(এই নিবন্ধটি যেভাবে যা লিখতে চেয়েছিলাম সেভাবে লিখতে পারলাম না। বড্ড বেশী নিরপেক্ষ/ নিষ্ঠুর দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে লিখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু লেখার মাঝে বারবার ফিলিস্তিনি ক্ষতবিক্ষত নারী শিশু বৃদ্ধ আর নিরীহ মানুষের আর্তনাদ কানে ভেসে আসছিল- চোখের সামনে ভেসে উঠছিল তাদের ভীষন অসহায় রক্তাক্ত মুখ। খুব অসহায় বোধ করছিলাম! তাইতো শেষদিকে গিয়ে লেখাটা বেশ এলোমেলো হয়ে গেল!)
প্রসঙ্গ 'গাজা'~ আসেন একটু অন্যভাবে দেখি। ১
আমরা ক'জনে ইতিহাস ঘেটে দেখেছি যে, এদেশে আসলে কত হাজার বা কত লক্ষ বিহারী উদ্বাস্তু প্রবেশ করেছিল? তাদের আসল সঙ্খ্যাটা কত ছিল? কেন আমাদের মত একটা গরীব ক্ষুদ্র দেশ শুধুমাত্র ধর্মীয় কারনে তাদের দায় গ্রহন করলাম। মানবতা ও আবেগের বশবর্তী হয়ে তাদের হায় বহন করে আসলে আখেরে আমরা কি পেয়েছি?
আজ ৭৬ বছর পরে এমন প্রশ্ন বর্তমান প্রজম আমাদের কাছে করতেই পারে। আমরা কি আসলে ভুল করেছিলাম? নিশ্চিতভাবে এটা ছিল পুরোপুরি রাজনৈতিক একটা সিদ্ধান্ত! পশ্চিম পাকিস্তান খুব সুক্ষভাবে পুরো দায়টা হামারা দেশ, জাত ধরম বলে আমাদের কাধে পুরো দায়টা চাপিয়ে দিয়েছে। প্রথমে উইকি থেকে খুব ছোট করে ডাটাটা নিয়ে আসি;
~ বাংলাদেশের বিহারী রিফিউজি ক্যাম্প! এটা একটা বৃহত্তম মুসলমানদের ক্যাম্প।
উইকিঃ তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের করা ষাটের দশকের শেষাংশে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, পূর্ব পাকিস্তানে আসা উর্দুভাষী বিহারীর সংখ্যা ২০ লক্ষ। পূর্ব পাকিস্তানের স্থানীয় মানুষের ভাষা ছিল বাংলা। সাংস্কৃতিক ভিন্নতাও ছিল। ফলে সব মিলিয়ে এই কয়েক লক্ষ লোকের আগমন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙ্গালীদের কাছে আগন্তুকের মত ছিল। বিহারীরা জাতিগত উর্দুভাষী ছিলেন এবং মূলত পাকিস্তানপন্থী অবস্থান বজায় রাখেন, পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীকে সমর্থন করেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বাংলা ভাষা আন্দোলনের বিরোধিতা করেন।
২০ লাখ!! ভাবা যায়!!! এখনো এদেশে কাগজে কলমে ২.৫০ লাখের উপরে বিহারী উদ্বাস্তু আছে। বাকিগুলো তাহলে কই গেল? কিছু পাকিস্তানে, কিছু অন্যদেশে আর কিছু মিশে গেছে মুল স্রোতে। এদের কাছ থেকে আমরা আদপে কি পেয়েছি?
কিছুই না। উল্টো এরা আমাদের ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার বিরোধী ছিল। এখনো আপনি মিরপুর আর মোহাম্মদপুর ক্যাম্পের আশেপাশে একজন বিহারির সাথে উচুগলায় কথা বলার সাহস পাবেন না। একজন বিহারী ভিক্ষুককে ধমক দিয়ে দেখবেন- কি গালির তুবড়ি ছোটে।
এদেরকে তাদের স্বদেশ নেয়নি- কোন মুসলিম বিশ্ব কোন দিনও এদের নিয়ে কথা বলেনি। সারা পৃথিবীর কোন মুসলমান কোন জিহাদী জোশ দেখায়নি যার যারা মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে ভুলিয়ে ভালিয়ে এদের আমাদের জিম্মায় রেখেছিল তারাও ভুলে গেছে।
পৃথিবীর এরা হইল কাঙ্গালী আর মিসকিন মুসলিম।
***
এরপর ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে ১৯৭১ আমরা নিজেরাই উদ্বাস্তু হলাম! বিশ্বের ইতিহাসে এই প্রথম মনে হয় কোন উদ্বাস্তু এত দ্রুত তার স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করতে পেরেছিল। কিছু ওখানে থেকে গেছে সত্য তবে সিঙ্ঘভাগ ফিরে এসেছে।
তবে বিহারিদের এমন অত্যাচারের পরেও আমাদের জ্ঞান চক্ষু উন্মোচন হইল না। আমরা ফের আরেকদল ভুখা নাঙ্গা কাঙ্গাল মিসকিন বিতারিত ধর্মের ভাইবোনদের দুঃখে আকুল হয়ে কেদে কেটে তাদের আশ্রয় দিলাম। নিজের পেটে ভাত নাই পরনে কাপড় নাই। আমরা ১২/১৫ লাখ লোকরে আগপিছু না ভেবেই মানবতা ও ধর্মীয় কারনে আশ্রয় দেই। কিন্তু এখানেও সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ নিরব।
~ বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের বিশ্বের সবচেয়ে বড় রিফিউজিদের ক্যাম্প। এটাও মুসলমানদের ক্যাম্প।
তাদের কেউ জিহাদ করতে আসে না। আমাদের বাঙ্গালী যেই সকল ভাইয়েরা সিরিয়া ইরাক আফগান আর ফিলিস্তিনে জান দেবার জন্য উন্মুখ হয়ে দিন রাত ধ্যান করেন তারে কেউ মায়ানমারে যেতে চান না। এই বারো আর আগের বিশ লাখ মুমিন মুসলিম বান্দার জন্য বশ্ব মুসলিম উম্মার কোন ভাবনা চিন্তা নাই। সবার সব ভাবনা শুধু আরবীয়দের নিয়ে।
যখন একজন রোহিঙ্গা বাচ্চাকে জলন্ত আগুনে ছুড়ে ফেলা হয়, যখন গর্ভবতী রোহিঙ্গা নারীর পেট কেটে বাচ্চা বের করে উল্লাস করা হয়। যখন রোহিঙ্গা যুবকদের পিঠমোড়া করে বেধে উবু করে বসিয়ে আগুন দিউএ পুড়িয়ে মারা হয় তখন এসব মুসলিমদের জিহাদী জোশ আসে না।
কেন? এর কোন উত্তর আছে?
আরবীয়রা হইল নবীর খাস পেয়ারের বান্দা। তাদের চেহারাইয় মাশাল্লাহ চমৎকার নুরানি জেল্লাহ। আরবীয় ললনারা যখন আরবীয় নারীদের সাক্ষাৎ হুরপরী মনে হয়। জান বাঁচাইলে অদের বাঁচাইতে হবে। এইসব আঙ্গালী কাঙ্গালী মুসলমানদের বাঁচাইলে হবে। আজাইর্যা নিজের জান নিয়া টানাটানি ক্যান।
****
সারা ফিলিস্তিন জুড়ে ঘুরে বেড়ায় সব জাঁদরেল আরবীয় ফটোগ্রাফার! সবার সপ্ন থাকে দুর্দান্ত একটা স্ন্যাপ নেবার। তবে সেই বিশেষ শটটি যদি একটা শিশুর হয় তাহলে সারা বিশ্বে আলোড়ন তুলবে- সে নাম কামাবে। ফটো সাংবাদিক হিসেবে এলিটদের কাতারে জায়গা হবে। বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ন এলাকা সেটা। চারিদিকে থিক থিক করছে শিশুরা। সবগুলো যেন দেবদুতের মত চেহারা। এমন চেহারার রক্তমাখা ভয়ার্ত বেদনার্ত চেহারা মিডিয়ায় ছাপা মাত্র পাঠক গিলতে থাকে। অল্প একটু জায়গায় কত লক্ষ মানুষ। ফিলিস্তিনিদের উপর নিয়মিত আক্রমন করে চলছে ইসরায়েল। প্রায় প্রতিদিনই ছোট বড় আক্রমনের খবর মেলে। আর তখন সুযোগ আসে ফটোগ্রাফির। যুবক ছেলের লাশ নিয়ে মায়ের আর্তনাত। সতীর্থদের লাশ নিয়ে উন্মত্ত্ব মিছিল। বাবার কোলে শিশুর লাশ। হাসপাতালে আহত শিশু । ধ্বসে পড়া ভগ্নস্তুপে কান্নারত আহত শিশু। আহা কত শত তাদের সাবজেক্ট। ওরা সব নিঃশ্বংস মানুষগুলো ঘুরে বেড়ায় পাড়া মহল্লা জুড়ে তাদের প্রয়োজন সাবজেক্ট। ওখানকার নেতাদের প্রয়োজন এদের। তারা এদের তোয়াজ করে, এদের কল্যানেই সারা বিশ্বের মানুষ জানছে কি ভয়ঙ্কর সবা অত্যাচারই না হচ্ছে এখানে।
~ গাজা স্ট্রিপ
১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী যুবকেরা ঘুরে বেড়ায় জোটবদ্ধ হয়ে। পড়াশুনা করলে আছে না করলে নেই। কাজ নেই দায়িত্ব নেই। জীবনের শুরু এক উন্মুক্ত জেলখানায়। পৃথিবীতে এমন জেলখানা আর একটাও নেই। তাই এদের জীবন যাপন আমাদের কল্পনা করাটা বেশ জটিল! পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ন এই জায়গার উন্মুক্ত প্রতিটি ইঞ্চি দিন রাত চব্বিশ ঘন্টা ইসারাইলের নজর দারিতে থাকে। এর আকাশে সারাক্ষন নজরদারি বেড়ায় শত শত গোয়েন্দা ড্রোন। কোথাও একটু বেতা- বেচাল দেখলেই মুহুর্তেই উড়ে আসে সর্বাধুনিক হেলিকপ্টার আর স্থলে সাজোয়াযান। ভয়ঙ্কর সব মারনাস্ত্র আর হাইটেক যন্ত্রপাতি হাতে বিশেষ পোশাকে সজ্জিত হয়ে ওরা হামলে পড়ে অতর্কিতে কোন পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই যেকোন সময় যেকোন বাড়িতে, মসজিদে,ক্যাম্পে, স্কুলে। তাদের অস্ত্র পোশাক যন্ত্রপাতি এতটাই উঁচু টেকনোলজিক্যাল যে তা বর্তমান বিশ্বের সবচাইতে শক্তিধর দেশের সর্বাধুনিক সামরিক বাহিনীরও কল্পনারও অতীত। ভাগ্যের কি পরিহাস কিছু নিরীহ প্রায় নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে ব্যাবহৃত হচ্ছে সেগুলো।
যে কোন ঘর স্কুল মিশন মসজিদ ক্যাম্প-এর দরজা লাথি মেরে গুলি করে কিংবা বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়ে ভিতর থেকে টেনে হিচড়ে বের করে নিয়ে যাচ্ছে সন্দেহ ভাজনদের। নারীরা একহাতে বোরকা সামলাতে সামলাতে ওদের অভিসম্পাত দিচ্ছে আর চড় থাপ্পড় মেরে আচড়ে কামড়ে নিজের প্রানপ্রিয় মানুষটাকে ছাড়ানোর চাষ্টা করে। যুবকেরা এদিক ওদিক ছুটে পালায়। আড়াল থেকে কেউ ঢিল ছোড়ে পটকা ফোটায়- খিস্তি খেউড় করে।
এই ওদের জীবন। বড় হয়েছে হত্যা মৃত্যু আর নির্মমতা দেখে। মানুষ আর পশুর রক্তের মধ্যে পার্থক্য জানে না। প্রায়শই ঘুম ভাঙ্গে ভারি অস্ত্র না হয় বোমাবর্ষনের শব্দে। তিন বছর বয়স থেকে ঠিল ছোড়া শিখেছে এরা। এইসব অলি-গলিতে ইসরাইলি সৈনিকদের দেখলেই খিস্তি খেউড় করে। সুযোগ পেলে আড়াল তেকে ঢিল ছোড়ে। কাউকে কখনো মোকা মত একা পেলে তার জান তামা তামা করে দেয়। এরকম বহুবার ঘটেছে দলছুট ইহুদী বা ইসরাইলী সৈনিককে বাগে পেয়ে ফিলিস্তিনি ছেলেরে কিভাবে নাস্তানাবুদ করেছে তার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে মুহুর্তে। সেই নিয়ে আড্ডা হয়েছে মজা হয়েছে গাল গল্প হয়েছে বহুদিন। আর সেটা নারী সৈনিক হলেতো কথাই নেই। এই প্রায় বন্দী জীবনে একটু আধটু মজা নিয়ে আসে এইসব খবরই। ওদের নিজেদের মধ্যে অনেক ধরনের সঙ্কেত আছে- কখনো শিশ দিয়ে, কখনো মুখ দিয়ে অন্য কোন শব্দ করে কখনো শরিরী অঙ্গ ভঙ্গীতে প্রকাশ করে; মুহুর্তে পুরো তল্লাটের সবাই বুঝে ফেলে কি হচ্ছে বা হবে। যদিও এই সঙ্কেতগুলো নিয়মিত পাল্টায়। সাথের কোন সঙ্গী সাথে ইসরাইলানদের হাতে ধরা পড়ে গেলে ওরা রাতারাতি সব সঙ্কেত পালটে ফেলে। অবসরে থেকে ওদের মাথায় নতুন নতুন বুদ্ধি চাপে। কেউ কেউ নতুন করে দেশ নিয়ে ভেবে। কেউ মনে করে তাদের অগ্রজদের ভাবনায় ভুল ছিল।
ওদিকে সারাবিশ্বের মুসলিম সন্ত্রাশি সংগঠনগুলো টোপ নিয়ে বসে থাকে; আই এস আই, তালেবান, হিজবুল্লাহ, হুদি। তাদের প্রয়োজন এমন বেকার, বুকে আগুন নিয়ে বসে থাকা,ভয় ডর হীন, নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে যে কোন কাজে ঝাপিয়ে পড়ার জন্য উদ্গ্রীব, বাইরের পৃথিবীকে খুব কম জানা, বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বাহিনীর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকা এরকম যুবশক্তি আর কোথায় খুজে পাবে তারা। তাইতো এরা যেখানেই আছে সেখানেই থাক – পুড়ে জ্বলে খাটি সোনা হোক!
ছোট ছোট উঠতি বয়সের সেই দলগুলোর সবচেয়ে একরোখা দুর্ধর্ষ, প্রতিভাবান ছেলেটাকে টার্গেট করে অফার আসতে থাকে।
হামাস এদের আগেই টার্গেট করে না। অন্যেরা করে। পি এল ওর কিছু অংশ সহ অনেক ছোট বড় সংগঠন আছে যারা ইসরাইলীদের অর্থদ্বারা মদদপুষ্ট! এরা ওদের এজেন্ডা মাফিক কাজ করে। এদের কাজ মোটামুটি অন্য দলের খাস কর্মী হয়ে ঢুকে ভিতরের খবর বের করে আনা। পুরো ফিলিস্তিন জুড়ে কেউ কাউকে বিশ্বাস আর আস্থার বড় অভাব। কে কখন ভোল পাল্টায় কোন ফাদে পড়ে বিকিয়ে যায় বলা মুশকিল- ইসরাইলের দুর্ধর্ষ গোয়েন্দারা এমন সব ফাঁদ পাতে, সে ফাদে সহজ সরল ফিলিস্তিনিরা আটকে যায়। এমন সে ভয়ঙ্কর ফাঁদ আর বিশাল প্রলোভন তাদের তখন আর উপায় থাকেনা বিশ্বাসঘাতকতা করা ছাড়া।
যারা ইসরালিদের পক্ষে কাজ করে তাদের বিপদে আপদে ইসরাইলীরা সহযোগীতা করে। কোনমতে বেঁচে নিজের অবস্থানের খবর জানান দিতে পারলে তাকে উদ্ধারের জন্য মরিয়া হয়ে পড়ে। এটা তাদের একটা ট্রিক- আস্থা আর বিশ্বাস অর্জনের।
মুসলিম সমাজে বিশ্বাস ঘাতকতার শাস্তি সবচাইতে নির্মম। এর কোন ক্ষমা নেই। বিশ্বাসঘাতক হিসেবে যে একবার ‘মার্কিং’ হয় কিছু মানুষের জীবনের বিনিময়ে হলেও তাকে হত্যা নির্ধারিত হয়ে পড়ে। সেজন্য ইসরাইলী গোয়েন্দারা বেশিরভাগক্ষেত্রে তাদের পরিচয় লুকিয়ে ফেলে। এটা বিশ্বাস করা কঠিন তবে ‘মোসাদ’ পারেনা এমন কোন কাজই সম্ভবত নেই। রাতারাতি তারা তাদেরকে তাদের যে কোন বন্ধু রাষ্ট্রের নাগরিক করে গ্রীন কার্ড ভিসা দিয়ে অবিশ্বাস্য অকল্পনীয় সময়ের মধ্যে একেবারে ভিন্ন পরিচয়ে তাকে পাঠিয়ে দেয়- সাথে তার পরিবারকেও কখনো।
এমন নজরদারি আর গোয়েন্দা তৎপরতার মধ্যে ফিলিস্তিনী যুবকেরা তবে ঙ্গস্ত্র চালনার প্রশিক্ষন নেয় কিভাবে। হালকা অস্ত্র পুরো গাজা আর পশ্চিম তীরেই ডাল ভাত। যে কেউ চাইলেই যোগার করতে পারে। ভারী অস্ত্রে জন্য বর্ডার ক্রস করতে হয়- আর ভয়াবহ একটা গেইম চলে সেখানে। ইসরালীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিভাবে তারা বর্ডার ক্রস করে???
মনে রাখতে হবে পৃথিবীর সবচাইতে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তাবেষ্টিত কারাগার থেকেও কয়েদী পালানোর রেকর্ড আছে। গাজার একপাশের বর্ডার কন্ট্রোল করে ‘মিশর’। আর ‘হামাস’ মুলত মিশোরীয় উগ্রবাদী সংগঠন- এটা ফিলিস্তিনি সংগঠন নয়। ইসরাইলীদের হুমকি ধামকির জন্য উপর দিয়ে অনেক কড়কড়ি হলেও নীচ দিয়ে অনেক ফাঁক ফোঁকর আছে। ইসরালীদের এত জনবল ও ক্ষমতা নাই যে গাজার প্রতিটা বাড়ি, স্কুল মসজিদ আর গ্যারেজের বেসমেন্ট একযোগে চেক করা্র। গাজায় ৫ লক্ষ একেবারে দুধের শিশু বাদ দিলে- ১৫/১৬ লক্ষ মানুষের হাতে যদি কোন অস্ত্র ছাড়াও শুধু ৩০/৩২ লক্ষ পা্থর থাকে তবে সেটা উপেক্ষা করার মত ব্যাপার নয়। এছাড়া গাজার আছে বিশাল সুমুদ্রতট। সেখানে প্রচুর ফিলিস্তিনি জেলে পারমিট নিয়ে মাছ ধরে। সে পথ দিয়ে যেমন ইসরাইলানরা যেমন গোপনে মিশন পরিচালনা করে তেমনি ফিলিস্তিনিরাও অনেক গোপন মিশনে যায় আসে। এতে করে অনেকে ধরা পরে/ মারা যায়, পঙ্গু হয় বিস্তর।
***
ইসরাইলানরা সবচাইতে ভয়ঙ্কর ও নোংড়া খেলা খেলে সম্ভবত নারী ও বয়োঃবৃদ্ধ সম্মানিত ব্যক্তিদের নিয়ে যাদের কথা সবাই মানে শ্রদ্ধা করে সম্মান করে। টার্গেট কে সবচেয়ে প্রভাবশালী -কার কথা তরুনেরা সবচেয়ে বেশী শোনে এমন কাউকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে তারা
প্রথমে বেশ সন্মানের সাথে ভেতরের খবর জানতে চায়; এধরনের বৃদ্ধরা জীবনে বহু অত্যাচার সয়েছে, বহু মৃত্যু দেখেছে। এরা অকুতোভয়! কোন লোভ অত্যাচার এদের টলাতে পারেনা। ধীরে ধীরে এদেরকে মানসিক নির্যাতন চালানো হয়- ইসরাইলান প্রশাসন ভাল করেই জানে শারিরিক অত্যাচার করে কোন লাভ নেই-উল্টো ইনি মারা গেলে তারা বিপদে পড়বে। ফুঁসে উঠবে পুরো ফিলিস্তিন।
কোন খবর না পেলে তারা কোন এক রাতে অতি সম্মানে তাকে তার বাসার দরজায় ছেড়ে দিয়ে আসে। খেলাটা শুরু হয় তার পরে। ফিলিস্তিনিরা তাকে অবিশ্বাস করা শুরু করে। ভাবে কেন তাকে এত সমাদর করে ছেড়ে দিল? নিশ্চয়ই সে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। বৃদ্ধ দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় জানে যে নিজ কওমের হাতেই তার মৃত্যু আসন্ন। কাউকে কিছুই বুঝিয়ে লাভ নেই। সে নিরবে ধর্ম-কর্মের মাঝে ডুবে থাকে। পরিবারের সবাই তাকে এড়িয়ে চলে। একদিন কোন এক আততায়ী তাকে রাস্তায় গুলি করে ফেলে- বিশ্বাসঘাতকের একটা তকমা লাগিয়ে রেখে চলে যায়।যার মৃত্যুতে লাখো লোকের আর্তনাত আর ক্রন্দনের মিছিল হতে পারত- সে তখন হাজার মানুষের ঘৃনা নিয়ে কোন মতে কবরে শায়িত হয়ে বছর না ঘুরতেই বিস্মৃত হয়ে যায়।
(*নারী ও শিশুদের কথা পরের পর্বে)
(হামাসে যেমন আছে শত শত সত্যিকারে দেশপ্রেমিক যারা দেশমাতৃকার জন্য নিজের তুচ্ছ জীবন অবলীলায় উৎস্বর্গ করে দিতে রাজী -ঠিক তেমনি আছে স্বার্থান্বেষি, বিশ্বাসঘাতক, লোভী মানুষেরা। আসলে এটা বোঝা মুশকিল হামাসের এই আক্রমনে কোন দলের মুল ইন্ধন ছিল। এই আগুনে ঝাঁপ দিয়েছে প্রথম পক্ষ সেটাতে সন্দেহ নেই কিন্তু মুল ঘুটির চাল দিয়েছে কারা??)
অ।ট। এ পর্বটা আসলে আরেকটু সাজিয়ে গুজিয়ে তথ্য যোগ করে দেবার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু গতকাল রাতে শাহ আজিজ ভাই-এর পোস্ট 'শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ২৬ ঘণ্টায় ১৬০ টি পোস্ট ( রি পোস্ট )' দেখে কি মনে করে তাড়াহুড়ো করে পোস্টটি করেছি। তেই অনেক ভুল-ভ্রান্তি রয়ে গেল।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৯:২৪