কেমন করে যে বড় হয়ে গেলি, টেরই পেলাম না। কততে পা দিলি আজ?মনে হচ্ছে এই তো সেদিন...তুই যেদিন দ্বিগ্বিদিক আলো করে পৃথিবীতে এলি...সেই দিনটার কথা খুব অস্পষ্ট হলেও মনে আছে। তোকে কোলে করে যে কত্ত ঘুরে বেড়িয়েছি। কতদিন যে হাগুমুতু করে আমার শার্ট-প্যান্ট নষ্ট করেছিস !!
ল্যামী, জন্মদিনে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানিস। কাল রাতে ইচ্ছে করেই ফোন করিনি। তোর পরীক্ষা চলছে, ভাবলাম হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছিস। আজ এতক্ষণে পরীক্ষা শেষ হয়ে যাবার কথা। কেমন হলো আজ ? আর তো মাত্র ১টা বাকী থাকলো...না? পরীক্ষাগুলো শেষ হলে দেখবি...কেমন একটা অবসাদ এসে গ্রাস করবে। অবশ্য এবারের ব্যাপারটা আলাদা। ঈদ তো প্রায় এসেই গেলো। তার মানে কয়েকটা দিন বেশ হৈচৈ এর মধ্যেই কাটবে।
তোর সাথে কেমন যেন একটা গ্যাপ হয়ে গেছে...না রে পাগলী ! ফিল করি। বাড়ী ছেড়েছি আজ এক যুগেরও বেশী হময় হলো। এর মধ্যেই কি করে যেন আব্বা-আম্মার ডায়াবেটিস ধরে গেলো....চুলে পাক ধরলো....ধাম ধাম করে বড় হয়ে গেলি তুইও। আগে অনেক কথাই শেয়ার করতি...যত বড় হচ্ছিস দিনে দিনে যে তুই চাপা স্বভাবের হয়ে যাচ্ছিস খেয়াল করেছিস?
বিশেষ করে মেডিকেলে ভর্তি হবার পর...অনেকখানিই বদলে গেছিস তুই। আগে ভাবতাম অনেক ধৈর্য তোর। হঠাৎ এমন পলকা হলি কিভাবে !! পড়ালেখার চাপ তো থাকবেই। আমি জানি কী অমানুষিক প্রেসার তোদের। কিন্তু তাই বলে দু'দিন পর পর ... 'আমি আর পড়বো না, আমাকে তোমরা নিয়ে যাও এখান থেকে' এমন কথা বলা কি তোর সাজে ....বল ! তুই জানিস না ল্যামী পৃথিবীটা কত কঠিন। নিজের পায়ে দাড়াতে না পারলে একজন মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকাটা একজন নারী'র জন্য কতটা কষ্টের ...সে যদি বুঝতি !! তুই তো তবু সৌভাগ্যবান যে টেকনিক্যাল এডুকেশান নিচ্ছিস। ঢা.বি. তে আমার ক্লাসেই অনেক ব্রিলিয়ান্ট মেয়ে পড়তো....এখন ওদের ম্যাক্সিমামই 'গৃহবধু' !! যাক আর উপদেশ দিব না। দোয়া করি আল্লাহ যেন তোর ধৈর্যশক্তি বাড়িয়ে দেন।
ইচ্ছে ছিলো অনেক লম্বা একটা চিঠি লিখবো। কিন্তু মনে হচ্ছে অফিস ফাঁকি দিয়ে আর বেশী লেখা হয়ে উঠবে না। ভালো থাকিস। অনেক ভালো। জেনে রাখিস....বাস্তবতা এবং পরাবাস্তবাতার যাতাকলে পি্ষ্ঠ হয়ে হয়ে তোর এই ভাইটা যখন যেমন আচরনই করুক না কেন....তোর জন্য খুব আপন, খুব নরম একটা জায়গা আমৃত্যু তার অন্তরের এক কোণে বয়ে বেড়াবে।
মেনি মেনি হ্যাপী রিটার্নস অব দিস ডে, মাই ডিয়ার পুচ্চি

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




