কানপুর হলো ভারতের একমাত্র শহর যেখানে নাকি সবচেয়ে বেশী ব্রান্ডেড গাড়ী (বি এম ডব্লিও, অডি ইত্যাদি) চলে।
এভাবে আস্তে আস্তে ট্রেন চলতে চলতে নিউ দিল্লীতে পৌছল রাত ১১:৫০ মিনিটে। আর কিছুক্ষণ পর নতুন বছর। ট্রেন থামতেই চিন্তা করলাম কিছু খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। শত হোক নিউ ইয়ার বলে কথা।
১২:০০ টা বাজতেই চারিদিকে ধুমধাম আতশবাজীর শব্দ। স্টেশনের দুই গেটের মাঝের অল্প একটু ভিউতেই আতশবাজীর ছবি তোলার ব্যর্থ প্রচেস্টা চালালাম।
এরপর শুরু আবার সেই ট্রেন যাত্রা। কালকা পৌছতে পৌছতে সকাল ৫:০০টা। প্রায় ৩৭ ঘন্টা ট্রেন জার্নি।
তারপর আর কি। বাসে উঠে শিমলার উদ্দেশ্যে যাত্রা। কি সুন্দর পাহাড়ী পথ! জিগজ্যাগ করে এগিয়ে চলছে। সাঙ্ঘাতিক ভয়ংকর আবার একই সাথে রোমাঞ্চ দেখা দয়ে যখন নিচের দিকে তাকাই। প্রথম সূর্য দেখলাম নিউ ইয়ারের।
সব ক্লান্তি ধুয়ে গেল এত সুন্দর একটা সূর্য দেখার পর। সকাল ১০:০০ টার দিকে পৌছালাম শিমলায়। প্রথমেই বিভ্রান্তি। লোকাল একজনকে হোটেল কোথায় জিজ্ঞাসা করতেই সে একটা শর্টকাট রাস্তা দেখিয়ে দিল। বলল মাত্র ৩০ মিনিটের পথ। ছোট একটা পাহাড় বেয়ে উঠতে হবে। একগাদা জিনিসপত্র নিয়ে পাহাড় ট্রেকিং এবার।
যে পথটি পার হচ্ছিলাম তার ছবি। এত চিকন রাস্তা আর খাড়া, সেখানেই মনে মনে মুসা ইব্রাহীমকে একবার সালাম দিয়ে নিলাম। ব্যটা কি কাজটাই না করেছে। এভারেস্টে গিয়ে উঠে বসে ছিল।
এভাবে লোকটির দেয়া ৩০ মিনিটের পথ অবশেষে শেষ হলো ২ ঘন্টা পর! তারপর হোটেলে উঠলাম। হোটেলের নাম রাজদূত
হোটেলের দেয়া গাড়ীতে করে প্রথমে গেলাম কুফরীতে। ঠান্ডা যে কি রকম ভয়াবহ হতে পারে তা প্রথম বুঝলাম। তাপমাত্রা ছিল ০ ডিগ্রী এ দিন। সারা শরীর বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে গেল। পুরো জায়গাটা কুয়াশায় আচ্ছন্ন। সেখানেই বাকীটা সময় কাটালাম। আপেল গার্ডেন ছিলো যেখানে ঘোড়ার পিঠে করে যেতে হয়; কিন্তু এক সর্দারজী বলল এখন নাকি আপেল গার্ডেন যেয়ে কোনো লাভ নেই, কারণ সব গাছের পাতা পরে গেছে। সর্দারজী একটা মনোপলি ব্যবসা দিয়ে বসে আছে। তা হলো একটা চালের উপর আপনি চাইলে আপনার নাম লিখে রাখতে পারবেন। আর তা নাকি সারা জীবন থাকবে। লিখে নিলাম কয়েকটা নাম সবাই মিলে।
শুধু কুফরী যেয়েই ফিরে আসলাম শহরে। আমাদের কপাল ছিলো খারাপ। রবিবার ছিলো তাই সব কিছুই বন্ধ। কি আর করা। হোটেলে অবশ্য ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে গিয়েছিল। তাই ঘুমাতে চলে গেলাম। (চলবে)
আগের দুই পর্বের লিঙ্কু
ভারত ডায়েরী
ভারত ডায়েরী-১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



