইয়ের দশকের শেষভাগের আগে বাটার ব্যবসা ছিল অনেকটা এক চাটিয়া। কিন্তু চাহিদার হার বৃদ্ধির পাশাপাশি বাটার পণ্যের গুনগত মান কমতে থাকে। এরপরে বাজারে আসে এপেক্স- ১৯৯৭ সালে এপেক্স পরীক্ষা মুলকভাবে তাদের স্টক লট ও টেকনিক্যালি রিজেক্টেড জুতা দিয়ে দেশের বাজারে খুচরা বিক্রি শুরু করে।
পরবর্তীতে এপেক্স-ই বাটার মুল প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়ায়। এপেক্সের দেখা দেখি আরও কিছু ট্যানারি, ফ্যাক্টরি ও কর্পোরেট কোম্পানি দেশের বাজারে চামড়া ও কৃত্রিম চামড়া-জাত পণ্য নিয়ে আসলেও এখনো পর্যন্ত এপেক্সের ধারে কাছে কেউ যেতে পারেনি। এর মধ্যে ইটালিয়ান ব্রান্ড ‘লোটো’র বাংলাদেশী ভার্সন ব্যবসা শুরু করে অন্যান্য ফ্যাশন আইটেমের পাশাপাশি চামড়া-জাত পণ্য নিয়ে বেশ খানিকটা এগিয়েছে। আড়ং ও চেষ্টা করে যাচ্ছে- চামড়া-জাত পণ্য নিয়ে কিন্তু তাদের এত শত আইটেমের ভিড়ে চামড়া-জাত পণ্যটা সবসময় আড়ালেই থেকে যাচ্ছে।
পিছিয়ে পড়ছে ‘বাটা’- তাদের পণ্যের সুনাম ও চাহিদা দুটোই কমে গেছে। উচ্চবিত্ত তাদের ছেড়েছে অনেক আগে, মধ্যবিত্ত ও যেন তাদের বলয় থেকে বের হতে চাইছে।
ওদিকে বাটা তাদের ব্যবসা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের চেষ্টা করার পরেও দিনের পর দিন পিছিয়ে পড়ছে।ওদিকে এপেক্স ও তাদের সুনাম হারাচ্ছে!
আসুন এর পেছনের মুল কারণগুলো খুজিঃ
আধুনিকতার নামে নিন্মমানের মাল: বাটা’র প্রতিদিন যে ১৬০০০০ পেয়ার জুতার উৎপাদন ক্ষমতা প্রতিদিন উল্লেখ করেছে। তার কত-ভাগ তারা নিজেরা সত্যকারে উৎপাদন করে? এর মধ্যে চামড়া-জাত পণ্য কত-ভাগ?
তাদের ভিন্ন ভিন্ন নামের ব্রান্ড Bata Comfit, Marie Claire, Hush Puppies, Scholl, Nike, Skechers, Power, North Star, Bubblegummers, Ben10, Sandak, Weinbrenne-সহ আরও অনেক-দৃষ্টি নন্দন আর মন ভোলানো নামের এই বাহারি পণ্য গুলোর কত-ভাগ চামড়া দিয়ে তৈরি, কত-ভাগ রাবার, ক্যানভাস, পিউ, ভক্স লেদার এটা জানা বেশ কষ্টের। তবে এই প্রডাক্টগুলোর ক্ষুদ্র একটা অংশই তারা নিজেরা উৎপাদন করে সেটা আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি। এখন বাটা তাদের সব প্রডাক্টের ১০ ভাগ ও জেনুইন চামড়া দিয়ে করে না।
এসব প্রডাক্টের এর একটা বড় অংশ আসে চায়না ও থাইল্যান্ড থেকে- যার বেশীর ভাগই হচ্ছে নন লেদার আইটেম। কিন্তু দেখতে হুবহু চামড়ার মত( কোথাও কোথাও একটু খানি চামড়া থাকে)- যা না বুঝে কিনে মানুষ দিনের পর দিন ধোঁকা খাচ্ছে। আর রিয়েল চামড়ার পণ্যের মূল্য থাকে আকাশ ছোঁয়া। আমার কেন যেন মনে হয় তারা চায় শতভাগ চামড়া-জাত পণ্য থেকে তারা বের হয়ে আসতে।
এরপরে আছে তাদের লোকাল সোর্সিং – বাটা তাদের চামড়া-জাত পণ্যের বড় একটা অংশ নেয় লোকাল সোর্সিং থেকে। কুটির শিল্প ও মাঝারি মানের ফ্যাক্টরিগুলো থেকে তারা তাদের পছন্দ অনুযায়ী পণ্য তৈরি করে নেয়। নিজেরা উৎপাদনের থেকে এই সোর্সিং এ ইনভেস্ট কম ও লাভ বেশী থাকে বিধায় তাদের নজর এদিকে বেশি।
এটা দেশীয় শিল্পের জন্য নিঃসন্দেহে ভাল একটা দিক। কিন্তু দক্ষতা, কারিগরি জ্ঞান, মেশিনারিজের অভাব, পুঁজির স্বল্পতা ও সর্বোপরি শিক্ষা দীক্ষার অভাবের জন্য এই শিল্পের উদ্যোক্তারা এগোতে পারছে না( এই নিয়ে আমি বিশদ আলোচনা করব পরের একটি পর্বে।)
ওদিকে ‘বাটা’ সুযোগ বুঝে এদের ঘাড়ে কাঁঠাল ভেঙ্গে খাচ্ছে। একটা পণ্য ডেলিভারি দেবার পর নুন্যতম তিন মাসের আগে তারা পাওনা পরিশোধ করে না। তার পরেও বিল পেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। যে কারণে ক্ষুদ্র কারখানার মালিকরা ধার দেনা করে তাদের পণ্য তৈরির ধারা ধরে রাখতে গিয়ে আরও বেশী সমস্যার সম্মুখীন হয়। তারা বেশি বেশী লাভের আশায়( যেটা আমাদের সবার মজ্জাগত অভ্যাস) নিন্ম-মানের কাঁচামাল ও এক্সেসরিজ ব্যাবহার করে। ( সাপ্লাইয়ার দের সাথে বাটার একটা অলিখিত এগ্রিমেন্ট থাকে: তারা সিম্পলের সাথে মিল রেখে মাল বুঝে নিবে- কিন্তু কাস্টমার যদি কোয়ালিটির জন্য সেই মাল ফিরিয়ে দেয় তবে সেই মাল তারা ফেরত দিবে না তবে মালের দাম তারা বিল থেকে কেটে নিবে। তবে সেটার নির্দিষ্ট কোন সময় নেই। এইসব রিজেক্টেড মাল বাটা সম্ভবত ডিসকাউন্ট ‘সেল’এ দেয়)।
বাটা নিজেরা মূলত তৈরি করে( সম্ভবত) টিপিএ,রাবার,পিউ সোলের অটো-মেশিনের কিছু জুতা,রাবারের স্যান্ডেল ও কিছু চামড়ার জুতা স্যান্ডেল।
একই কাজটা শুধু ‘বাটা’ করছে বলে ভাববার কোন কারন নেই। লোকাল ব্রান্ডের প্রায় সবাই করছে। ‘বাটা’ তাও তো একসময় সাপ্লাইয়ারদের টাকা দেয়- এরা আরও বেশী গড়িমসি করে।
এপেক্স,লোটো থেকে শুরু করে প্রায় প্রত্যেকটা ব্রান্ড তাদের পণ্যের একটা বড় অংশ চায়না থেকে আমদানি করে কিংবা লোকাল সোর্সিং করে। আর আড়ং সম্ভবত পুরোটাই লোকাল সোর্সিং করে( তবে তারা দেশী শিল্পের বিকাশে কিছুটা নমনীয়। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ে- এবং লাভ তুলনামুলকভাবে কম করে। তবে এদের সাথে ব্যাবসার প্যারা অন্যখানে-সে বিষয়গুলো এর সাথে যায় না দেখে আলোচনে উহ্য রাখছি।)
• যদি বেঁচে থাকি আর সুযোগ পাই তবে আমার ‘বাঙ্গালীর ব্যবসা’ নিয়ে একটা সিরিজ লেখার ইচ্ছে আছে। সেখানে সবাইকে নিয়েই ডিটেল লেখা হবে- আপনারাও সহযোগিতা করবেন আশা রাখছি।
চামড়া শিল্পে এই পর্যায়ে আছে ভারতের আগ্রাসন! আমাদের স্থানীর চামড়া শিল্পের দৈন্যতার সুযোগ নিয়ে একশ্রেণীর মুনাফা-লোভী ব্যবসায়ীদের প্রচেষ্টায় ভারতের চামড়া-জাত পণ্য দেশীয় বাজার দখল করে নিচ্ছে ধীরে ধীরে। ওই সকল ব্র্যান্ড ও ইদানীং ঝুঁকছে ভারতীয় চামড়া পণ্যের দিকে।
এবার এ ব্যাপারটা একটু তলিয়ে দেখি;
ভারতে বার্ষিক র হাইড( কাঁচা চামড়া) উৎপাদন হয় কমবেশি ১৮০ মিলিয়ন পিস( ধরে নিই দুই লক্ষ কোটি স্কয়ার ফিট)। দেশের চাহিদা মিটিয়ে তারা ৩০-৪০ ভাগ পর্যন্ত রপ্তানি করে। সারা বিশ্বের প্রায় ১৩ ভাগ চামড়া ও চামড়া-জাত পণ্যের চাহিদা মেটায় ভারত।
এটা হল তাদের মৌলিক চিত্র। খতিয়ে দেখুনতো এর কত ভাগ তারা বিক্রি করে বিশ্বের নামি দামি ব্র্যান্ড হাউসগুলোর কাছে। ওদের জনসংখ্যা ১৩৫ কোটি- সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ওদের কোটি কোটি প্রবাসী শ্রমিক। অনেক বাঙ্গালী যেমন দুবাই গিয়ে ‘আবুল বিড়ির’ খোজ করে। তেমনি ভারতীয়রা খোঁজে ভারতীয় মাল।
জাতীয়তা-বোধ ওদের আমাদের থেকে বেশী থাকায় ওরা আমাদের থেকে বেশী স্বদেশীয় পণ্য খোঁজে। নিজের দেশের পণ্য হলেই সই- কোয়ালিটি আর ফ্যাশন নিয়ে খুব কম মানুষই মাথা ঘামায়। কিন্তু ভারতীয়দের একদম ছোট করে দেখলে হবে না- ওদের কিছু কিছু পণ্যের গুনগত মান অবশ্যই অতি উচ্চ।
ভারতে তবুও ব্যাক ওয়ার্ড লিঙ্কেজ গড়ে উঠেছে- দিন দিন আমদানি নির্ভরতা অনেক কমেছে। বড় বড় ইনভেস্টমেন্ট আসছে- বিশ্বের নামী দামী কোম্পানিগুলো চামড়া শিল্পের জন্য তাদের বাংলাদেশের থেকেও অনেকগুণ বেশী। পরিবেশ দূষণের দিকটা দেখেও না দেখার ভান করছে। ব্যবসা হারানোর ভয়ে তারা উচ্চবাচ্য করছে না।আর ভারত এই সুযোগে তাদের আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে- আর তাদের সেই পথ সহজ করে দিচ্ছে শুধু মুনাফা আর মুনাফা অন্য কোন উদ্দেশ্য নেই তেমন আদর্শহীন কিছু ব্যবসায়ী।
আমাদের দেশের চামড়া প্রসেস করার কেমিক্যাল প্রায় পুরোটা আসে অন্য দেশ থেকে। আর ভারত নিজের উৎপাদিত কেমিক্যাল দিয়েই চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে( আমার ধারনা ৬০-৭০ ভাগ) তাদের কেমিক্যাল যেমন সস্তা তেমনই নিচু-মানের। চামড়া প্রক্রিয়াজাতের সবচেয়ে বড় খরচ এর কেমিক্যালের। সেখানে ভারত এগিয়ে থাকে। তেমনি কলকাতা বাদে আর কোথাও সম্ভবত স্পেশাল জোনে চামড়া প্রক্রিয়াজাত হয় না। ভারতের সবচে বেশি চামড়া প্রক্রিয়াজাত হয় ভেলরে।অটো সেমি অটো ও ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে অতি সস্তা মজুরীতে ( যেটা আমাদের মজুরী থেকেও কম) তারা চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে।
এবার আসি ভারতীয়দের কম মূল্যে চামড়া-জাত পণ্য তৈরির কিছু কৌশল: এখানে আমি বেশি কিছু বলব না পাঠক বুঝে নিবেন।
আমি এক মাড়োয়ারি ব্যবসায়ীর কথা বলছি; কলকাতায় তার নিজস্ব ট্যানারি আছে। বিভিন্ন মান ও দামের চামড়া উৎপাদন হয় সেখানে। টি আর, স্টক লট আর দেশীয় সস্তা কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি চামড়া সে বাইরে বিক্রি করে না। তাই দিয়ে পন্য বানিয়ে সে কিছু অংশ দেশের বাজারে আর বাকিটা ভারতীয়দের মাধ্যমে দেশের বাইরে পাঠায়( দাম বেশ সস্তা-তাই চাহিদাও বেশী)।
তিনি তার ফ্যাক্টরিতে এমন কিছু মেশিনারিজ ও প্রযুক্তি যুক্ত করেছেন, যা ক্ষুদ্র ও মাঝারী কারখানার উদ্যোক্তাদের জন্য সপ্নের। প্রথমে তিনি নিজের ফ্যাক্টরিতে বায়ারদের চাহিদা অনুযায়ী স্যাম্পল তৈরি করে অর্ডার সংগ্রহ করেন। তারপরে সেই অর্ডার অনুযায়ী চামড়া, কাঁচামাল, এক্সেসরিজ সংগ্রহ করে অটো ডাই ও লেজার দিয়ে চামড়া কেটে আলাদা আলাদা সেক্টরে ভাগ করেন। এরপরে ডাকেন ফড়িয়া দালাল ও ছোট ফ্যাক্টরির মালিকদের। পন্যের মান ও ডেলিভারির সময় অনুযায়ী কমপ্লিট প্রোডাক্ট তৈরি করার জন্য নিলামে তোলেন। নিলামে যার মুল্য সবচেয়ে কম থাকে তাকে তিনি অর্ডার দেন। যেহেতু সবার সব মেশিন আর এক্সপার্ট নেই সেই সহযোগীতাগুলো তিনি নিজে করেন- যার ফলে পন্য কপি হওয়ার সম্ভাবনা ও প্রোডাকশন কষ্ট দুটোই কমে যায়।
সেই ফড়িয়া ও দালারেরা পশ্চিম বংগ, রাজস্থান, বিহার সহ অতি দরিদ্র অঞ্চলে ক্ষুদ্র ফ্যাক্টরির মালিকদের কাছ থেকে অতি কম মুল্যে মাল তৈর করে মুল কোম্পানীকে বুঝিয়ে দেন।
এখন ব্যাবসাটা বোঝেন?
বাংলাদেশে ভারত থেকে স্থল বন্দর দিয়ে চামড়াজাত পন্য ঢোকে তার কোয়ান্টিটি, মান ও দামের উপর নির্ধারন করা শুল্কে নয়। কেজি দরে!!!! এক কেজি চামড়ার মানিব্যাগ বা এস এল জি ( Small Leather Goods) পন্যেরশুল্ক নাকি ৩৫০ টাকা! বেল্টের শুধু চামড়াজাত অংশটুকু আনা হয়। এর মেটাল ও অন্যান্য ভারি এক্সেসরিজ আনা হয় অন্য উপায়ে- বেশীরভাগ চায়না থেকে। তারপরে এখানে সংযোজন হয়।
সেই পন্য গুলোই নামী ব্রান্ডেরা বিক্রি করে কখনো মেরি ক্লেয়ার, কখনো এম্বাসেডর কিংবা নিনো রসি বা ভেনচুরা নামে মনভোলানো নামে আর দামি মোড়কে কয়েকগুণ দামে। এখানে অনেক বিক্রেতারাও জানে না সেটা ভারতীয় পন্য!
ভাবুন একবার চামড়া ও চামড়াজাত পন্যের এই ভয়ঙ্কর দুঃসময়ে আমাদের ব্যাবসায়ী ও নীতিনির্ধারকের ভুমিকা নিয়ে? কিভাবে এই দ্বীতিয় বৃহত্তম রপ্তানী খাতকে প্রায় ধ্বংসের দারপ্রান্তে এনে স্থানীয় বাজারকেও আমরা ধ্বংস করার খেলায় মেতেছি।
ব্লু ওয়েট চামড়া রপ্তানির সরকারি সিদ্ধান্তের পরে;
ব্লু ওয়েট চামড়া রপ্তানী করা হলে দেশীয় চামড়া শিল্পে চামড়া ঘাটতি পড়তে পারে এই বিষয়ে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বাণিজ্যমন্ত্রী মুন্সী সিদ্ধান্তটি পর্যালোচনা করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
"এরপরে কি হয় দেখতে দিন. তিনি বলেন, আমরা যদি স্থানীয় শিল্পের উপর নেতিবাচক প্রভাব দেখতে পাই তবে আমরা রফতানি কমিয়ে দেবো।
সরকারের সিদ্ধান্তকে রক্ষা করে তিনি বলেছিলেন: “এটা নয় যে আমরা রফতানি করতে খুব আগ্রহী। আমাদের লক্ষ্য মানুষের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা ”
তার এই পর্যালোচনার ফল জানার অপেক্ষায় আমি আছি- আপনারা কি করবেন?
* পরের পর্বে আলোচনার বিষয় স্থানীয় পন্য বাজারে(বাল্ক কোয়ান্টিটি) 'বিজনেস প্রমোশনাল গিফটস' এ চামড়া পন্যের ভুমিকা।প
পরের পর্বের জন্যঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৫৪