somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুনিয়া কাঁপানো জার্মান ব্যান্ড ২- স্করপিয়ন'স ও তাদের' উইন্ড অফ চেঞ্জ'!!!

২৪ শে মে, ২০২২ সকাল ১১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমেরিকার মেডিসন স্কয়ারে গোল্ডেন জুবলী বাংলাদেশ কনসার্টের বিলবোর্ড।

I follow the Moskva
Down to Gorky Park
Listening to the wind of change
মস্কো হয়তো ইউরোপের সাথে বিভাজনের জন্য পুর্ব জার্মানীর মত কোন প্রাচীর তুলে দেয়নি। কিন্তু অদৃশ্য একটা প্রাচীর ছিল সেখানে সেটা আপনি শুধু অনুভব করতে পারবেন। তবে হাওয়া বদলের আভাস মিলছিল বেশ জোরেসোরেই ; গর্বাচেভ নিয়ে আসছিলেন গ্লাসনস্ত আর পেরেস্ত্রোইকা! পৃথিবী বদলে যাচ্ছিল। সেই পৃথিবি বদলের স্পন্দনটা ক্লাউস তাঁর সুরে তুলে নিল।
-রুডলফ শেঙ্কার(গিটারিস্ট, স্করপিয়ন্স)

তার ঠিক একবছর পরে,সেই গোর্কি পার্কের পাশ দিয়েই ট্যাক্সি চড়ে যাচ্ছিলাম। বা দিকে তাকালে দেখা যায় মস্কোভা নদীর কোল ঘেষে বিশাল গোর্কি পার্ক। প্রাক্তন সোভিয়েতের অনেক গল্প জমে আছে এখানে। মাত্র ক’দিন আগেই বিশ্ব বিখ্যাত হেভি মেটাল হার্ড রক ব্যান্ড স্করপিয়ন্স এখানেই তাদের বিশ্বের সর্বকালের সেরা ‘পলিটিক্যাল ইনফ্লুয়েন্সাল সঙ’ -উইন্ড অব চেঞ্জ গেয়ে সারা বিশ্বব্যাপি শোরগোল ফেলে দেয়। -শেরজা তপন

Tsentralnyi Park Kultury i Otdykha imeni Gorkovo (The Maxim Gorky Central Park of Culture and Leisure)

৯২৮ সালে নির্মিত বিখ্যাত রুশ লেখক ম্যাক্সিম গোর্কির নামে গোর্কি পার্কের পরিকল্পনাকারি ছিলেন বিশ্ব বিখ্যাত স্থপতি কনস্তানতিন মেলনিকভ।সোভিয়েত যুগে এখানে বিখ্যাত ‘নেসকুসনি প্রসাদ, ও তার সংলগ্ন ৬৮ একর জুড়ে সুদৃশ্য বাগান,ও বহু পুরোন ‘গোলিৎসিন হাসপাতাল’ছিল ।সোভিয়েত উত্তর যগে এটাকে বিনোদনমুলক পার্কে রুপান্তরিত করা হয়।মাত্র গত বছরেই-(২০১১সালে)এই পার্কের সব ধরনের রাইড সরিয়ে এটাকে অত্যাধুনিক রাইড দিয়ে একদম নতুন করে সাজানো হয়েছে।

- নব্বুই দশকের 'গোর্কি পার্ক'।

- শীতকালে এমন দৃশ্য! যাবেন নাকি পার্ক ভ্রমনে?

৯৯০ সাল। সবে বার্লিন প্রাচীরের পতন হয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের দ্বারপ্রান্তে। পশ্চিম জার্মানির একটি হেভি মেটাল ব্যান্ড,স্কর্পিয়ানস,’উইন্ড অফ চেঞ্জ’ নামে একটি পাওয়ার ব্যালাড প্রকাশ করে৷ গানটি ইউরোপে শান্তিপূর্ণ বিপ্লবের সাউন্ডট্র্যাক হয়ে ওঠে - এবং এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় রক সিঙ্গেলগুলির মধ্যে একটি। কিছু ভক্তদের মতে,এটি সেই গান যা ঠান্ডা যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছে। কয়েক দশক পরে,নিউ ইয়র্ক টাইমস এর সাংবাদিক প্যাট্রিক রাডেন কিফ একটি উৎস থেকে একটি গুজব শুনেছেন: স্কর্পিয়ানস আসলে ‘উইন্ড অফ চেঞ্জ’ লেখেনি। এটা সিআইএ-এর কাজ।
এটি সত্য খোঁজার জন্য প্যাট্রিকের যাত্রা। মস্কো থেকে কিয়েভ থেকে ওহাইওতে একটি জো কনভেনশন পর্যন্ত প্রাক্তন অপারেটিভ এবং চামড়ার পোশাক-পরিহিত রকারদের মধ্যে,এটি গুপ্তচরদের অকল্পনীয় কাজ করার গল্প পপ সঙ্গীতে লুকিয়ে থাকা প্রচার এবং সরকারী গোপনীয়তার একটি গোলকধাঁধা। "পরিবর্তনের বাতাস." দশ বছর আগের একটি অফবিট তদন্তের অংশ; অনুসন্ধানী সাংবাদিক প্যাট্রিক র‌্যাডেন কিফ এক বন্ধুর কাছ থেকে একটি অকল্পনীয়- গুজব শুনেছিলেন যার ইতিহাস অবিশ্বাস্য! তার তদন্তে নাকি গুজবটা সঠিক প্রমাণিত হয়েছিল!! এটি ছিল স্কর্পিয়ানস গান ‘উইন্ড অফ চেঞ্জ’ সম্পর্কে, যা ১৯৯০ সালের নির্মমভাবে উত্থানকারী শক্তি ব্যালাড যা বার্লিন প্রাচীরের পতন এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির সাথে অবিচ্ছিন্নভাবে জড়িত ছিল।
এখন হয়তো এটা নিয়ে ভাব্না হাস্যকর। কিন্তু ৫০-এর দশকে সিআইএর কর্মকান্ডের সাথে এখনকার সময় মেলালে হবে না। সোভিয়েত ও আমেরিকার সেই ঠান্ডা লড়াইয়ের দিনগুলোতে যুদ্ধের একটা চরম মাধ্যম ছিল সাংস্কৃতিক স্নায়ুযুদ্ধের। যে যুদ্ধে সবাই সরাসরি ইফেক্ট হয়না বলে কেউ সেসব নিয়ে কথা বলতে চায় না –ভাবনাটাকে বাতুলতা মনে করে।
সোভিয়েত ইউনিয়ন – বিশাল বিচিত্র কল্পনাতীত শক্তিধর অদৃশ্য দেয়ালের আড়ালে লুকিয়ে থাকা শতাধিক সংস্কৃতি ও ভাষার একটি দেশ। যার ভাঙ্গন হয়তো শুধু শক্তিমত্ত্বা, চাপ প্রয়োগ, প্রপাগান্ডা বা শুধু বুদ্ধিবৃত্তিক যুদ্ধ দিয়ে সম্ভব ছিল না। সেখানে সাস্কৃতিক স্নায়ুযুদ্ধও ব্যাপক একটা ভুমিকা রেখেছিল, যার সবচেয়ে বড় একটা উদাহরণ পৃথিবীর সর্বকালের সেরা পলিটিক্যাল ইনফুয়েন্সাল গান ‘উইন্ড অদ চেঞ্জ’।সি আই এর সেই সাংস্কৃতিক স্নায়ুযুদ্ধার অংশ ছিল।
এটি আমার কাছে আকর্ষণীয় ছিল যে এটি করা হয়েছিল, তবে সেগুলি অগত্যা এমন গল্প নয় যা আমি বিশেষভাবে বলতে চেয়েছিলাম — আমি সংগীত সম্পর্কে একটি গল্প বলতে চেয়েছিলাম, যা একটি পডকাস্ট। আমি চাইনি বিষয়টা নোংড়াভাবে প্রচারিত হোক, কারণ আমি চাই তুমি গান শুনো।
তবে এর পেছনে অতি গোপনীয় তবে চরম আকর্ষণীয় কিছু গল্প আছে। বিশেষ করে অনুসন্ধানী গল্প,যেখানে আপনি একটি টিপস পাবেন- বছরের পর বছর ধরে ধুলো বালি জঞ্জালে ঢেকে যাওয়া পুরনো একটি গর্তের। আপনি সেই গর্তের কাছে যান,এবং আপনি খনন করেন, এবং আপনি চরম হতাশ হয়ে পড়বেন কারণ সেখানে কিছুই নেই। কিন্তু এই গল্পের অদ্ভুত ব্যাপার হল যে, যখনই আমি গর্তের কাছে ফিরে যেতাম। তখনই সেখানে কিছু সম্পূর্ণ নতুন জিনিসের দেখা মিলত। তা সেটা একটি নতুন চরিত্র হোক বা একেবারে দেয়ালের বাইরে, অবিশ্বাস্য কঠিন উপাখ্যান। যে পথ ধরে আমাকে টেকসই. পডকাস্টটি একটি খুব নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তরে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে ; সিআইএ কি ‘উইন্ড অফ চেঞ্জ’ লিখেছে?
তবে এটি মুলত একটি সাংস্কৃতিক স্নায়ুযুদ্ধের ইতিহাস। কত যে লুকিয়ে থাকা ইতিহাস আছে যার গল্প কেউ কোনদিন হয়তো জানবে না।

-প্যাট্রিক রাডেন কিফে- নিউইয়র্ক টাইমস!
স্কর্পিয়ানস, এর বর্ষিয়ান মেইন (৬৮ বছর) এবং শেঙ্কার ( ৬৭ বছর) এর নেতৃত্বে ঝড়ের মতো বিশ্বব্যাপী দর্শকদের দোলা দিয়ে চলেছে৷এই সেদিন ২০১৬ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তারা তাদের ১৮ তম স্টুডিও অ্যালবাম,রিটার্ন টু ফরএভার- প্রকাশ করেছে এবং সেই মাসেই তারা একটি ব্যান্ড হিসাবে ৫০ বছর উদযাপন করার জন্য মার্কিন মুলুক সফর করেছিল৷ কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে "উইন্ড অফ চেঞ্জ" (নভেম্বর মাসে ২০২১) এর ৩০ তম বার্ষিকীতে,গানের মূল সুর বাজিয়ে এবং শ্রোতা ও দর্শনার্থীদের সাথে স্কর্পিয়ানস আমাদের মস্কোতে সেই জাদুকরী ফিরিয়ে নিয়ে যায়।
গানটি ১৯৯০ সালের পেরেস্ত্রোইকা এবং ১৯৮৯ সালে বার্লিন প্রাচীরের পতনের সাথে যুক্ত হয়। বার্লিন প্রাচীর পতনের ১০তম বার্ষিকীতে ৯ নভেম্বর ১৯৯৯তারিখে ব্র্যান্ডেনবার্গ গেটে স্কর্পিয়ানস পারফর্ম করেছিল।
২০০৫ সালে, জার্মান টেলিভিশন নেটওয়ার্ক ZDF-এর দর্শকরা এই গানটিকে শতাব্দীর সেরা গান হিসেবে বেছে নেন।
ইন সার্চ অফ আ মিডনাইট কিস (২০০৭), জেন্টেলম্যান ব্রঙ্কোস (২০০৯), দ্য ইন্টারভিউ (২০১৪), এবং লাভ আইল্যান্ড (২০১৪) এবং ভিডিও গেম সিংস্টার রকস ছবিতে "উইন্ড অফ চেঞ্জ" দেখানো হয়েছে! (২০০৬)। অ্যাকশন কমেডি ফিল্ম দ্য স্পাই হু ডাম্পড মি (২০১৮) এর শুরুর দৃশ্যে গানটি শোনা যাবে। গানটি টেলিভিশন শো -মেলরোজ প্লেস, চক, এবং কার শেয়ার এবং নিউট্রি ভেঞ্চার প্যারোডি সংস্করণেও প্রদর্শিত হয়েছে।
শুধুমাত্র জার্মানির স্কর্পিয়ানরা বলতে পারে যে কিভাবে ও কোন প্রেক্ষিতে এটা রচিত হয় এবং বিশ্বের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে সর্বকালের সেরা ‘পলিটিক্যাল ইনফ্লুয়েন্সাল সঙ’ এর খেতাব পায় তার মৌলিক ইতিহাস। ১৯৯০ এর "পরিবর্তনের বাতাস" - একটি রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক বিপ্লবের জন্য একটি সাউন্ডট্র্যাক হিসাবে কাজ করেছিল৷ গানটির আশা ও শান্তির অনুভূতি মেশানো ছিল।

- ফিল্ম ইন্টারভিউ- এর পোস্টার।
(চলচ্চিত্রের কাহিনীতে দেখা যাবে অভিনেতা রজেন এবং জেমস ফ্রাংকো দুজন সাংবাদিক যারা উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন এর সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে হত্যা করার নির্দেশনা পায়।
২০১৪ সালের জুন মাসে উত্তর কোরিয়া হুমকি দেয় যদি চলচ্চিত্রটির পরিবেশক কলাম্বিয়া পিকচার্স ম্যুভিটিকে মুক্তি দেয় তবে আমেরিকার বিরুদ্ধে ক্ষমাহীন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। হ্যাকাররা কলম্বিয়া পিকচার্সের মূল কোম্পানি সনি পিকচার্স এন্টারটেইনমেন্টের কম্পিউটার নেটওয়ার্ক হ্যাক করে। হ্যাকাররা অভ্যন্তরীণ ইমেল, কর্মচারীর রেকর্ড এবং অ্যানি, মিস্টার টার্নার, স্টিল অ্যালিস এবং টু রাইট লাভ অন হার আর্মস সহ সনি পিকচার্সের সাম্প্রতিক এবং অপ্রকাশিত বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র ফাঁস করে দেয় । কিম জন উন এর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অভিনেতা র‍্যান্ডাল পার্ক। কলাম্বিয়া চলচ্চিত্রটির মুক্তির তারিখ ১০ অক্টোবর থেকে বাড়িয়ে ২৫ ডিসেম্বর করে।
চলচ্চিত্রটির ব্যাপক পরিমার্জন ঘটিয়ে তারা উত্তর কোরিয়ার কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার চেষ্টা করে। চলচ্চিত্রটি নিয়ে মিডিয়া জগতে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। তবে মুক্তির পর এটি চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। ৪৪ মিলিয়ন ডলারের ১১২ মিনিটের চলচ্চিত্রটি ১১ ডিসেম্বর লস এঞ্জেলসে উদ্বোধন করার পর ২৪ ডিসেম্বর উত্তর আমেরিকায় মুক্তি দেয়া হয়।-উইকি)
----------------------------------------------------------
এবার তাদের মুখে শুনি এই গানের পেছনের ইতিহাসঃ

ম্যাকঘি: স্কর্পিয়ানদের মস্কোর সংস্কৃতি এবং লোকেদের সম্পর্কে একটি ব্যান্ডের চেয়ে অনেক বেশি বোঝাপড়া ছিল? তাই মস্কোতে বাজানোর তাৎপর্য অবশ্যই আমাদের জন্য অনেক বড় ব্যাপার ছিল। রাশিয়া এমন একটি দেশ যারা বহু জাতি আর ভাষাভাষী মানুষ ও দেশকে একসাথে পুরো বিশ্ব থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সেই পরিবেশে বেড়ে ওঠার মতো কি ছিল আমি কেবল কল্পনা করতে পারি? পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানির বিভক্তি, ভাই-বোন এবং পরিবার ও বন্ধুদের বিচ্ছেদ... এবং তারপরে আপনার দেশটি মানবতার বিরুদ্ধে কত অপরাধ করেছে তা জানা আমাদের সাধ্যের বাইরে। সেই ইতিহাস নিয়েই তাদের বাঁচতে হয়েছে।
আমরা এক সপ্তাহের মতো মস্কোতে ছিলাম, এবং আমাদের বাজিয়েরা সাংবাদিক সহ অনেকেই ছিল। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, আমরা মস্কোর মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া মস্কোভা নদীতে সবাইকে নিয়ে যাব। আপনাকে মনে রাখতে হবে, তখন এমন ছিল না যে, একট আনন্দ ভ্রমনের জন্য তাদের কাছে এই সমস্ত নৌকাগুলি জন্য প্রস্তুত ছিল। আমরা মাত্র একটি ভাড়া করেছিলাম।তবে ভ্রমনের অনুসং হিসেবে তাদের কাছে কিছুই ছিল না। তাই আমি হোটেলের দারোয়ানকে ডেকে বলেছিলাম, "আমি বারবিকিউ সহ একটি বোটটি করে ভ্রমন করতে চাই’। মস্কোভা নদীতে আমাদের দলবল নিয়ে সেরাতে আমাদের যেইখানে বাজানোর কথা ছিল সেই ‘গোর্কি’ পার্কের পাশ দিয়ে যাবার সময় সম্ভবত ক্লাউস এমন একটা সুর বাঁধে। হোটেলে ফিরে আসার বাসে ক্লাউস "উইন্ড অফ চেঞ্জ" শিস দিচ্ছিল। তার মাথায় এই ধারণা ছিল। এবং তারপরের দিন তিনি প্রায় পুরো গানটি লিখেছিলেন। এটাই গানের আসল ভিত্তি।

- উননব্বুই এ মস্কোতে অনুষ্ঠিতব্য 'মস্কো পিস কনসার্টে' অংশগ্রহনের জন্য সেরিমেতভা বিমান বন্দরে বিমানের সিড়িতে। সামনে 'বন জোভি'-আর স্করপিয়ন্সের সদস্য দিয়ে ঘেরা মাঝে ইভেন্ট ম্যানেজার 'ম্যাকঘি'।
রুডলফ শেঙ্কার, গিটারিস্টঃ
আমাদের আসলে ১৯৮৮ সালে মস্কোতে বাজানোর কথা ছিল। যখন আমরা স্যাভেজ অ্যামিউজমেন্ট অ্যালবাম প্রকাশ করি তখন মস্কোতে পাঁচটি শো এবং লেনিনগ্রাদে পাঁচটি শো করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ, সম্ভবত তারা ভয় পেয়েছিল যখন রক অ্যান্ড রোল তাদের দেশে পারফর্ম করা নিয়ে। বিশেষ করে মস্কোতে। কারণ সেখানে ইউরোপের পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন জাতীয়তার এবং কট্টর রাশিয়ানরা বাস করে যারা জার্মানীদের পছন্দ করে না । তারা ভেবেছিল যে একটি দাঙ্গা হতে পারে। তাই তারা আমাদের মস্কোতে শো করতে দেয়া হয়নি। কিন্তু লেনিনগ্রাদে আরও শো করার দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। আমরা কিছুটা হতাশ হয়েছিলাম কিন্তু আমরা অফারটি গ্রহন করেছিলাম এবং সেখানে একটানা ১০ টি শো করেছিলাম।
নিশ্চিতভাবে আমাদের ব্যান্ডের জন্য এটা চমকপ্রদ ছিল. রাশিয়ায় শো করার একটি স্বপ্ন ছিল কারণ,আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে; আমাদের জার্মান ইতিহাস বলে, আমরা রাশিয়াতে অনেক খারাপ কাজ করেছি। সে কারনে নতুন করে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেবার জন্য আমরা ভালো কিছু করতে চেয়েছিলাম। আমরা রাশিয়ার লোকদের দেখাতে চেয়েছিলাম যে এখানে জার্মানীতে একটি নতুন প্রজন্ম বেড়ে উঠছে এখন তারা আর ট্যাঙ্ক এবং বন্দুক নিয়ে যুদ্ধ করছে না। তারা গিটার এবং রক অ্যান্ড রোল নিয়ে বুকভরা ভালবাসা নিয়ে আসছে!
মস্কো মিউজিক পিস ফেস্টিভ্যালটি ছিল আমাদের ম্যানেজার ডক ম্যাকঘি এবং স্ট্যাস নামিনের দারুন প্রচেষ্টার ফসল। যার রাশিয়ায় বেশ নাম ডাক ছিল— তিনি ছিলেন একজন প্রতিভাবান সঙ্গীতপাগল মানুষ। এবং তার চাচা ছিলেন এমআইজি, ফাইটার জেটের উদ্ভাবক। এছাড়াও, তার দাদা সোভিয়েত ইউনিয়নের একজন নেতা ছিলেন।

স্কর্পিয়ানস সব জায়গায় শো করতে পছন্দ করত। মানে, যুদ্ধের সময় আমরা সারাজেভো খেলেছি। এই ছেলেরা, তারা যে জিনিস পছন্দ. সুতরাং যখন তারা সোভিয়েত ইউনিয়নের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রক শো-এর অংশ হওয়ার সুযোগ পেয়েছিল । এটা এটা বিশাল ব্যাপার, আপনি জানেন, গোর্কি পার্কে ৪০,০০০ এবং লেনিন স্টেডিয়ামে ১২০০০০ লোকের সামনে আমরা বাজিয়েছি এটি সবগুলো রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেখানো হয়। সেখানকার সবগুলো ব্যান্ড ও শিল্পীরা দারুন একটা ইতিহাসের অংশ হয়ে যায়।
আমরা এই জার্মান ইতিহাস থেকে হলোকাস্ট থেকে দূরে সরে যেতে চেয়েছিলাম। আমাদের পিতামাতার প্রজন্ম থেকে সমস্ত বিশ্বের সাথে যুদ্ধ চলছে। আমরা সঙ্গীতশিল্পী হতে চেয়েছিলাম –সপ্ন দেখেছিলাম সঙ্গীতের আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে নিজেদের মেলে ধরার। আমাদের ইংরেজিতে গান গাওয়ার এটা একটা কারণ ছিল।
স্কর্পিয়ানস-এ আমাদের এই ধরনের কথা আছে: প্রেম,শান্তি এবং রক অ্যান্ড রোল। ভালোবাসা মানে "সবসময় আমরা তোমাদের ভালোবাসি"। রক অ্যান্ড রোলের অর্থ হল "রক ইউ লাইক আ হারিকেন"। আর শান্তি? এটি "উইন্ড অফ চেঞ্জ" এর জন্য। সেই গানের বার্তা। এটি সারা বিশ্বের মানুষের একসাথে শান্তিতে বসবাস করার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে একটি গান। এবং সেই বার্তাটি আমাদের কল্পনার থেকেও দ্রুত গতিতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল।

- মস্কোতে স্টেজ পারফর্মরত রুডলফ শেঙ্কার।

ক্লাউস মেইন -ভোকাল:
আমি অনুমান করি যে সোভিয়েত ইউনিয়নে একটি বড় শো চালানোর জন্য প্রথম পশ্চিমা রক ব্যান্ডগুলির মধ্যে একজন হয়ে আমরা একটি দরজা খুলে দিয়েছি। সুতরাং যখন আমরা পরের বছর যখন ওজি অসবোর্ন এবং এই সমস্ত আমেরিকান ব্যান্ডের সাথে মস্কোতে শো করি,লোকেরা জানত আমরা কে।
মস্কোতে অনেক আবেগময় মুহূর্ত ছিল। আমি অনুমান করি এটি বন জোভি বা মটলি ক্রু শো করলেই মস্কোর যুবারা তাদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে চমৎকার সুখস্মৃতি নিয়ে বাড়ি যেতে পারত। কিন্তু তাদের জন্য আমাদের উপস্থাপনা ছিল দারুন চমকের। আমরা সোভিয়েত ইউনিয়নকে নাড়িয়ে দিয়েছিলাম! আমরা ৮৮ সালের থেকে নব্বুই সালে লেনিনগ্রাদ থেকে মস্কো পর্যন্ত অনেক পরিবর্তন দেখেছি। এটাই ছিল "উইন্ড অফ চেঞ্জ" এর অনুপ্রেরণা।
আমরা মস্কভা নদীতে নৌকা নিয়েছিলাম। এবং আমরা এই নৌকায় সমস্ত ব্যান্ডের সাথে, এমটিভি সাংবাদিকদের সাথে, রেড আর্মির সৈন্যদের সাথে ছিলাম... এটা আমার জন্য একটি অনুপ্রেরণামূলক মুহূর্ত ছিল [“উইন্ড অফ চেঞ্জ”-এর প্রথম লাইনগুলি হল: “ফলো দ্যা মস্কভা/ডাউন টু গোর্কি পার্ককে অনুসরণ করি” ]। মনে হচ্ছিল পুরো বিশ্ব সেই নৌকায় একই ভাষায় কথা বলছে।
আমরা যখন আমাদের জনপ্রিয় গান "ব্ল্যাকআউট" দিয়ে আমাদের শো শুরু করি, তখন সমস্ত রেড আর্মির সৈন্যরা, সমস্ত নিরাপত্তা প্রহরী মঞ্চের মুখোমুখি হয়ে তাদের ক্যাপ এবং জ্যাকেট বাতাসে ছুঁড়তে শুরু করে। এটি ছিল বিস্ময়কর! মনে হচ্ছিল আমাদের চোখের সামনে পৃথিবী বদলে যাচ্ছে। অনেক অল্পবয়সী রাশিয়ান বাচ্চারা বুঝতে পেরেছিল যে পুরো ঠান্ডা যুদ্ধ প্রজন্ম শীঘ্রই শেষ হবে। আশার একটা অনুভূতি ছিল। আর সেটাই গানে প্রকাশ করার চেষ্টা করেছি।
আমরা সবসময় বলতাম আমরা ভাগ্যবান আমরা পশ্চিম জার্মানিতে বড় হয়েছি।
এটা আজ বিশ্বাস করা কঠিন, কিন্তু জার্মান টেলিভিশনে মাত্র তিনটি চ্যানেল ছিল এবং তার মধ্যে একটি আবার পূর্ব জার্মানির সাদা কালো চ্যানেল। আমরা যখন পূর্ব জার্মান টেলিভিশন দেখছিলাম,তখন সেই দেশটা আমাদের কাছে অন্ধকার জগতের মতো ছিল। শুধু আমরা নই পুরো পশ্চিমের মানুষের জন্য খুবই দ্বন্দ্বমূলক ছিল। পরিস্থিতি এমন ছিল যে আপনি অনুভব করতে পারবেন যে, আমরা সত্যিই সেখানে খুব স্বাগত ছিলাম না। পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে সেই বিভাজন ছিল খুবই উত্তেজনাপূর্ণ। আমরা জিন্সের সাথে,এলভিসের সাথে, বাবল গামে’র মত নামীদামী ব্যান্ড ও বাজিয়েদের অনুপ্রেরণায় বড় হয়েছি। অনেকটাই আমেরিকানাইজড।
কিন্তু সেখানে,তারা সোভিয়েত ইউনিয়নে বেড়ে ওঠেছে। তারা নিকিতা ক্রুশ্চেভের সাথে বেড়ে উঠেছেন, যিনি জাতিসংঘের টেবিলে তার জুতা ঠুকেছিলেন। সারা বিশ্বের কাছে তখন সেটা একটা বড় ধরনের হুমকির মত ছিল, জানেন? ক্রুশ্চেভ যখন টেবিলে তাঁর জুতা দিয়ে আঘাত করেছিলেন,তখন সবাই ভীষন শঙ্কিত হয়ে ধরেই নিয়েছিল, বিশ্ব তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে!
"উইন্ড অফ চেঞ্জ" এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ছিল যে আমরা এই বিষয়গুলো নিয়ে গান গাইবার জন্য কেবল একটি ব্যান্ড নই; আমরা সারা পৃথিবীর মনের ভাষা একটা মাত্র সুরে ধরতে চেয়েছিলাম।
আমি কি এমন কিছু লেখার চেষ্টা করছিলাম যা এত সর্বজনীন হবে? তবে আগে থেকেই সে সম্পর্কে কিছু ভাবিনি, এটা ঠিক বেরিয়ে এসেছে। এবং আমি এর আগেও যুদ্ধবিরোধী গান লিখেছিলাম — লাভ অ্যাট ফার্স্ট স্টিং-এ ‘ক্রসফায়ার’ নামে ছিল। যা পূর্ব এবং পশ্চিমের মধ্যে বসবাস সম্পর্কে ছিল। তাই কখনও কখনও,’ব্যাড বয়েজ রানিং ওয়াইল্ড’ এবং ‘রক ইউ লাইক অ্যা হারিকেন’ এর মধ্যে,আমি গভীর অর্থ সহ লিরিক্স একটি গানে মেলে ধরতে সক্ষম হয়েছি। এবং সেই গানগুলির মধ্যে একটি ছিল ‘উইন্ড অফ চেঞ্জ’। এখানে আমি বিশ্বের ব্যাপক এই পরিবর্তনের আভাসে শুধু কিছু বলতে চেয়েছিলাম এবং আমি নিশ্চিত এখানে আমার বা আমাদের কিছু বলার প্রয়োজন ছিল।

- ভোকাল 'ক্লাউস মেইন' মস্কো ১৯৮৯ সালে। মেডিসন স্কয়ারে- ২০২২ সালে বাংলাদেশ কনসার্টে ইনি পারফর্ম করেছিলেন।


-মস্কোর কনসার্টের পোস্টার

"উইন্ড অফ চেঞ্জ" গানটি অন্তর্ভুক্ত করেছিল,Europe০-এর দশকের শেষের দিকে এবং ১৯৯০-এর দশকের প্রথম দিকে পূর্ব ইউরোপের রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রতীকী সঙ্গীত বার্লিন প্রাচীরের পতন। এটি বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রিত একক যার মধ্যে চৌদ্দ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে।
উইন্ড অফ চেঞ্জ" হল পশ্চিম জার্মান রক ব্যান্ড Scorpions এর একটি গান যা তাদের একাদশ স্টুডিও অ্যালবাম, Crazy World (1990) এর জন্য রেকর্ড করা হয়েছে। পাওয়ার ব্যালাড ব্যান্ডের প্রধান গায়ক ক্লাউস মেইন দ্বারা রচিত এবং লেখা এবং কিথ ওলসেন এবং ব্যান্ড দ্বারা উত্পাদিত হয়েছিল। পেরেস্ট্রোইকার উচ্চতায় সোভিয়েত ইউনিয়নে ব্যান্ডের সফরের পর মেইন গানটি রচনা করেছিলেন, যখন সোভিয়েত ইউনিয়নে বৃহৎ আকারের আর্থ-সামাজিক সংস্কারের ঘোষণার সাথে সাথে কমিউনিস্ট এবং পুঁজিবাদী ব্লকের মধ্যে শত্রুতা কমে গিয়েছিল।
"উইন্ড অফ চেঞ্জ" অ্যালবামের তৃতীয় একক হিসাবে ১৯৯১ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত হয়েছিল এবং এটি বিশ্বব্যাপী হিট হয়ে ওঠে, ব্যর্থ অভ্যুত্থানের ঠিক পরে যা শেষ পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের অবসান ঘটায়। গানটি জার্মানি এবং ইউরোপ জুড়ে চার্টের শীর্ষে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চার নম্বরে এবং যুক্তরাজ্যে দুই নম্বরে শীর্ষে ছিল। এটি পরে ব্যান্ডের ১৯৯৫ লাইভ অ্যালবাম লাইভ বাইটস, বার্লিন ফিলহারমনিক অর্কেস্ট্রা, মোমেন্ট অফ গ্লোরি এবং তাদের ২০০১ আনপ্লাগড অ্যালবাম অ্যাকোস্টিকার সাথে তাদের ২০০১ অ্যালবামে উপস্থিত হয়েছিল।
ব্যান্ডটি "Ветер перемен" ("Veter Peremen")শিরোনামে গানটির একটি রাশিয়ান-ভাষা সংস্করণ এবং "Ventos de Cambio" "(Winds of change)" নামে একটি স্প্যানিশ সংস্করণও রেকর্ড করেছে। বিশ্বব্যাপী 14 মিলিয়ন কপি বিক্রির আনুমানিক বিক্রয়ের সাথে, "উইন্ড অফ চেঞ্জ" সর্বকালের সেরা-বিক্রীত এককগুলির মধ্যে একটি। এটি একজন জার্মান শিল্পীর দ্বারা সর্বাধিক বিক্রিত একক রেকর্ড রয়েছে৷ ব্যান্ডটি ১৯৯১ সালে মিখাইল গর্বাচেভকে তাদের একটি সোনার রেকর্ড এবং সত্তুর হাজার ডলার উপহার হিসেবে দেয়। সোভিয়েত সংবাদ সূত্রে দাবি করা হয় যে, সেই অর্থ মুলত; শিশু হাসপাতালের জন্য বরাদ্দ করা ছিল।
নীচেরটুকু ব্যান্ড সন্মন্ধে কিছু জানার আগ্রহ থাকলে পড়ুন;
স্কর্পিয়ন্স জার্মানির হানোফার শহর থেকে আগত একটি হেভি মেটাল ও রক সঙ্গীত ব্যান্ড। তারা ১৯৮০-র দশকে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে। এসময় তাদের গাওয়া রক ইউ লাইক আ হারিকেন, নো ওয়ান লাইক ইউ, স্টিল লাভিং ইউ, উইন্ড অভ চেঞ্জ গানগুলি সারা বিশ্বে জনপ্রিয়তা লাভ করে। ব্যান্ডটি বিশ্বব্যাপী ৭ কোটি ৫০ লক্ষেরও বেশি অ্যালবাম বিক্রি করেছে।

-------------------------------------------------
স্কর্পিয়নস মুলত জার্মান রক ব্যান্ড যা ১৯৬৫ সালে হ্যানোভারে রুডলফ শেনকার দ্বারা গঠিত হয়েছিল। ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠার পর থেকে, এর সঙ্গীত শৈলী হার্ড রক, হেভি মেটাল এবং গ্ল্যাম মেটাল থেকে শুরু করে। ১৯৭৮ থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত লাইনআপটি ছিল গ্রুপের সবচেয়ে সফল অবতার, এবং এর মধ্যে ছিল ক্লাউস মেইন (ভোকাল), রুডলফ শেনকার (রিদম গিটার),ম্যাথিয়াস জ্যাবস (লিড গিটার), ফ্রান্সিস বুখোলজ (বাস), এবং হারমান রেয়ারবেল (ড্রামস)। ব্যান্ডের একমাত্র ক্রমাগত সদস্য ছিলেন শেনকার, যদিও মেইন স্কর্পিয়ন্সের সব স্টুডিও অ্যালবামে উপস্থিত হয়েছে, যখন জাবস ১৯৭৮ সাল থেকে ধারাবাহিক সদস্য ছিলেন। এবং বাসিস্ট পাওয়ে মেসিভোদা এবং ড্রামার মিকি ডি যথাক্রমে ২০০৩ এবং ২০১৬ থেকে ব্যান্ডে ছিলেন।
১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে, গিটারবাদক উলি জন রথের লাইন-আপের অংশের সাথে, স্কর্পিয়ন্সের সঙ্গীতকে হার্ড রক হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল। ১৯৭৮ সালে রথের প্রস্থান এবং শেনকারের ভাই মাইকেলের সাথে স্বল্পকালীন পুনর্মিলনের পরে- ম্যাথিয়াস জ্যাবস যোগ দেন। এবং প্রযোজক ডিয়েটার ডাইয়ার্কসের নির্দেশনার অনুসরণ করে। স্কর্পিয়নরা হার্ড রক/হেভি মেটালের সাথে তাল মিলিয়ে তাদের সুর ও শব্দ সংযোজন করে, যা রক পাওয়ার ব্যালাদের সাথে মিশে যায়।
১৯৮০ এর দশকে গোষ্ঠীটি সঙ্গীত সমালোচকদের কাছ থেকে ইতিবাচক পর্যালোচনা এবং সমালোচনামূলক প্রশংসা পেয়েছিল, এবং অ্যালবাম অ্যানিমেল ম্যাগনেটিজম (১৯৮০),ব্ল্যাকআউট (১৯৮২), লাভ এট ফার্স্ট স্টিং (১৯৮৪), লাইভ রেকর্ডিং ওয়ার্ল্ড ওয়াইড লাইভ (১৯৮৫) সহ বাণিজ্যিক সাফল্য পেয়েছিল। , Savage Amusement (1988) এবং Best of Rockers 'n' Ballads (1989), যা তাদের সর্বাধিক বিক্রিত সংকলন অ্যালবাম।
স্কর্পিয়ন্সের একাদশ স্টুডিও অ্যালবাম ক্রেজি ওয়ার্ল্ড (১ ) সহ সারা বিশ্ব জুড়ে দারুন সমাদৃত স্কর্পিয়ন্স মোট ১১০ মিলিয়ন রেকর্ড বিক্রি করাছে। তারা ১৮ টি স্টুডিও অ্যালবাম, ২৭ টি সংকলন অ্যালবাম এবং ৭৪ টি একক প্রকাশ করেছে। তাদের ছয়টি একক বিভিন্ন দেশের চার্টে এক নম্বরে পৌঁছেছে। তাদের অ্যালবাম, একক, সংকলন এবং ভিডিও রিলিজ বিভিন্ন দেশে সোনা,প্ল্যাটিনাম এবং মাল্টি-প্ল্যাটিনাম স্ট্যাটাসে২০০ বার পৌঁছেছে।
রোলিং স্টোন স্কর্পিয়ন্সকে "হেভী মেটাল ব্যান্ডের নায়ক" বলে বর্ণনা করেছেন এবং এমটিভি তাদের "অ্যাম্বাসেডরস অফ রক" বলে অভিহিত করেছে"রক ইউ লাইক আ হারিকেন" সহ ভিএইচ ১ -এর ১০০ গ্রেটেস্ট হার্ড রক গানের তালিকায় ১ নম্বরে। "স্টিল লাভিং ইউ" সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যালাডের মধ্যে ২২ তম স্থান পেয়েছে। তারা তিনটি ওয়ার্ল্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ড, হলিউড রক ওয়ালের তারকা এবং রক অ্যান্ড রোল হল অফ ফেমের স্থায়ী প্রদর্শনীতে উপস্থিতির মতো মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার পেয়েছে। ২০১৫ সালে, গ্রুপটি তার ৫০ তম বার্ষিকী উদযাপন করেছিল জাঁকজমকভাবে।
গঠন এবং প্রাথমিক ইতিহাস অতিসংক্ষিপ্ত (১৯৬৫-১৯৭৩)
ব্যান্ডের রিদম গিটারিস্ট রুডলফ শেনকার ১৯৬৫ সালে ব্যান্ডটি চালু করেন। প্রথমে,ব্যান্ডটিতে মার্সিবিট প্রভাব ছিল এবং শেনকার নিজেই কণ্ঠ সামলাতেন। জিনিসগুলি ১৯৭০ সালে একত্রিত হতে শুরু করে যখন শেনকারের ছোট ভাই মাইকেল এবং কণ্ঠশিল্পী ক্লাউস মেইন ব্যান্ডে যোগ দেন। এই লাইন-আপের মাধ্যমে তারা ১৯৭২ সালে একটি সঙ্গীত প্রতিযোগিতা জিতেছিল এবং একটি গানের জন্য দুটি গান রেকর্ড করেছিল যা কখনও সিসিএ লেবেলে প্রকাশিত হয়নি।

রেফারেন্সঃ উইকি, নিউইয়র্ক টাইমস, প্রাভদা, ইউটিউবের ডকুমেন্টারি ও ভিডিও ক্লিপ সহ অসংখ্য ওয়েব সাইট।

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০২২ সকাল ৮:৫৬
১৭টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×