somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভারত ডায়েরী-২ (ট্রেন জার্নি এবং শিমলা)

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৩১ শে ডিসেম্বর পুরোটা কাটালাম কালকা মেইলে। কালকা মেইল এমনি একটা ট্রেন যা কিনা প্রায় সব জংশন তো বটেই স্টেশনে পর্যন্ত থামল। পাশ দিয়ে যদি একটা ট্রেনও যায় তাও দেখি থেমে সাইড দেয়!X((X((। এর মাঝে যে সকল উল্লেখযোগ্য স্টেশনে থামল তা হলো নজরুলের বিখ্যাত আসানসোল, মুঘলসরাই। মুঘলসরাই নেমে প্রথমেই সকালের নাস্তা সারলাম। তারপর একের পর এক আসল মির্জাপুর, এলাহাবাদ, কানপুর, আলীগড়।

কানপুর হলো ভারতের একমাত্র শহর যেখানে নাকি সবচেয়ে বেশী ব্রান্ডেড গাড়ী (বি এম ডব্লিও, অডি ইত্যাদি) চলে।
এভাবে আস্তে আস্তে ট্রেন চলতে চলতে নিউ দিল্লীতে পৌছল রাত ১১:৫০ মিনিটে। আর কিছুক্ষণ পর নতুন বছর। ট্রেন থামতেই চিন্তা করলাম কিছু খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। শত হোক নিউ ইয়ার বলে কথা।

১২:০০ টা বাজতেই চারিদিকে ধুমধাম আতশবাজীর শব্দ। স্টেশনের দুই গেটের মাঝের অল্প একটু ভিউতেই আতশবাজীর ছবি তোলার ব্যর্থ প্রচেস্টা চালালাম।

এরপর শুরু আবার সেই ট্রেন যাত্রা। কালকা পৌছতে পৌছতে সকাল ৫:০০টা। প্রায় ৩৭ ঘন্টা ট্রেন জার্নি।:(( মনে হচ্ছিল পা কাপছে আর মাথা শুধু দুলছিল। কালকা নেমেই টয় ট্রেনের টিকিট কাটলাম। কিন্তু বিধিবাম। ট্রেনে উঠে দেখি সব সিট বুকড। এখন দাড়িয়ে যেতে হবে।:(( ৩৭ ঘন্টা ট্রেন জার্নি করার পর যদি কেউ বলে আগামী ৪ ঘন্টা দাড়িয়ে যেতে হবে কেমন লাগে শুনতে! এই দুঃসাহস আমাদের কারও হয়নি। কি আর করা। তাই টিকিট ফেরত দিতে গেলাম। ফলে দিতে হলো জরিমানা। এরপর একটা মাইক্রো ভাড়া করে বাস স্টেশনে আসলাম।
তারপর আর কি। বাসে উঠে শিমলার উদ্দেশ্যে যাত্রা। কি সুন্দর পাহাড়ী পথ! জিগজ্যাগ করে এগিয়ে চলছে। সাঙ্ঘাতিক ভয়ংকর আবার একই সাথে রোমাঞ্চ দেখা দয়ে যখন নিচের দিকে তাকাই। প্রথম সূর্য দেখলাম নিউ ইয়ারের।

সব ক্লান্তি ধুয়ে গেল এত সুন্দর একটা সূর্য দেখার পর। সকাল ১০:০০ টার দিকে পৌছালাম শিমলায়। প্রথমেই বিভ্রান্তি। লোকাল একজনকে হোটেল কোথায় জিজ্ঞাসা করতেই সে একটা শর্টকাট রাস্তা দেখিয়ে দিল। বলল মাত্র ৩০ মিনিটের পথ। ছোট একটা পাহাড় বেয়ে উঠতে হবে। একগাদা জিনিসপত্র নিয়ে পাহাড় ট্রেকিং এবার।/:) যেহেতু সে বলল মাত্র ৩০ মিনিট তাই ভাবলাম কতক্ষণই বা লাগবে। কিন্তু উঠতে গিয়ে ৫ মিনিটের মধ্যেই সবার দেখি দম যায় যায় অবস্থা।/:)/:)

যে পথটি পার হচ্ছিলাম তার ছবি। এত চিকন রাস্তা আর খাড়া, সেখানেই মনে মনে মুসা ইব্রাহীমকে একবার সালাম দিয়ে নিলাম। ব্যটা কি কাজটাই না করেছে। এভারেস্টে গিয়ে উঠে বসে ছিল।
এভাবে লোকটির দেয়া ৩০ মিনিটের পথ অবশেষে শেষ হলো ২ ঘন্টা পর! তারপর হোটেলে উঠলাম। হোটেলের নাম রাজদূতB-) ()। হোটেলে উঠেই ফ্রেশ হয়ে নেমে পড়লাম শিমলা ঘুরতে। সবচেয়ে মজা লাগল বাড়ী গুলো দেখে। পাহাড়ের পাশ ঘেষে দাড়িয়ে আছে সব গুলো বাড়ী। আর হোটেলগুলো সব উল্টা। উপরে রিসিপশন আর নিচের দিকে থাকার রুম। অবশ্য উপরের দিকেও থাকার রুম আছে। আমাদের আবার সাহস বেশী কিনা তাই নিচের দিকের রুম গুলোতে যাই নি উপরেই ছিলাম।:D:D

হোটেলের দেয়া গাড়ীতে করে প্রথমে গেলাম কুফরীতে। ঠান্ডা যে কি রকম ভয়াবহ হতে পারে তা প্রথম বুঝলাম। তাপমাত্রা ছিল ০ ডিগ্রী এ দিন। সারা শরীর বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে গেল। পুরো জায়গাটা কুয়াশায় আচ্ছন্ন। সেখানেই বাকীটা সময় কাটালাম। আপেল গার্ডেন ছিলো যেখানে ঘোড়ার পিঠে করে যেতে হয়; কিন্তু এক সর্দারজী বলল এখন নাকি আপেল গার্ডেন যেয়ে কোনো লাভ নেই, কারণ সব গাছের পাতা পরে গেছে। সর্দারজী একটা মনোপলি ব্যবসা দিয়ে বসে আছে। তা হলো একটা চালের উপর আপনি চাইলে আপনার নাম লিখে রাখতে পারবেন। আর তা নাকি সারা জীবন থাকবে। লিখে নিলাম কয়েকটা নাম সবাই মিলে।

শুধু কুফরী যেয়েই ফিরে আসলাম শহরে। আমাদের কপাল ছিলো খারাপ। রবিবার ছিলো তাই সব কিছুই বন্ধ। কি আর করা। হোটেলে অবশ্য ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে গিয়েছিল। তাই ঘুমাতে চলে গেলাম। (চলবে)

আগের দুই পর্বের লিঙ্কু
ভারত ডায়েরী
ভারত ডায়েরী-১







৯টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×