somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চামড়া ও চামড়া শিল্পের কেন আজ এই ভয়াবহ পরিস্থিতি!! পর্ব ৬

১৬ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গত পর্বের জন্যঃ Click This Link
ই পি বি’র বেহুদা মেলাঃ
এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো(রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো)যারা মুলত ই এক্স পি (এক্সপোর্ট পারমিশন)ও ফর্ম এ বা কান্ট্রি অফ অরিজিনের বিপরীতে জি এস পি প্রত্যায়ন করেন।সাথে রপ্তানী উন্নয়নের নিমিত্তে সব ধরনের তাত্ত্বিক সহযোগীতা আর আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহনের নিমিত্তে কিছু প্রণোদনা দিয়ে থাকেন।
তবে অন্য সব বিষয়ের থেকে দেশের অভ্যান্তরে বানিজ্য মেলা(যার নাম মুলত আন্তর্জাতিক রপ্তানী বানিজ্য মেলা)দ্বী দেশীয়,অঞ্চল ভিত্তিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহনে সবচেয়ে বেশী আগ্রহ ও উদ্দীপনা দেখা যায়।
ভাল- দেশের রপ্তানী বানিজ্যের জন্য দেশীয় উৎপাদক ও রপ্তানীকারকদের সাথে বিদেশী ক্রেতাদের সাথে মেল বন্ধনের এইটাই সবচেয়ে সহজ সঠিক ও ভাল উদ্যোগ!
আমরা প্রথমেই আলোচনা করি আমাদের দেশের অভ্যান্তরে প্রতিবছর মাসব্যাপী অনুষ্ঠিত বিশাল ও ব্যাপক আকারে ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলা চলে। যেটা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ও বানিজ্য মন্ত্রনালয় এর যৌথ উদ্যোগে অনুশঠিত হয়। ইদানীং শুনি ঢাকার বাইরেও এর বিস্তার হয়েছে। এ বিষয়ে আসুন দেখি ওরা কি বলতে চেয়েছে;
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলাঃ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ইরান, জাপান, চিন, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও দেশের প্রতিষ্ঠান মেলায় নিজেদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করে। দেশি ও বিদেশি পণ্যসামগ্রী প্রদর্শন, রপ্তানি বাজার অনুসন্ধান এবং দেশি-বিদেশি ক্রেতার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে এ মেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আমাকে যদি এক লাইনের ক্ষুদ্র একটা জোকস বলতে বলেন,তাহলে আমি বলব;
ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলা!!!!
কি উদ্দেশ্য নিয়ে এই মেলা শুরু হয়েছিল আর এখন কি উদ্দেশ্য নিয়ে চলছে সেটার উত্তর ওনারাই ভাল দিতে পারবে।
শুধু বলি,এখানে ভারত, পাকিস্থান,চীন আর ইরান ভুটানের মত দেশ গাট্টি বোচকা বেধে তাদের গার্বেজ নিয়ে আসে আর আমরা তাই টিকেট কেটে গিয়ে কিনে এনে বগল বাজাই।
এই মেলা শুধু একটা স্বল্পমেয়াদী বড় বাজার ছাড়া কিছু নয়! সেখানে অবশ্য অল্প কিছু প্রতিষ্ঠান থাকে যারা সারা বছরের স্টক লট আর রিজেক্টেড মাল খালি করার পাশা পাশি লোক দেখানোর জন্য ভাল কিছু পন্য প্রদর্শন করেন।
মেলার প্রথমদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী( এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্বদিচ্ছার অভাব নেই),বানিজ্য মন্ত্রী,অর্থমন্ত্রী সহ আরো কিছু চ্যালা চামুণ্ডা দেশের উন্নয়ন আর ঠেকিয়ে রাখা যাবেনা এইরকম বিগলিত হাসি হেসে অহংকারী পদক্ষেপে মেলা প্রাঙ্গনে যান। মেলায় তখন বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ-পুরোটাই নিরাপত্তা রক্ষীদের করায়ত্বে থাকে। স্টলে শুধু মালিক বা মালিকের প্রতিনিধি একজন এক্রেডিশন কার্ড গলায় ঝুলিয়ে তির্থের কাকের মত ভি ভি আই পি দের অপেক্ষায় থাকেন।
উনারা আসেন,স্টলের মালিক বিশিষ্ট রপ্তানীকারকেরা হন্তদন্ত হয়ে তার সেরা পণ্যটি বের করে প্রধানমন্ত্রীর সামনে এগিয়ে ধরেন। পেছন থেকে চ্যালা চামুণ্ডারা আহা উহু করেন। ভি ভি আই পি দের মনে হয় এমন উমদা মাল জগতে দ্বীতিয়খানা আর হয়নি। ভূয়সী প্রশংসা করে তারা সেই উদ্যোক্তার পিঠ চাপড়ে দেন। ই পি বির ভাড়াটে ফটো সাংবাদিক এই ফাঁকে সাটারে মাল্টি ক্লিক করতে থাকেন। ভি ভি আই পি দের বিদায়ের পরে তিনি আসেন,বুদ্ধিজীবীর মত হাসি দিয়ে তিনি বলেন,স্যার ছবি যা একখান হয়েছে না? সেই বিশিষ্ট রপ্তানীকারক পয়সার বিনিময়ে সেই ছবিখানা কিনে নিয়ে তার অফিস ঘরে সারম্বরে বাঁধিয়ে রাখেন। আর সবাইকে দেখিয়ে বলেন দ্যাখ ব্যাটা-এইবার ফের সি আই পি হওয়া আটকায় কে?
সেই যে তিনি মেলা থেকে ফিরে আসেন আর ওমুখো হন না। হ্যাঁ ফের আসেন মেলার শেষ দিনে আবার ভি ভি আই পি দের মুখোমুখি হতে,যদি সেরা স্টল বা পণ্যের একখানা ট্রফি পান তাহলেতো …
অভ্যান্তরিন একক দেশীয় মেলা (সিঙ্গেল কান্ট্রি ফেয়ারঃ)
একক দেশীয় মেলা মুলত আয়োজন করে সেই খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট কিছু সংগঠন ও বেসরকারি আয়োজকেরা ( কিছু কিছু ক্ষেত্রে কমার্স মিনিস্ট্রি ও ইপিবি সহযোগীতা করে থাকে)
এই আয়োজনগুলো মুলত একসময় অনুষ্ঠিত হত বিভিন্ন নামকরা হোটেল আর মাঠে ময়দানে। পরবর্তীতে চীন মৈত্রী ও বসুন্ধরা কনভেনশন হলে স্থানন্তরিত হয়। কিন্তু তাত বস্ত্র মেলা, পাট শিল্প মেলা সহ কিছু মেলা এখনো সেই মাঠে ময়দান-ই অনষ্ঠিত হয়ে আসছে।
প্যান প্যাসেফিক সহ কিছু আন্তর্জাতিক মানের হোটেলে একসময় যে মেলাগুলো আন্তর্জাতিক মেলা বলে চালানো হত সেগুলো বেশ জাঁকজমক শান শওকতের সাথে আয়োজিত হলেও বায়ারদের উপস্থিতি ছিল প্রায় শুন্যের কোঠায়। শুধু হোটেলে অবস্থিত কিছু বিদেশি মেহেমান অবসরের ফাঁকে একটু ঘুরে যেত আরকি! স্থানীয় খুচরা চ্রেতাদের ভীড়ে ঠাসা সেই সব মেলার আসলে আউটপুট ছিল শুন্য!
তবে এখন খানিকটা দিন বদলেছে। সংগঠনগুলো চেষ্টা করে দু-চারজন বায়ারকে আমন্ত্রন করে মেলায় ঘোরাতে। তবুও কাজের কাজ তেমন কিছু হয়নি।
তথাকতিথ কিছু নারী উদ্যোক্তাঃ
এই সব মেলাতে সবসময় সরব উপস্থিতি থেকে কিছু নারী উদ্যোক্তাদের। অনেকেই হয়তো কষ্ট পাবেন শুনে নারী উদ্যোক্তার তকমাধারী কিছু ভদ্র মহিলারা এসব মেলায় যায় মুলত প্রভাবশালীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে, কিছু মেডেল আর ট্রফি লাভের ধান্দায় আর সরকারি অনুদান, বিদেশি সাহায্য, নারী উদ্যোক্তার লেবাসে কম সুদে ঋণ আর বিদেশী সংস্থা কতৃক ফ্রি ট্রেনিং এর আশায় (দেশের বাইরে)।
আমি দেশে কি বিদেশে সবখানেই দেখেছি এনারা হুলস্থুল করে সেসব মেলায় অংশগ্রহন করে গাট্টি বোঁচকা ভরে মাল সামানা নিয়ে গিয়ে শেষ সুতোটাও বিক্রি করে দিয়ে ব্যাগ ভর্তি টাকা নিয়ে নাচতে নাচতে বাড়ি ফেরেন। (বেশীরভাগ-তবে সবাই নয়)
এদের দাপটে রিয়েল এন্টারপ্রেইনাররা সুযোগ হারান।
আমার অগ্রজের কৃপায় দেশে বিদেশে প্রায় সব ধরনের মেলায় অংশগ্রহনের সুযোগ হয়েছে।এর মধ্যে দেশের বাইরের দুটো মেলার চালচিত্র আমি তুলে ধরব;
প্রথমটা হচ্ছে হংকং এ অনুষ্টিত একটা আন্তর্জাতিক মেলার(সালঃ ২০০০)এই মেলা নিয়ে আমি বিস্তারিত আলোচনা করব পরের আরেকটা পর্বে; জার্মানি বিশেষজ্ঞ মি। বাউয়ারের প্রসঙ্গ যখন আসবে।
আর আট বছরের ব্যাবধানে দ্বীতিয়টা চায়নার বেইজিং এ অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক মেলার( মুলত আফগানিস্থান, নেপাল, ভারত, পাকিস্থান এইসব দেশ মিলে)।
প্রথমে আলোচনা করে নেই দেশের বাইরের মেলা নিয়ে ইপিবির ভুমিকা নিয়েঃ
এইসব ব্যাপারে সরকারের আন্তরিকতা প্রশ্নবিদ্ধ নয়। সরকারের উপর মহল থেকে সর্বোতভাবে চেষ্টা করা হয়েছে ভাল কোন ফল লাভের জন্য। কিন্তু গোলমাল বেঁধেছে পরের ধাপে;
বাইরের বড় মাপের আন্তর্জাতিক মেলাগুলো মুলত টোকিও ইন্টারন্যাশনাল ফেয়ার, ইতালিতে মিলান, জার্মানির ফ্রাংফুর্ট, কানাডার টরেন্টো, আমেরিকার লাস ভেগাস উল্লখযোগ্য। এইসব মেলায় আসলেই রপ্তানিকারকদের নিজের পণ্যের উপস্থাপনের সেরা জায়গা। কিন্তু প্রথমত ইপিবির কিছু শর্ত বা নিয়ম কানুনের জন্য উঠতি ও ছোট উদ্যোক্তারা মেলায় অংশগ্রহনের সামর্থ্য রাখেননা বা ভয় পান! দ্বীতিয়ত; জুতা ও কিছু কিছু ব্যাগ বাদে বাকি চামড়াশিল্প বৈশ্বিক বাজারের জন্য উপযুক্ত বা মান সম্পন্ন না হওয়ায় বেশীরভাগ শিল্প মালিকেদের এর থেকে ভাল কোন ফল না পাবার আশংকায় অংশগ্রহনে দ্বীধা!
ইপিবির নিয়ম কানুনঃ
এক সময় ইপিবি বড় কোন মেলায় অংশগ্রহনের জন্য তাদের পছন্দমত শিল্প মালিকদের আমন্ত্রন জানাত কিংবা যারা ভাল লবিং করতে পারে ক্ষমতাবান ও নিজের পণ্যের গুনাগুন প্রচার করতে পারে এবং আগে রপ্তানী করেছেন এমন উদ্যোক্তা ও শিল্প মালিকদের মেলায় অংশগ্রহনের জন্য সরাসরি অনুরোধ জানাতেন। তবে এক দেশীয় বা আঞ্চলিক মেলায় যেখানে নামি দামি উদ্যোক্তারা যেতে অনাগ্রহী থাকতেন সেখানে খুজে খুজে ছোট শিল্প মালিক ও সরবারহাকারিদের প্ররোচিত করতেন।
এখন অবশ্য দিন পাল্টেছে- এখন মেলায় অংশগ্রহনের আমন্ত্রন জানান ইপিবির হয়ে সেই খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট সংগঠন। তবে সেখানে শুধু সংগঠনের সদস্যরাই আমন্ত্রিত হন।
তবে এখানে যুক্ত হয়েছে আরেকটা বিষফোঁড়া! দেশী বিদেশী থার্ড পার্টি বা আয়োজক সংস্থার অনুমোদিত কিছু বেসরকারি সংস্থা। এরা মেলা কমিটির কাছে জায়গা বরাদ্দ নিয়ে ইপিবি বা সংগঠনগুলোর অনুমোদন সাপেক্ষে শিল্প মালিকদের মেলায় অংশগ্রহনের আমন্ত্রন জানায়-তাদ্র প্রস্তাবগুলো বেশ আকর্ষণীয় ও লোভনীয় হলেও খরচ বেড়ে যায় কয়েকগুণ!
কোন কোন ক্ষেত্রে ইপিবি, কমার্স মিনিস্ট্রি যৌথভাবে মেলায় অংশগ্রহনের ফি’র একটা অংশ প্রদান করলেও দিনশেষে বাকি টাকার অংকও বেশ মোটা দাগের।
বরাবরই ইপিবি দেশীয় শিল্প বিকাশের স্বার্থে মেলায় অংশগ্রহনের ফি’র অর্ধেক টাকা শিল্প মন্ত্রানলয়ের ফান্ড থেকে বরাদ্দ দেয়।
ধরে নিই লাস ভেগাসের একটা মেলার মুল খরচ( ৩ বাই ৩ মিটার স্টল); ৮ লাখ টাকা। সেখানে সরকার বহন করবে ৪ লাখ আর শিল্প মালিক ৪ লাখ। কিন্তু এ টাকার মধ্যে আপনি কি পাচ্ছেন;
ইতিবাচকঃ
১.মেলায় যাবার অনুমতি ২.মেলায় অংশগ্রহন ৩.ইপিবির তত্বাবধানে দেশ থেকে ৪০ কেজি পর্যন্ত স্যম্পল খরচ বিহীন মেলা প্রাঙ্গনে পৌছে দেয়া।
নেতিবাচকঃ
১. মেলায় অংশগ্রহনের জন্য অগ্রিম টাকা পে অর্ডারের মাধ্যমে অগ্রিম দিতে হবে কিন্তু কোন কারনে আপনি ভিসা না পেলে সে দায়ভার ইপিবি বহন করবে না সেই সাথে আপনার জমা দেয়া অগ্রিম টাকাও আপনি ফেরত পাবেন না।
২. বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই মেলার স্টল এর সাথে প্যাকেজ হিসেবে একটা টেবিল, দুটো চেয়ার, একটা ডিসপ্লে শো-কেস ও বৈদ্যুতিক সংযোগ দেয়া হবে শুধু। কিন্তু ব্যানার থেকে শুরু করে বাকি অন্য কাজ আপনার নিজ খরচে করে নিতে হবে।
বিমান খরচ, হোটেল ভাড়া থেকে শুরু করে যাবতীয় ব্যয় অংশগ্রহণকারী নিজে বহন করবেন।
৩. যে চল্লিশ কেজি স্যাম্পল আপনি নিয়ে যাবেন সেগুলো ফেরত নিয়ে আসার দায়িত্ব আপনার। হতে পারে আপনার বিমান সংস্থা ২০ কেজির বেশি মাল বহন করার অনুমতি দিবে না।আপনার পণ্যের মান উন্নয়নের জন্য আপনি বাইরের দেশ থেকে বিশেষ কিছু স্যম্পল বা এক্সেসরিজ ক্রয় করতে পারেন- নিজের ব্যাবহার্য জিনিসের কথা বাদই দিলাম তখন আপনি আপনার এতদিনের কষ্ট, মনন, আর শিল্প প্রতিভা দিয়ে তৈরি করা চল্লিশ কেজি স্যাম্পলের তখন কি সৎকার করবেন? হয় ফেলে আসতে হবে না হয় কারো কাছে বিক্রি করে দিতে হবে!!!!
আমাদের পণ্যের যে গুনগত মান,ডিজাইন,নিন্মমানের এক্সেসরিজ ও লাইনিং- সব মিলিয়ে ইউরোপ এমেরিকা থেকে বড় ক্রয়াদেশ পাবার সম্ভাবনা একেবারেই কম। বরাবরই আসবে সুযোগসন্ধানী কিছু বায়ার- যারা ভীষণ কমদামে অল্প সংখ্যক মাল, তাদের পছন্দমত ডিজাইন দিয়ে তৈরি করতে পারে। জি এস পি সুবিধার জন্য তাদের স্বার্থে ও আপনার সরকারের নগদ প্রণোদনার মুলা ঝুলিয়ে ও আসেন কেউ কেউ।
ছোট উদ্যোক্তা হয়ে ধার দেনা করে যে কয়েক হাজার ডলার খরচ করে মেলায় অনশগ্রহন করলেন তার অর্ধেক টাকার স্পট অর্ডার পাবেন কি-না সন্দেহ আছে।
লাভের মধ্যে সেইসব কাঙ্ক্ষিত দেশের অতি অমুল্য ভিসা আর মেলায় অংশগ্রহনের নিমিত্তে একখানা সার্টিফিকেট,এই নিয়ে সারাজীবন বসে বসে মনের সুখে জাবর কাটা!

আর ছোট ছোট দেশে একক দেশীয় ও আঞ্চলিক আন্তর্জাতিক নামধারী মেলার খবর শুনলে চমকে উঠবেন!
এই সবখানে একটাই সুবিধা টাকা কম লাগে। এখানে বড় শিল্প উদ্যোক্তারা কেউ যেতে আগ্রহী নয়। কাজেই ভরসা তখন অতি ছোট,ছোট, উঠতি কিংবা মাঝারি উদ্যোক্তারাই। তবে সব ছাপিয়ে তথাকতিথ সেই সকল নারী উদ্যোক্তাদের ভীড় এখানে বেশিমাত্রায় লক্ষণীয়।
কখনো চেন্নাই,কখনো থিম্পু,লাইবেরিয়া,ঘানা,কেনিয়া এইসব এলাকায় কখনো চীন,কোরিয়া,তাইওয়ানে।
শেষোক্ত তিনটে দেষের নাম শুনে আপনি লম্ফ দিয়ে উঠবেন! এরাই বা কম কি?
চলুন আমরা তেমনি চায়নার একটা মেলার কথা শুনিঃ
প্রথমে ইপিবির আমন্ত্রণ আর পরে বড় ভায়ের অতি উৎসাহে আশাবাদী হয়ে আমি চীনের বেইজিং –য়ে এই মেলায় যেতে আগ্রহী হলাম। চীন ঘুরে দেখার বাসনা বহুদেশের ছিল। লেনিনের দেশ দেখা হয়ে গেছে –আশা ছিল মাও সে তুং এর দেশটাও দেখব।
বড় ভাই তখন জাপানে ছিলেন- তিনি ওখান থেকেই মেলায় অংশগ্রহন করবেন বলে,ইপিবির সাথে বৈঠক, অর্থকড়ি জমা দেয়া,স্যাম্পল এপ্রুভাল করে সেগুলো প্যাকিং করে জমা দেয়া থেকে শুরু করে ভিসা নিয়ে দৌড় ঝাঁপ সব আমাকেই করতে হোল!এর ফাঁকে অতি দরকারি দু-চারটে চাইনিজ শব্দও শিখে নিলাম। তখন গুগল বা ট্রান্সিলেটর আমাদের হাতের নাগালে আসেনি।
যথারীতি ভিসা পেয়ে নির্দিষ্ট দিনে চায়না ইস্টার্নে বেইজিং এ পৌছে গেলাম! হোটেল বুকিং ছিল অনলাইনে। হোটেল কতৃপক্ষ চাইনিজ ভাষায় যে ম্যাপটা সরবরাহ করেছিল সেই ম্যাপ ট্যাক্সিওলাকে দেখিয়ে অনেকটা ঝামেলা ছাড়াই হোটেলে গিয়ে পৌঁছুলাম। খানিক বাদেই থাইল্যান্ড থেকে আমার আরেক বন্ধু চীন ঘোরার নিমিত্তে সেই হোটেলে এসে উতফুল্ল! আর আমি এক সঙ্গী পেয়ে তখন দারুন উৎফুল্ল!

এপর্ব সামনের পর্বে সমাপ্ত হবে
ছবিঃ চায়নায় সাউথ এশিয়ান কমিউনিটি ফেয়ারের উদ্বোধনের প্রাক্কালে~ আমার তোলা
প্রথম পর্বের জন্যঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:০০
১৩টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×