somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মোল্লাদের বায়তুল মোকাররম

২৮ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্বজন হারানো কান্নার প্রতিধ্বনির সাথে বাতাসের সঙ্গে আরো ভেষে আসছে বারুদ এবং রক্তের গন্ধ। কালোধয়ার কুয়াশায়, অন্ধকার হয়ে আছে পুরো এলাকা, রক্তাক্ত লাশের ছড়াছরী চারদিকে, কোথায় ছিটকে আলাদা হয়ে পড়ে আছে লাশের বিছিন্ন হাত-পা, কথাও বিচ্ছিন্ন মাথা, কোথাও পুরো দেহটাই থেতলে আছে কশাই ঘরের গরু ছাগলের কিমার মত। ধ্বংশস্তূপ ভিজে আছে মৃত মানুষ গুলোর রক্তে। বোমার তীব্র বিস্ফোরণে ছয়শতকের হিটলার মোহাম্মদের ইসলাম নামক রাজনৈতিক দলের অদৃশ্য কাল্পনিক পণ্য আল্লাহর প্রার্থনায়লিপ্ত মুসল্লিদের সাথে নিয়ে গুর গুর হয়ে ধুলোয় সঙ্গে মিশে অছে খেলাফতি মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশের মোল্লাদের আড্ডাখানা বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদ। আজ ভোরের দিকে যখন মুসল্লিরা ফজরের নামজ পড়তে একত্রিত হয়েছিল, নামাজের প্রথম ওয়াক্তেই হঠাত করেই ঘটে গেল এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, বোমার বিস্ফোরণের শব্দে কম্পিত হয়ে উঠলো চারিদিক। ফজরের নামাজে আসা আরবের সেই চারকোনা কালো বাক্সের পূজারীরা একজনও আর বেচে নেই, প্রত্যেকেই বোমার স্প্লিন্টার এবং বায়তুল মোকাররমের ভেঙ্গে পড়া ছাদ এবং দেয়ালের নিচে চাপা পড়ে মৃত্যুকে বরণ করেছে। স্বজন হারাবার দুঃখ এবং প্রিয় আড্ডাখানা বায়তুল মোকাররমের ধুলিস্যাত হবার বেদনায় কয়লার মত উত্তপ্ত লাল উত্তেজিত মস্তিস্কে হাওয়া দিতে আগমন ঘটল খেলাফতি মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশের বিশিষ্ট খলিফা হজরত মাউলানা খোদাজোম ফিদা, ওরফে খোদাজোমের।

খলিফা খোদাজোম ভাসন দেয়ার ভঙ্গিতে বায়তুল মোকাররমের ধ্বংশ স্তুপের উপর দাড়িয়ে মাইক হাতে নিয়ে কিছু বলতে শুরু করার পূর্বে কিছুক্ষণ ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্নার শব্দ করলো, এর পর বিকট চিত্কার করে স্বজন বিয়োগে উত্তেজিত মোল্লাদের উদ্দেশ্যে বলতে শুরু করলো
- এটা সয্য করার মত নয়, খেলাফতি মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশের সকল মুসলিমদের ঐতির্য ছিল আমাদের এই বায়তুল মোকাররম। আজ এক কাফের, মালাউন, হিন্দু, ইহুদি, ক্রিস্টান, নাস্তিক এসে আমাদের এই পবিত্র ইবাদতের জায়গা বোমা মেরে গুড়িয়ে দিয়ে গেল, আর আমরা এখনো হাতে হাত রেখে বসে আছি? হ্যা ইসলাম শান্তির ধর্ম, তাই বলে কেউ ইসলামের এত বড় ক্ষতি করবে আর আমরা কিছুই করবো না? আমারদের মনে রাখতে হবে যে আমরা মুসলিম, গান্ধীবাদী নই যে চোখের বদলে চোখ পুরো পৃথিবীকে অন্ধ করে দেয় দর্শনে বিশ্বাস করবো। যদি গান্ধীবাদী হয়ে থাকেন তবে বাড়ি চলে যান, আর বালিশের তলায় মাথা গুজে দুর্বল নারীদের মত কাঁদতে থাকেন, হ্যা সেই নারীদের মত যাদেরকে আল্লাহ তৈরী করেছে পুরুষদের ফসল হিসেবে, শুধু মাত্র বাচ্চা পয়দা করার জন্য। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে জিব্রাইলের মাধ্যমে আসা আল্লাহর হুকুমে মোহাম্মদ বানু কুরাইজা নামক ইহুদি গোত্রের সকল পুরুষদের উপর গণহত্যা চালিয়ে ছিল, শিরচ্ছেদ করা হয়েছিল তাদের প্রতেককে, এবং সেই বানু কুরাইজার মৃত পুরুষদের মাবোনকে গনিমতের মাল হিসেবে ধর্ষণ করে পরবর্তিতে অন্য গোত্রের কাছে সেই নারীদেরকে দাসী হিসেবে বিক্রি করে দেয়া হয়েছিল অস্ত্রের বিনিময়ে। আমাদের শান্তি প্রিয় নবী মোহাম্মদ আমাদের মাঝে নেই, যদি থাকতেন, নিশ্চই জিব্রাইলের মাধ্যমে প্রিয় নবী মোহাম্মদের কাছে আল্লাহ আয়াত নাজিল করতেন
"হে আমার হাবিব, বলেদাও তোমার উম্মতদেরকে যেন তারা হাতে অস্ত্র তুলে নেয়, এবং আল্লাহ বেতিত যেন অন্য কাউকে ভয় না করে। যারা পবিত্র বায়তুল মোকাররমকে বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়েছে, তাদের অন্তঃকরণ ব্যধিগ্রস্ত আর আল্লাহ তাদের ব্যধি আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। বস্তুতঃ তাদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে ভয়াবহ আযাব, তাদের মিথ্যাচার এবং অত্যাচারের দরুন। হে আমার হাবিব, তাদের বিপক্ষে যুদ্ধ ঘোষণা করো এবং ভেঙ্গে ফেল সকল মন্দির, পেগডা, চার্চ এবং শিয়াদের মসজিদও, কারণ তারা যাদের উপাসনা করে তারা তোমাদের আল্লাহ নয়। তারা যতগুলো মুসলিম মেরেছে, তোমদের উপর আল্লাহর কসম তোমরা তার বাহাত্তুর গুন বেশি মালাউন মারো, নিসন্দেহে আল্লাহ তোমাদের সঙ্গে আছেন যিনি যাবতীয় বিষয়ের উপর সর্বময় ক্ষমতাশীল। তাদেরকে হত্যার বিমুখ হলে তোমরাও যালিমদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে পড়বে, তোমরাও হবে জাহান্নামবাসী; অন্তকাল সেখানে থাকবে। নিঃসন্দেহে তিনিই ক্ষমাকারী, অত্যন্ত মেহেরবান।"
তবে বলুন প্রার্থনার নামে সকল ব্যাদাতি কারখানা গুলো মুসলিম হিসেবে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিতে পারবো না? আমাদের প্রিয় মসজিদ ভেঙ্গে নামাজে মশগুল যত গুলো মমিন বান্দাদের মেরেছে, আমরা তার বাহাত্তুর গুন বেশি মালাউনের শিরচ্ছেদ করতে পারবো না?

উত্তেজিত মোল্লারা খলিফা খোদাজোমের ভাসনে সমর্থন জানিয়ে চিত্কার করে বলে জোর গলায় একত্রে বলে উঠলো
- ইনসাল্লাহ! অবস্যই পারবো!!

খোদাজোম আরো জোর গলায় বললো
- আমাদের এই পবিত্র জিহাদে শহীদ হবার ভয়ে, কেউ পিছপা হবেন?

উত্তেজিত মোল্লারা গগন কাপানো কন্ঠে জংলী জানোয়ারের মত হুঙ্কার দিয়ে বললো
- নাউজুবিল্লাহ!!

খোদাজোম এবার সন্তুষ্ট হবার ভঙ্গিতে শান্ত গলায় বললেন
- আলহামদুলিল্লাহ! মাশাল্লাহ! তবে মুসলিম ভাইয়েরা জিহাদের প্রস্তুতি হিসেবে আল্লাহর সাত আসমান কাপানো কন্ঠে বলুন
"মুসলমানের দেশেতে,নাস্তিকেরা থাকবে না।
পাক আল্লার মাটিতে, বিধর্মীদের রাখবোনা।
নাড়ায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার”।

এটা হলো আজকের পরিস্থিতি, কিন্তু দু'দিন আগে এই বায়তুল মোকাররমের এক গোপন কক্ষে চারজন সদস্যের এক গোপন বৈঠক বসেছিল, যা শুধুমাত্র ওই বৈঠকে বসা চারজন বাদে সকলেরই অজানা। চারজনের একজন হলো খেলাফতি মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশের খলিফা খোদাজোম, দিতীয় জল্লাদ ইয়াসিন মোল্লা, তৃতীয় মুফতি ইব্রাহিম ফারাবী এবং চতুর্থ হিংস্র জিহাদী নেতা মোস্তফা মৌদুদী। হঠাত করে এই গোপন বৈঠক ডাকার কারণ হল পাকিস্তান তার অর্ধাঙ্গ খেলাফতি মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে সকল অমুসলিম এবং তাদের সকল প্রার্থনাগার উচ্ছেদ করতে প্রচুর অঙ্কের টাকা এবং অত্যাধুনিক সব মারনাস্ত্র দিয়েছে। এগুলো এখন নতুন যুবক জিহাদিদের হাতে তুলে দিয়ে কাজে নামাতে হবে, কারণ রামদা, চাপাটি এবং তলোয়ার আর কতদিন। কিন্তু সমস্যাটা হলো পৃথিবীর যত বড় মূর্খই হোকনা কেন, বিনা কারণে সে হাতে অস্ত্র তুলে নেবে না। তাই তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিতে একটা কারণ দাড় করাতে হবে, কিন্তু সেটা কি? এমন প্রশ্নের উত্তরে চারজনের মিলিত মতামতের ভিত্তিতে এই সিধান্ত হয়েছিল যে নিজেরাই গোপনে বায়তুল মোকাররমের ভেতরে বোমা বিস্ফোরণ করিয়ে মসজিদটাকে গুড়িয়ে দেয়া হবে, মসজিদের এই ধ্বংস স্তুপে চাপা পড়ে অথবা বিস্ফোরণে যতজন মারা যাবে, তাদের প্রত্যেককে শহীদ বলে ঘোসনা করা হবে।

সিধান্ত অনুযায়ী কাজও হলো এবং তার ফলাফল হিসেবে কি ঘটলো তা আগেই আপনারা জেনেছেন, এবং পরবর্তিতে কি ঘটবে তা আন্দাজ করা খুব একটা কঠিন কাজ নয়। নাড়ায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার......
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:১১
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আইনের ফাঁকফোকর-০৩

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

যেকোনো চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। সেটা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা পর্যায়ের কোনো কার্যালয়ে হতে পারে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×