আমরা পরপর তিনটে ছবি দেখি; প্রথমে একজন ইতিহাসের অন্যতম ক্রূর স্বৈরাশাসক! সম্ভবত সর্বকালের সবচাইতে ভয়ঙ্করতম নারী স্বৈরাশাসকের ছবি।
পরের ছবিটি ওই ডিক্টেটরের লালিত পাষণ্ড বাহিণীর হাতে নির্মমভাবে নিহত সিড়িতে অবহেলায় পড়ে থাকা ইউনিফর্ম পরিহিত সদ্য সাবালক হয়ে ওঠা একজন কলেজ ছাত্রের লাশ।
তৃতীয় ছবিটি ওই ছাত্রের মত সিড়িতে ঠিক একই ভঙ্গীতে লুটিয়ে থাকা সেই স্বৈরাচারের পিতার নির্মম পরিণতির ছবি। যিনি ছিলেন একজন বাঙ্গালী জাতির রূপকার, একটা জাতির অবিংসবাদী নেতা! যার শোক ঘিরে আজকে এত আয়োজন- অনেকেই আমাদের আমরা এক কন্ঠে বলে' কাদো বাঙ্গালী কাদো'!!!!
এখন আমরা দ্বিতীয় ছবিটা ঘুরিয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি ওখানে নিয়ে যাই। ওই বয়সে তিনি বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে জড়িত ছিলেন। ধরুন বৃটিশদের পালিত পাষণ্ড আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে ঠিক ওইভাবে হত্যা করে লাশটা সিড়িতে ফেলে রেখেছে; তাহলে বাঙ্গালী জাতির বা বাংলাদেশের ইতিহাস হয়তো অন্যভাবে লেখা হত সেটা ঠিক কিন্তু শেখ মুজিব নামক মানুষটার ইতিহাস হয়তো লেখাই হোত না। তিনি হারিয়ে যেতেন ইতিহাসের গভীর অন্ধকারে। কোথায় জাতির পিতা, কোথায় জাতির রূপকার আর কোথায় অবিংসবাদী নেতা ...
***
কালের নিষ্ঠুর আঘাতে, মানুষের ভুল আর অত্যাচারে কত গুরুত্বপুর্ণ ইতিহাস আর দলিল হারিয়ে গেছে তার ইয়ত্ত্বা নেই।
ওই বাচ্চাটাকে সুযোগ দেয়া হয় নাই, যেমন দেয়া হয় নাই আরো তিনশত পাঁচ শত কিংবা হাজার কিশোর যুবককে, তেমনি পঙ্গু অন্ধ করে দেয়া হয়েছে হাজারো আরো শিশু থেকে শুরু করে মধ্য বয়সী যুবক যুবতীকে। একটা জাতির ভবিষ্যত প্রজন্মকে ধ্বংস করে দেবার ষড়যন্ত্র করেছিল কিছু জ্ঞানপাপী গো-মুর্খ বৃদ্ধরা।
ওটা তো একটা মাত্র বাড়িই বৈ আর কিছু নয়! তো হতে পারে সেখানে সংরক্ষিত ছিল জাতির সবচেয়ে অমুল্য সব ইতিহাস। যার দেয়ালে দেয়ালে আঁকা ছিল এ জাতির কলঙ্কের অধ্যায়। সেটাকে আমাদের কিছু মানুষ কিংবা অমানুষ ধ্বংস করে ফেলতে চেয়েছে-যা কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়।
কিন্তু আমার জিজ্ঞাসা; এমন হাজার লক্ষ ইট সিমেন্ট রডের পরতে পরতে লেখা ঐতিহাসিক দেয়াল , কিছু নথি, দলিল, চিঠি আলমিরা, বুকশেল্ফ কিংবা জড় আরো অনেক কিছু- একটা মানুষের জীবন থেকে মুল্যবান হতে পারে না। এই পুরো স্থাপনার বিনিময়ে ফিরিয়ে দিন ওই কিশোর ছেলেটার জীবন যাকে আপনারা শুধু ক্ষমতার জন্য স্বার্থের জন্য লোভের জন্য আরো একজন বঙ্গবন্ধু্ হবার সুযোগ না দিয়ে পৃথিবী থেকে চিরতরে তাড়িয়ে দিলেন।
* এই শোক দিবসে কেউ আমার কথায় কষ্ট পেলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ৯:০১