আজ শুক্রবার! এমনিতেই ব্লগে ব্লগারদের উপস্থিতি বেশ কম। তাঁর উপরে ছুটির দিনে সেটা তলানিতে এসে ঠেকবে; তার ভবিষ্যতবাণী করতে জ্যোতিষী হবার প্রয়োজন নাই। আর এই দিনেই আমি সব ব্লগারদের অংশগ্রহণের অনুরোধ নিয়ে এমন একটা বিষয় নিয়ে আসলাম কেন? এর উত্তরঃ উপায় নেই- আজকেই সারাদিন ঘুরে ফিরে ব্লগে থাকতে পারব। সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে জীবন জীবিকার তাগিদে মহামূল্যবান সময়কে কর্মঘণ্টা হিসেবে বিক্রি করব। তখন ব্লগে স্থির হয়ে বসা কষ্ট হবে।।
খবর, বাংলাদেশ প্রতিদিন। ৪ মে ২০২৩
সুপ্রিয় ব্লগার, আসুন প্রথমে খবরটা দেখে নিই।
বেশি মানুষ গেলেও রেমিট্যান্স আসছে কম ঈদের মাসেও প্রত্যাশিত প্রবাসী আয় আসেনি ২০ লাখ এর বেশি মানুষ গেলেও রেমিট্যান্স আসছে কম ঈদের মাসেও প্রত্যাশিত প্রবাসী আয় আসেনি ২০২২-২৩ অর্থবছরের শুরুতে প্রতি মাসে ২০০ কোটি ডলার অতিক্রম করলেও দুই মাস পরেই নেমেছে ১৫০ কোটির ঘরে জানুয়ারি মাসে ১৯৫ কোটি ডলার পাঠান প্রবাসীরা। হুন্ডির কারণে ফেব্রুয়ারিতে নেমে এসেছে ১৫৬ কোটিতে বেপরোয়া হুন্ডিতে কমছে রেমিট্যান্স ওই মাসে ৭ কোটি ডলার বেড়ে ১৫৯ কোটি ডলার দেশে আসে।
টানা ছয় মাস পতনের পর চলতি বছরের শুরুতে আবার বাড়ে রেমিট্যান্স। এ বছরের জানুয়ারি মাসে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৯৫ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন। তবে ফেব্রুয়ারিতে গিয়ে আবার হুন্ডি ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। এতে আবারও দেড় শ কোটি ডলারের ঘরে নামে প্রবাসী আয়। ওই মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে আসে ১৫৬ কোটি ডলারের প্রবাসী আয়। তবে পরের মাস মার্চে প্রবাসী আয় আবার ২০০ কোটি ডলার অতিক্রম করে। সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা ছিল ঈদুল ফিতরের কারণে এপ্রিল মাসেও চাঙা থাকবে প্রবাসী আয়। কিন্তু হুন্ডি ব্যবসায়ীদের দেওয়া উচ্চ রেটের কাছে হেরে যান প্রবাসীরা। হুন্ডির মাধ্যমে দেশে অর্থ পাঠানোর কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ১৬৮ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।
*অবৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানো বন্ধ করতে হলে ডলারের রেট কার্ব মার্কেটের রেট ম্যাচ করে দিতে হবে। দামের পার্থক্য থাকলে হুন্ডি বেড়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হুন্ডি বন্ধ করা অনেক কঠিন। বেপরোয়া হুন্ডি ব কারণে ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করেও প্রত্যাশিত প্রবাসী আয় দেশে আসেনি। *
***
হুন্ডি হুন্ডি হুন্ডি বেপরোয়া হুন্ডি! কয়েক দফায় ডলারের দাম বাড়িয়ে, নানাভাবে ধর পাকড় করে, নজরদারি, প্রবাসীদের কাছে বিনীত অনুরোধ করে, ভর্তুকি সহ নানা রকম প্রলোভন দেখিয়েও হুন্ডির দৌরাত্ম বন্ধ করা যাচ্ছে না। কেন? দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে নেমে যাবার জন্য কি এককভাবে হুন্ডি দায়ী? হুন্ডি কেন হয়? এর পেছনের মুল কারিগর কারা? হুন্ডি আর অর্থ-পাচার কি এক?
কোনটা আমাদের বেশী সর্বনাশ করছে হুন্ডি না অর্থ পাচার?
প্রিয় ব্লগার। আমি কোন অর্থনীতিবিদ নই- অর্থনীতি নীতি, বৈদেশিক নীতি, আন্তর্জাতিক মুদ্রা ব্যবস্থা নিয়ে আমার জ্ঞান ভীষণ রকম সীমিত। ব্লগে অনেকেই আছেন যারা এই বিষয়ে আমার থেকে অনেক অনেক বেশী জানেন। আসুন না যে যতটুকু জানি এই বিষয় নিয়ে একটু আলাপ।
হতে পারে আমি প্রশ্ন-ফাঁস জেনারেশনের একজন। মাথায় ডোডো পাখির বুদ্ধি ধরি; এখানে তেমন ধারার কিছু প্রশ্ন হলে বা আমার লেখায় কোন ভুল থাকলে সরাসরি জানাবেন, কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব নয়।
আমার প্রশ্ন;
১।এক বছরে কেন বিশ লাখ নতুন কর্মী অন্য দেশে যাবার পরেও রেমিট্যান্স আশানুরূপ বাড়েনি?
২। হুন্ডি কি? এবং হুন্ডি কেন হয়?
৩। হুন্ডির মাধ্যমে কিভাবে টাকা পাচার হয়?
৪। ডলারের দাম বাড়ালে কি হুন্ডি কমে যাবে বা বন্ধ হবে?
৫। হুন্ডির কারনে কিভাবে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়? যে দেশ থেকে অর্থ পাঠানো হয় সে দেশ কি ক্ষতিগ্রস্ত হয়?
৬। হুন্ডি আর অর্থ-পাচার কি এক?
৭। অর্থ পাচারের সবচেয়ে বড় মাধ্যম কি?
৮। কিভাবে আমরা না জেনে বুঝে প্রতিনিয়ত অর্থ-পাচার করছি?
৯। কার্ব মার্কেটে অবৈধ ডলার বা অন্য বৈদেশিক মুদ্রা কোত্থেকে আসে?
১০। ডলার ব্যতীত অন্য বৈদেশিক মুদ্রা যেহেতু দেশের বাইরে নেয়া ও আসা অবৈধ তাহলে কার্ব মার্কেট বিশেষ করে ‘ফরেন মানি এক্সচেঞ্জে’ কিভাবে অন্য সব মুদ্রার লেনদেন হয়?
১১। ‘ফরেন মানি এক্সচেঞ্জ’ ( শুধু মাত্র ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বৈধ উপায়ে যদি লেনদেন হয়) বন্ধ করে দিলে কি উপকার হবে বা অপকার হবে।
১২। ‘ফরেন মানি এক্সচেঞ্জে’ বৈধ কিংবা অবৈধ উপায়ে লেন দেন হচ্ছে কিনা এ নিয়ে কোন কড়া নজরদারির ব্যবস্থা আছে কি না?
১৩। দেশের বাইরে বৈধ উপায়ে কোন টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা আছে কি?
১৪। একজন নাগরিক তাঁর বৈধ অর্থ দিয়ে অন্য দেশে সম্পত্তি কিনতে পারেন কি? যদি না হয় তবে এটা কি যৌক্তিক?
১৫। ইপিজেড থেকে বিদেশী ব্যবসায়ীরা কি উপায়ে তাদের লভ্যাংশ নিয়ে যায়? তারা কি কি সমস্যার সম্মুখীন হন?
১৬। বৈদেশিক কোন কর্মী এ দেশে আয় করে কোন উপায়ে তাঁর অর্থ দেশে প্রেরণ করেন?
১৭। সরকার বা প্রশাসন কি অর্থ-পাচার রোধ করতে পারেন।
১৮। কি উপায়ে হুন্ডি ব্যবসা বন্ধ হতে পারে?
১৯। হুন্ডি ব্যবসার মুল হোতাদের প্রশাসন কি চিনে বা জানে?
২০। এ দেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচার মূলত কারা করে?
২১। কোন কোন দেশ হুন্ডির জন্য ক্ষতির সম্মুখীন এবং কেন?
অনেকগুলো প্রশ্ন করে ফেললাম। এই প্রশ্নগুলোর বেশীরভাগ উত্তর মোটামুটিভাবে আমার কাছে আছে। তবে পুরোপুরি অথেনটিক নয়, কিংবা আমার অভিজ্ঞতালব্ধ অথবা মনগড়া। ব্লগারেরা যে যতটুকু জানেন যেভাবে জানেন দয়া করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবেন। এবিষয়ে অথেনটিক কোন রেফারেন্স থাকলে জানাবেন। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাবার জন্য শুধু হুন্ডিকে দোষারোপ করে যেভাবে দেশের রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, সাংবাদিক বুদ্ধিজীরিরা বিবৃতি দিচ্ছেন সেটা কতটা যৌক্তিক না শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা।
আমি জানি এই বিষয়ে সার্ভে করে ব্লগের ক্ষুদ্র গণ্ডি থেকে দেশের মানুষের চিন্তাধারা পালটে দিতে পারব না। হয়তো সেভাবে কেউ জানবেও না। তবুও সচেতন কিংবা অচেতন নাগরিক হিসেবে নিজেরা-তো মুল বিষয়টা জেনে নিলাম।
ব্লগারদের মতামত ও রেফারেন্স সহ আমার জানা বিষয় নিয়ে পরবর্তীতে বেশ বড় পরিসরে লেখার ইচ্ছে রইল। কারো কোন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই করবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৫:১৯