মিথ্যা আতংক
এক দিন আমি বরিশাল থেকে বাড়ী আসছিলাম। তখন আমি বরিশালে চাকুরী করতাম। প্রতি বৃহস্পতিবার বাড়ী আসতাম। বিকাল ৪/৫ ঘটিকায় অফিস থেকে বেড়িয়ে রিক্সাযোগে বাস ষ্ট্যাান্ড গিয়ে বাসেউঠে বরিশালের টরকি বাস ষ্ট্যান্ড আসতে হতো। তারপর কিছুটা হেটে সামনের ছোট নদীর খেয়া যোগেপার হয়ে পূর্বপাড়ে উঠে হেটে প্রায় ৫/৬ মাইল হাটতে হতো।
আমি বিকাল ৪ ঘটিকার সময় (বৃহস্পতিবার) বরিশারের বাসা থেকে বেড় হয়ে রিক্সায় উঠলাম। পরে বাসে উঠে টরকির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। টরকি পৌছাতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। বাস স্ট্যান্ড থেকে কাপড়ের সাইট ব্যাগটি কাঁধে নিয়ে হাঁটা শুরু করলাম। টরকি বন্ধরে এসে দেখি অন্ধকার হয়ে গেছে। তখন আমি ২০টাকা দিয়ে একটা ছোট টর্চ লাইট কিনে খেয়া দ্বারা পার হয়ে পূর্ব পাড়ে নেমে পূর্ব দিকে হাটা শুরু করলাম। তখন রাস্তা ছিল পার্শ্বে চাপা ও মাটির।(এখন পাকা) কিছু দুর হাটার পর শরীরে ভয় হতে লাগল। মনে মনে ভাবলাম বিভিন্ন কথা। রাস্তার দুই পাশে কোন বাড়িঘর নেই। পাশে বাগান ও জমি । ভয়ের এক পর্যায়ে পিছনে তাকিয়ে দেখলাম দুরে একটা বাতি দেখা যায়। তখন আরও ভয় লাগল। ভাবলাম কোনভুত প্রেত হতে পারে। বাতিটা ক্রমেই আমার দিকে ধেয়ে আসছে। আমি পেছনে তাকাই আর আবার হাটি। বাতিটা তখন আরও জোরে সোরে আসতে লাগল। আমি ভাবলাম এটা শয়তান হতে পারে শরীরে লোম দাড়িয়ে গেল । দোয়া দুরুদ পড়তে পড়তে আমি সামনের দিকে জোড়ে সোরে হাটতে লাগলাম। অনেকক্ষন হেঁটে একটা হাটে পৌছালাম । সেখানে অনেক লোকের সমাগম ছিল। আমি একটু স্বস্তী পেলাম। দাড়ালাম পিছনের দিকে তাকিয়ে দেখি বাতিটা আমার কাছে এসে পৌছেছে। দেখি বাতিটা এক জন লোকের হাতে। লোকটা আমার কাছে এলে আমি লোকটাকে চিনতে পারলাম। জিজ্ঞাস করলাম ভাই আপনি এত তাড়াতাড়ি ধেয়ে এলেন কেন ? লোকটি বলল, আমি একা আসছিলাম। খুবই ভয় হচ্ছিল তাই ভাবলাম সামনের বাতিওয়ালাকে পেতে পারলে নির্ভয়ে যেতে পারব। দেখলাম সামনের বাতিওয়ালা আর তাড়াতাড়ি হাটছিল। তখন আমি বললাম ভাই আমি সেই সামনের বাতিওয়ালা। আমি ভেবেছিলাম আপনি মানুষ না হয়ে অন্যকিছু,তাই ভয়ভয়ে জোরেসোড়ে হাটছিলাম। আমি মনে করেছিলাম আপনি আমাকে ধরার জন্য ধেয়ে আসছেন।এই ভেবে বেশী জোরে হাটছিলাম। চলুন এখন আমরা দুজনে গল্প করতে করতে বাড়ি যাই।