somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাকে লেখা চিঠি

২৬ শে মে, ২০১২ রাত ১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মা
আমার এই চিঠি কি কোনদিন পৌছাবে তোমার কাছে! ভাঙ্গা বাংলায়, বানান কইরা কইরা এই চিঠি কি তুমি পড়তে পারবা মা! মাগো, আমি তোমার রতন। তোমার বংশের বাত্তি, একমাত্র পোলা। হাজার মানত দিয়া যারে পাইছিলা তোমার কোলে। তাই সারাটা জীবন মাথায় তুইলা রাখলা পরম আদরে। হেই আমি রতন, তোমার পোলা এখন থাকি ঢাকার শহর। শিক্ষিত বেকার, কাজের ধান্দায় যায় জীবন। একটা ঘর ভাগ করই থাকি তিন বন্ধু। তাগো একজনের নাম আবার রতন। আমি হেরে মিতা কইয়া ডাকি।
গতকাইল রাইত থিকা জানো মা, শরীরে আমার বেসুমার জ্বর! ক্ষণে ক্ষণে য্যান মনে হয় ঘোরের মইধ্যে আছি। সেই ঘোরের মধ্যেই মনে লয় এই চিঠি তোমারে লেকতাছি। সন্ধ্যা রাইতে জ্বর য্যান মাথায় উইঠা গেল। কেমন ঘোর লাইগা গেছিল। সেই ঘোরের মধ্যেই টের পাইছি রতন আমার মাথায় পানি ঢালে, একটু পরপর কপালে হাত দিয়া জিগ্যায়- শরীর কি বেশি খারাপ লাগছে দোস্ত? ডাক্টারের কাছে নিয়া যামু? আমি জবাব দেই না। খালি দুইচোখ দিয়া পানি গড়াইছে। সেকি রতনের স্নেহ দেইখা না তোমার স্নেহহীনতা লাইগা? বুঝিনাই ঠিক!
তুমি যখন ছিলা, সেই আমার রাজা-বাদশাহী জীবনে, এমনু জ্বর হইলে তুমি কেমুন অস্থির হই যাইতা। আর আমি সারাটা দিন নেতানো গাছের মতো বিছনার পইরা থাকতাম। রান্না ঘর থিকা ক্ষণে ক্ষণে আইসা আমার মাথায় হাত দিতা আর জিগাইতা-আব্বা শরীলডা এখন কেমুন লাগে? একটু সাগু বার্লি জ্বাল দিয়া দেই. উইঠা খাও। ভালো ঠেকব।'আমি হাইসা তোমার সেই কথা উড়াইয়া দিতাম। কইতাম- কি যে কও না প্রাগৈতিহাসিক কথা, এই যুগে জ্বর হইলে কেউ সাগু বার্লি খায়না, স্যূপ খায়। তুমি বানাইতে পারতান, তাই জোর কইরা সাগুই দিতা।
অহন যদি রতনরে কই স্যূপ খামু,রাস্তার মোড়ের থিকা এক দৌড়ে আইনা দিব জানি। কিন্তু মা, আমার যে অহন খুব সাগু-বার্লি খাইতে ইচ্ছা করে। একবার আইসা আমরা একবাটি সাগু জ্বাল দিয়া দিয়া যাওনা মা।
মাথাটা যখন টনটন করে ব্যাথায়, নিজের কপালে নিজেই হাত দেই, তোমার হাতটা অনুভব করতে চেষ্টা করি, কিন্তু তোমার হাতটা পাইনা। আমার হাত বা রতনের হাত, কারো হাত তোমার হাতার লাহান না ক্যান গো মা!
তোমার মতো তো আমিও একদিন মইরা যামু না? মরণের পর কি তোমার লগে দেহা হইবো? হেই যে হাশরের ময়দান,হেইখানে গিয়া দাড়াইলে তুমি কি আগায় আসবা আমারে নিতে। য্যামুন নিতা বাড়ির উঠান থিকা, আমার বাবায় আইছে, বাবায় আইছে কইয়া। একবার কি তোমার মুখটা দেখতে পামু মা। খালি একবার!
আর একবার তোমারে দ্যাখতে চাই মা,খালি একবার তোমারে কইতে চাই হেই কতাডা, যেই কতাডা এই জন্মে তোমারে কইতে পারিনাই।
তোমারে অনেক ভালোবাসি গো মা. অনেক ভালোবাসি তোমারে মাগো!
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০১২ রাত ২:০৮
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×