ব্লগার জুলভার্ন মানে হুমায়ুন কবির ভাই গতমাসে যখন স্বেচ্ছায় ব্লগ-গৃহ ত্যাগ করলেন তখন ব্লগে একটা হুলস্থূল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। আমার দুর্ভাগ্য যে, আমি তখন ব্লগে নিয়মিত হতে পারছিলাম না। মাঝে মধ্যে ফাঁকে কোকরে একটু খানি চোখ বুলিয়ে সারাক্ষণ তাঁকে নিয়ে আলোচনা শুনতে পাই।
ব্লগের গুণী ও নিয়মিত ব্লগারদের বন্দুকের নল নামে-বেনামে কিংবা আকারে ইঙ্গিতে একজনের দিকেই তাক করছিল। যিনি এই দোষে দ্ব্যার্থহীনভাবে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। তিনি এঁর আগেও বহুবার এমন পরিস্থিতির সামাল দিয়ে নিজেকে বুলেটপ্রুফ ভেবে প্রথমে বিষয়টাকে গা না করে পরে মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে এসে নিজেকে ভোলা-ভালা নির্দোষ হিসেবে জাহির করে যুৎ করতে না পেরে শেষে সাফাই গেয়ে আস্ত একখানা পোষ্ট লিখে ফেলেন।
তবে তাঁর ও তাঁর ভক্তকুলের লম্ফ ঝম্পতেও শেষ রক্ষে হোল না। ফের জেনারেলের খড়গে কাটা পড়লেন তিনি।
ব্লগার জুলভার্ন এঁর ব্লগ গৃহ ত্যাগ আমার জন্য ছিল বড় ধরনের কষ্টদায়ক সারপ্রাইজ! আর যাই হোক আমি ভেবেছিলাম, তিনি এভাবে গৃহত্যাগ করার আগে আমাকে পাশে ডেকে নিয়ে তিনি ফিস ফিস করে দু’চার কথা বলবেন। কেননা তাঁর ফের ফিরে আসার ব্যাপারে আমি একটুখানি উদ্দীপ্ত করেছিলাম বলে নিজের প্রতি এটুকু আস্থা ছিল।
তাঁর এভাবে চলে যাওয়া আমি একদম মেনে নিতে পারলাম না বলে হা-হুতাশ না করে চুপ চাপ বসে রইলাম।
ব্লগ ছোট পরিসব বাঁ বৃত্তে বন্দী হয়ে যাচ্ছে দিনে দিন। সবাই সবার নামে ধামে চেনে। কেউ কেউ ফেসবুকেও বেশ ঘনিষ্ঠ। প্রতিদিন ব্লগিং করা কেউ চলে গেলে একটু হুলস্থূল হবেই। জটিল ভাই জটিল কোন কাণ্ডকারখানা করতে পারেননি বটে, সাসুম সবার মনে যায়গা করেননি বলে হয়তো তাদের নিয়ে ধু-ধুম্বার কাণ্ড ঘটেনি। কিন্তু বয়োজৈষ্ঠ, মুক্তিযোদ্ধা,অভিজাত ট্যাগ-যুক্ত অসাধারণ ভাষাজ্ঞানে ঋদ্ধ বিবিধ বিষয়াদি নিয়ে লেখা আর মন্তব্যে সু-পটু সরস্বতীর আশির্বাদপ্রাপ্ত প্রায় সবার সাথে দারুণ মিথস্ক্রিয়ার এমন একজন দুর্দান্ত ব্লগারের স্বেচ্ছা বিদায়ে ব্লগ ও ব্লগারদের ভীষণ নাড়া দিল।
আমার বন্ধু হায়দার বলেছিল একবার, তপন ভাই যে দিনকাল পড়েছে- মানুষ আর এখন কারো সুনাম তো করতেই চায় না বদনাম করেও কথা খরচ করতে চায়না। সবাই নিজের ঢোল পেটাতে ব্যস্ত! তাই ভাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এখন থেকে নিজের সুনাম তো বটেই নিজের বদনামও নিজেই করব!
আগুন যেমন দপ করে উঠল জ্বলে তেমন দুম করে নিভেও গেল। সবাই সবাইকে নিয়ে ফের ব্যস্ত হয়ে গেল- তাঁর কথা আর তেমন করে কেউ বলেনা।
আমাদের এখানে অতি সল্প সংখ্যক নিজের ঢোল পেটানো আর্য ব্লগার আছেন। যারা দীর্ঘদিন বিদেশে থেকে বিদেশী কেতায় শিক্ষিত- বড্ড বেশী স্পর্শ কাতর ( আগেই বলেছি সবাই নয় –গুটিকতক)। আমার মত নেটিভদের ব্লগিং দেখে নিয়মিত নাক সিঁটকান। যাই লিখি যে ভাষায় যে ভঙ্গীতেই লিখি না কেন সেটা তাদের পছন্দ হয় না। একমাত্র নিজেদের লেখা ছাড়া আর কিছুই পছন্দ হয় না তাদের। এদের ভয়ঙ্কর ছোড়া বিষাক্ত তীরে বিদ্ধ হয়ে কত ব্লগার নীরবে প্রস্থান করেছে তাঁর ইয়ত্তা নেই- দু’চারজন সরব হয়ে ভীষণ মর্মবেদনা নিয়ে ব্লগ ত্যাগ করতে চাইলেই তবেই আমরা ধর্তব্যের মধ্যে আনি।
ঈদের ছুটিতে গুরুগম্ভীর কথা থাক। আসুন একখান ব্লগের স্বর্নালী যুগের আরেকখানা কৈতক শুনি। উল্লেখ্য এই কৈতকখানা শুধুমাত্র নিছক হালকা মজার জন্য-এর অন্য কোন উদ্দেশ্য নেই (প্রাপ্ত বয়স্ক নয় প্রাপ্ত মনস্কদের জন্য)-
ইংরেজ শাসন আমলের রাজস্থানের মরুভূমিতে একটা দুর্গ। সেইখানে সেনাপতি হয়ে এসেছে জাত্যভিমানী এক ইংরেজ যুবক। এসেই শুরু করছে হম্বি-তম্বি। এরে ধমকায় ত ওরে মারে। কোনো কিছু তার পছন্দ হয় না।
ইন্ডিয়ানদের রুচি নাই। চোর-বাটপার সব কয়টা। প্রথম দিনেই দুর্গ পরিদর্শনের সময় সেনাপতি দেখে একটা উট বাধা।
"ওই হারামজাদা। উট- এইটা কিসের জন্য? " একজন কাঁচুমাঁচুভাবে বলল " আমরা তিন-চার মাস একটানা দুর্গে থাকি। এইখানে কোনো মেয়ে নাই। সৈনিকরা মাঝে মাঝে খুব একা বোধ করলে এই উট ব্যাবহার করে।
"সেনাপতি তো bloody indian দের কথা শুনে থ!! ... বাচ্চারা উটকে "কামে" লাগায়...ছি ছি ছি। সে কড়া নির্দেশ দিলো যে এরপর কোনো নেটিভ হারামজাদা উট ব্যাবহার করলে তাকে ঝুলিয়ে পিটানো হবে।
যাই হোক তার কড়া শাসনে দুর্গে নিয়ম-শৃঙ্খলা ফিরে আসলো। সবাই সোজা। সব কিছু ঠিকমত চলছে। মাসের পর মাস যাচ্ছে।
এক সময় সেনাপতির একা একা লাগা শুরু করল। শালার একটা মাইয়া দেখি নাই গত চার মাস। আরো এক মাস গেলো। একদিন সকালে সে হুকুম দিলো, এই কে আছিস,- উটটা নিয়ে আয় আমার তাবুতে।
তাড়াহুড়ো করে সবাই ঠেলে ঠুলে উটকে তাবুতে পাঠাল। কিছুক্ষণ ধস্তা-ধস্তি হল। উটের চিৎকার শুনা গেল। এরপর সেনাপতি ভীষণ ঘেমে-নেয়ে প্যান্টের চেইন লাগাতে লাগাতে বের হয়ে আসল।
বড় বড় চোখ করে bloody indian গুলো তাকিয়ে আছে। এদের দিকে তাকিয়ে সেনাপতি বলল,
- খুব খাটুনির কিন্তু খারাপ না,তোরাও কি এইভাবেই ব্যাবহার করিস?
- না হুজুর। আমরা এইটাতে চড়ে মাইল দুয়েক দুরের একটা শহরে মেয়ে-মানুষের কাছে যাই।
--------------------------
পরিশেষে ব্লগার জুলভার্ন ভাই এঁর ফিরে আসার অপেক্ষায়…
• লেখার বিষয়বস্তু মোটেই ক্যাচালের উদ্দেশ্যে নহে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ১০:৩৪