somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি অমৌলিক গল্প ( ডেথ বাই স্ক্র্যাবল বাই চার্লি ফিস)

২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
০০ একটি অমৌলিক গল্প০০
ডেথ বাই স্ক্র্যাবল।। চার্লি ফিস


অনুবাদ, রুপান্তর, সংযোজন, বিয়োজন।। আমি



অভি হারামজাদারে তখন একটা উল্টায়া চড় দেয়ার দরকার ছিল। দিই নাই। লালনে আছে, সময় গেলে সাধন হবে না। সময়ে সাধন করি নাই। এখন নিজ গালে চড়ানো দশা। ব্যাটা যেহেতু নিজে ফাঁসছে, আমাকে যে ফাঁসাবে এটা বোঝার জন্য আইন্সটাইন হবার দরকার ছিলো না। ফাঁসাতে না পারলে আর বন্ধু কিসের! কিন্তু আমি বুঝি নাই। চোখ টিপ দিয়া বললো, এত দিন বাদে যখন করবি ঠিক করছস, কচি দেইখ্যা বাছন দরকার। চোখ টিপ দেয়াটার মধ্যে ভয়ংকর অশ্লীলতা ছিল। আমি উল্টায়া চড় দেয়ার বদলে বন্ধুর প্রতি প্রশ্রয়ের হাসি হাসলাম। সাধন করার সময় চলে গেল। সে গিয়া আম্মারে বোঝালো আমি নাকি অল্প বয়সী মেয়ে বিয়ে করতে চাচ্ছি হেন তেন ইত্যাদি ইত্যাদি। ফলে তিনমাসের মাথায় আমি ছত্রিশ বছরের বুড়া মাথায় পাগড়ী বেধেঁ যখন কবুল কবুল করছিলাম, পরীর বয়স তখন মাত্র বাইশ।

দুপুর বেলা ভরপেট খেয়ে বগলের তলে বালিশ ঢুকালাম। খানিক ভেসে উঠা ভুঁড়িতে আস্তে আস্তে হাত বুলাতে বুলাতে বিচিত্রার ঈদ সংখ্যাটা উল্টাচ্ছিলাম, পরী এসে বললো, এখন শুয়ে আছ কেন? খেয়ে শুয়ে থাকো বলেই তোমার ভুঁড়ি দিন দিন উন্নত হচ্ছে। আমি বললাম, তবে এখন কি করব। সে বললো, আসো স্ক্র্যাবল খেলি। গরমে ইচ্ছে হচ্ছিল পুকুরে ডুব দিয়ে ডুববৌচি খেলি, স্ক্র্যাবল খেলা না। কিন্তু পরীর মুখের উপর না বলার বল গত দেড় বছরে আমি অতি সোহাগের সংগে একটু একটু করে কোর্ট ছাড়া করেছি। এখন বল তার কোর্টেই থাকে। আমাকে খেলতে হলে তার কোর্টে গিয়ে খেলে আসতে হয়, কেননা আমাদের দুই কোর্টই তার দখলে। সে হুকুম করে, আমি পালন করি। পরী স্ক্র্যাবল র্বোড সাজিয়ে বসল আমার সামনে। আমি আধশোয়া হলাম। পরী বললো, উঠে বস। তুমি আগে গুটি উঠাও। আমি উঠে বসলাম। ব্যাগ হতে লেটার উঠালাম, বি। তার উঠল এক্স। পড়বি তো পড় মালির ঘাড়ে। বি উঠার কারণে স্বভাবতই আমাকে প্রথমে শুরু করতে হবে। আমি মনে মনে একটা গালি দিলাম, অভি হারামজাদা।

আমি পায়ের কানিচ থেকে বালিশটাকে হাত দিয়ে সরালাম, বালিশের কোণাটা সজোরে মুচড়ে দিলাম। পরীর উপর রাগ লাগছে। সামনে থেকে বিচিত্রাটা টেবিলের দিকে সজোরে ছুঁড়ে মনে মনে বললাম, আই হেইট ইউ, আই হেইট দিস।

গুটি ভাল পড়ে নাই। খ্যাত্তা পুড়ি ভালো গুটির। প্রথম চালটা শুরু করলাম BEGIN দিয়ে। এন এর মাথা গিয়ে পড়লো গোলাপী স্টার দেয়া ঘরে, বাইশ পয়েন্ট। পরীর সবকিছুতেই পরিপাটি স্বভাব, গোছালো। আমার বাইশ পয়েন্ট নেয়া দেখলো সে, মুখে মাপা হাসি হাসল। ঠিক যেটুকু হাসলে তার গালের টোলটি পরিপূর্ণ হয় অথচ তার মুখের পেশী বেশী কুঁচকায় না, ততটুকু। ফাজিল একটা।

আজ তিন ধরে লাগাতার হরতাল। ঘরে বসে আছি আর পরীর বিচিত্র আব্দারের সঙ্গী হচ্ছি। বিয়ের আগে হরতালের দিন গুলো ছিলো সব‘চে আরামের। অফিস নাই, সারাদিন গুলতানি মারো। আমার বন্ধুদের পরী পছন্দ করে না, তাই তাদের আসা-যাওয়া বন্ধ। কোন বন্ধু ফোন করে যদি বলে, দোস্ত বাসায় আয়, না হলে আমি আসি। বহুদিন আড্ডা দিই না। আমাকে গলা চেপে বলতে হয়, না রে দোস্ত, আজ না। দুপুরে খেতে গিয়ে কইমাছের কাঁটা আটকাইছে, বেরুয় নাই। মহা যন্ত্রণার মধ্যে আছি। বলতে বলতে গলা দিয়ে ফ্যাঁস ফ্যাঁস করে শব্দও বের করতে হয়। না হলে বলতে হয়, ক্যামনে আড্ডা দিব বল। তোর ভাবী সিঁড়িতে নামতে গিয়ে ব্যথা পাইছে, তাকে ডাক্তারের কাছে নেয়া দরকার। তখন হয়তো ও টিভিতে জেসি জেসা কই নেহি দেখছে, পায়ে চলছে পেডিকিওর। আমাকেও পাশে বসে জেসি জেসা কই নেহি দেখতে হয়, মরার উপর খাড়ার ঘা-এর মত কোন কোন দিন পেডিকিওরও করতে হয়। আমার অফিস শেষে কোথাও যাওয়া-যাওয়ি বন্ধ। তার একা একা লাগে। আমি ছাড়া ঘরে আর কেউ নেই। ফলে বিয়ের পর থেকে অন্যদিনগুলো যা তা, ছুটি-ছাটা কিংবা এমন হরতালের দিন গুলো হলো আমার কাছে কয়েদখানায় থাকার মত। কয়েদিরা তবু দু‘একটা যেমন ইচ্ছে তেমন অভ্যাসকে প্রশ্রয় দিতে পারে, ইচ্ছেমত কানে কাঠি ঢুকিয়ে কান ঘুঁটতে পারে কি ঘামাচির যন্ত্রণায় উদোম পিঠে ঘ্যাঁস ঘ্যাঁস করে চিরুনী দিয়ে চুলকে দিতে পারে, আমার সে উপায় নেই। পরী নাক কুঁচকে বলবে, বাব্বাহ। কি বিশ্রী স্বভাব বানিয়েছ। খুব বিরক্ত লাগে দেখলে। ছ্হি...

পরী ঠিক করবে আমি কতটুকু খাব, কতক্ষণ ঘুমাব। সে একা টিভি দেখতে পারে না, সে যা যা দেখে, আমাকে তার সাথে বসে তাই তাই দেখতে হয়। সে হয়ত উঠে কোন দিকে গেল, আমি চ্যানেল পাল্টালাম। একটু পরে ছুটে এসে রিমোট হাতে নিয়ে বলবে, তোমার রুচিও বাবা। কিভাবে যে এসব দেখ, আল্লাই জানে? নাহ্, এতদিনেও তোমার রুচি পাল্টাতে পারলাম না, আজব। আজব শব্দটা সে বলে আজ-জব, ঢং করে, আমার গা জ্বলে যায়। হাসি হাসি মুখ করে বসে থাকি। আসলেও আমি একটা আজ-জব।

পরী খেললো, JINXED। প্রতিটি ঘুঁটি নিপুণ হাতে ঘরে বসানো। জে ডাবল স্কোরের ঘরে, ত্রিশ পয়েন্ট। প্রথম দানেই সে আমাকে হারাতে শুরু করল।

আমি মনে করার চেষ্টা করলাম, গত কয়েকদিনে আমি পরী ভিন্ন কারো সাথে কথা বলেছি কিনা? গতকাল দুপুরে ফয়সালকে ফোন দিয়ে একটু গল্প করার সাধ মিটানো সবে শুরু করেছি, পরী এসে বললো, কতক্ষণ ধরে কথা বলো তুমি। পরে বোলো, আমি একটু মার সাথে কথা বলবো। ভীষণ জরুরী। আসলে জরুরী টরুরী কিছু না, আমি ফোনে কথা বলছি কারো সাথে এটা তার পছন্দ হচ্ছেনা। ব্যস, গল্প করা ওখানেই শেষ। আর? আর কার সাথে? ওহ্ । আজ সকালে। দুধ দিতে আসে এক মহিলা। কলিংবেল বাজালো। পরী ছিলো বাথরুমে। আমি গিয়ে দরজা খুললাম। দুধ নিলাম। সে পাতিলে ঢালছিলো, আমি বললাম, কেমন আছো খালা? সে বললো, বালা আছি স্যার। আপনের শরীল বালো? ব্যস, এটুকুই। মহিলা চলে গেল। পরী বাথরুম থেকে বেরিয়ে বললো, তোমার যে কি রুচি। দুধওয়ালীর সাথে গল্প করতে গেছ নাহ্? আমি মিন্ মিনে স্বরে বলতে গেছি, গল্পের কি দেখলে...।
পরী বললো, আসো ড্রইংরুমে, এই বসলাম, বল দেখি কত গল্প করতে পারো আমার সংগে। আমি গল্প করার কিছু খুঁজে পেলাম না। পরী বললো, কই কর গল্প? আমি বললাম, কি গল্প?
- তার আমি কি জানি। তোমার গল্প জমে আছে, যাকে পাচ্ছো তার সাথে গল্প জুড়ে দিচ্ছ, এখন আমার সাথে বলে গল্পের বোঝা কমাও।
আমি হতবুদ্ধি হয়ে বসে থাকলাম। একদম সোজা হয়ে বসে থাকলাম না। আঙুল নাড়াচ্ছিলাম পায়ের। পরী বললো, এই সব বাচ্চাদের কান্ড যে কেন কর, বুঝি না। বুঝি না টা সে বললো বুঝ-ঝি না। ঢং। রাগে আমার গা জ্বলতে লাগল। মুখে বললাম, সরি।

পরী শব্দ করে বললো, ত্রিশ পয়েন্ট। ইয়াহু। আমি শব্দ না করে মনে মনে বললাম, আই হেইট ইউ। ইসস, পরী না থাকলে কি মজা করে আজ গুলতানি মারা যেত আমার বাসায় কি ফয়সালের বাসায় কিংবা আর কারো বাসায়। সিগারেট টানতে টানতে কার্ড খেলতাম কিংবা অভির ব্যবস্থা করা দুই পেগ খেয়ে একটা মারদাঙ্গা সিনেমা দেখতাম। আহারে! আগে কি সোন্দর দিন কাটাইতাম।

আমি আগে কি সোন্দর দিন কাটাইতাম‘টা গুনগুনিয়ে উঠলাম। পরী ধমকে উঠল, খেলার সময় কি কানের কাছে গুন গুন কর? কনসেনট্রেশান থাকে না। নাও, খেল-ল..।
ল -কে টেনে।ইয়া মাবুদ, আমি ভাবলাম, লোকে কি আর সাধে বউকে খুন করে। এই তো আজকের পত্রিকায়ও আছে, সিরাজগঞ্জ না কোথায় যেন এক লোক তার বউকে খুন করে নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে। বিছানার উপর চিঠি লিখে গেছে, যন্ত্রণা মিটাইলাম। ওম শান্তি। ওম শান্তি। আমিও কি এরকম ওম শান্তি করে ফেলবো? নিজেকে কেমন পাকিস্থানের জাতীয় পশুর মত মনে হচ্ছে।

আমি আমার গুটির দিকে তাকালাম। ইস্, একটা ডি যদি থাকত, আমি MURDER শব্দটা খেলতাম। মনের ইচ্ছের একটা ইশারা দিতে পারতাম। দুধের সাধ করলার রসে মিটানো আর কি। আমি মুখে ইউ নিয়ে চিবুতে শুরু করলাম। জানি, এটা একটা বদ অভ্যাস। ইচ্ছেকৃতই করলাম। দেখি কতক্ষণ পরী খেয়াল না করে থাকে। আমি খেললাম WARMER। বাইশ পয়েন্ট। WARMER শব্দটা খেললাম যাতে ইউটা কাজে না লাগে, আরো কিছুক্ষণ মুখে চিবানো যায়। ছাগল মানুষ, চিবানোতেই শান্তি। গুঁতোতেও একটা শক্তি লাগে। আমার সে শক্তিও নেই।

হঠাৎ আমার মাথায় একটা কথা বুব্ করে উঠলো, পানির ভিতর থেকে যেমন বুব্ করে বুদ্বুদ উপরে উঠে। মনে হলো, যে কয়টা অক্ষর উঠে ব্যাগ হতে তা দিয়ে একটা জুয়া খেলি। অক্ষরগুলো মিলে যে শব্দ হয়, যদি হয় KILLবা STAB বা পরীর নাম কিংবা এ ধরনের কিছু, আমি একটা ওম শান্তি ঘটিয়ে ফেলবো। আল্লাহ্ ভরসা। যা হবার হবে, যা করার এক্ষুনি, বহুত হুয়ে। বহুত বহুত হুয়ে।

ধুশ্ শালাহ্। প্রায় মুখ দিয়ে বের হয়েই গিয়েছিল আমার। আমার কাছে যে অক্ষর গুলো উঠে আসলো তা দিয়ে হয় MIHZPA। আর সাথে আছে আমার মুখের ডি। কোন কচুও হয় না এগুলো দিয়ে।

পায়ের দিককার জানালার পর্দাটা ভালো মত টেনে দেয়া দরকার। ভাদ্র মাসের একটা দারুন ভাঁপ আসছে ওটা দিয়ে। ঘামিয়ে যাচ্ছি রীতিমত দর দর করে। ফ্যানের ঘটরঘটর কোন কাজেই আসছে না। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে গরমে আম কাঁঠাল তাল সব পেকে পচে গেছে চারদিকে, একটা মাছির গুঞ্জন শুনলাম যেন। হে পরওয়ার দিগার, একটা মাছি এসে যদি পরীর নাকের ছিদ্র দিয়ে কিংবা মুখ দিয়ে ঢুকে গলায় আটকে দম বন্ধ করে দিত। ধুর, আমার মাথা মুথা পুরাই গেছে। কেমন যে হাঁসফাঁস লাগছে আমার। এই হরতালের দিন গরমের দুপুরে বসে বসে স্ক্র্যাবল খেলছি, মনে হচ্ছে, মানব জনম সার। একেবারে গোবরের সার। আমাদের অঞ্চলে বলে, গরুর লাদি। মানব জনম গরুর লাদি‘র মতো লাগতে লাগলো আমার কাছে। ধুশ্ শালা।

পরী খেললো SWEATIER। তার সব গুলো অক্ষর ব্যবহার করে। চব্বিশ পয়েন্ট সাথে পঞ্চাশ পয়েন্ট বোনাস। সে বললো, ইয়াহু...।
হু টা কে বেশ খানিক টেনে। অসহ্য। অসহ্য। মনে হচ্ছিল, গরমের চোটে নড়াচড়া করতে কষ্ট না হলে তখনি পরীর ফর্সা গলা টিপে ধরতাম।

আমার সারা গা ঘেমে চটচটে করছে। বৃষ্টি হওয়া দরকার। ভীষণ বৃষ্টি। যাকে বলে উথাল পাথাল বৃষ্টি। অবশ্য তাতেও যন্ত্রণা হবার কথা। পরীর ইচ্ছেমত ছাদে উঠে এই আটত্রিশ বছর বয়সে জলকেলী করতে হতো। পানি ছোঁড়াছুঁড়ি, হা হা হি হি। কপাল খারাপ থাকলে পরী গান ধরতো। কপাল খারাপের দরকার নেই। পরী গান ধরতই, এসো নীপবনে ছায়া বীথি তলে, এসো করো স্নান নব ধারা জলে...।
আর আমি মনে মনে রবীন্দ্রনাথের গুষ্টি উদ্ধার করতাম গানের সাথে তাল দিয়ে দিয়ে। তাতেও যন্ত্রণা, পরী হঠাৎ গান থামিয়ে বলতো, কি সুরের সাথে কি তাল দাও। তোমার মত সুর কানা লোক আমি জীবনেও দেখি নাই। বলেই চোখ বন্ধ করে আবার গাইতে শুরু করত। অথচ মনে আছে, বিয়ের পর পরী গান জানে শুনে মনে হচ্ছিল, যাক্, জীবন ধন্য। মাঝে মাঝে তাকে আব্দার করে গান শুনে শুনে জীবন ধন্য করার ব্যবস্থা করতে লাগলাম। আহ্হা, কি কিন্নর কন্ঠ। তারপর একদিন পাশা উল্টোপিঠ দেখালো। অফিসে ছিল বিরাট যন্ত্রণা। একটা জাবেদায় গন্ডগোল। প্রায় তিন লাখ টাকার গড়মিল। মিলাতে পারি নাই। ফরিদ সাহেব বললো, বাড়িত যান এখন। রাতে ভালো একটা ঘুম দিয়ে আসেন। সকালে আমি সহ দেখবো। অফিস থেকে আসতে আসতে রাত নয়টা। সকালে গিয়ে এই জিনিস যদি ঠিক না করতে পারি, চাকরীতো থাকবেই না। জেল জরিমানা হবার উজ্জ্বল সম্ভাবনা। বাসায় ঢুকতেই পরীর গলা। সে চিৎকার চেঁচামেচি করে না। চিৎকার করলে যদি তাকে অসুন্দর দেখায়, সে জন্য। অতি শীতল গলায় বললো, তুমি এত দেরী করলে কেন আজ? আজ শব্দটার উপর জোর দেয়াতে ভাবনা খেলে গেল, খাইছে, আজকে কোন দিবস টিবস ছিল নাকি কে জানে! কয় তারিখ আজকে? অফিসের সমস্যা বলার চেষ্টা করলাম, পরী বললো, এই তো শুরু করলে অফিস বাসায় নিয়ে আসা। আসছ দেরী করে, সাথে নিয়ে আসছো অফিস। আজ যে একটা বিশেষ দিন তা তো ভুলে গেছই, তার ওপর বেছে বেছে আজকেই দেরী করলে। বকাবকির মধ্যেই ভাত খেলাম। একটা ভালো ঘুম আসলেই দরকার। পরী দু‘কাপ চা বানিয়ে আনল।
- তুমি এক সংগে দু’কাপ নিয়ে যেতে পারবে না? আমি পাটি নিচ্ছি।
আমি প্রশ্নবোধক ভঙ্গিতে তাকালাম।
- চোখ তো দেখি এখুনি লাল লাল। নাও উঠো, বসে থাকলে আরো লাল হতে থাকবে। আজ আমাদের নিজের বাসায় উঠার প্রথম দিন, মনে আছে? চেয়ে দেখো এত্ত বড় একটা চাঁদ আকাশে। আজ সারারাত ছাদে আড্ডা।
পরী ছাদে উঠেই গান ধরল। রবী বুইড়্যাটার। আজ জোৎস্না রাতে, সবাই গেছে বনে। আমি চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে ভাবলাম, কিন্নর কন্ঠের আমি খ্যাত্তা পুড়ি। কি যন্ত্রণা বিয়ে করলাম হে খোদা। সংগীতের মত উচ্চাঙ্গ শাস্ত্রে আমার চুলকানি শুরু হলো বলা যায় সেই দিন থেকেই। পরী যখন তখন গান গেয়ে উঠে, আমি বসে বসে খাউজানি বিচি চুলকানোর মতো এখানে ওখানে চুলকাই। গান শুনলেই কেন যেন খাউজানি বাড়ে আমার। চুলকানো পরী দেখতে পায় না, সে আবেগে চোখ বন্ধ করে গান করে, ভাগ্যিস আবেগে চোখ বন্ধ হয়ে আসে মানুষের।

যন্ত্রণা হলে হোক। তবু এখন যদি একটু বৃষ্টি হতো, একটু ভেজা ভেজা ভাব আসতো বাতাসে। ভাবতে না ভাবতেই দেখি হাতের অক্ষর গুলো মিলে গিয়ে দাঁড়ালো HUMID । ডি পেলাম পরীর বসানো JINXED থেকে। মুখের লালা মেশানো ইউটা খেলতে হলো। পরী খেলার চিন্তায় এতই ব্যস্ত আমার মুখে ইউ ঢুকিয়ে চিবানোটা খেয়াল করে নাই। শব্দটা বসলো গিয়ে লাল স্কয়ারে, ডাবল স্কোর পেলাম। বাইশ পয়েন্ট আবারো। বাহ্।

পরী নিজের হাতের অক্ষর দেখতে দেখতে গানের সুরের মত করে বলতে লাগলো, কি দিলা দয়াল, দয়াল রে। অবস্থা তো বেশী সুবিধা না। তার গলায় সুরের আভাসেই যেন আমার ভেতরে আরেক দলা রাগ পাকিয়ে উঠল। উঠে গলার কাছে বেঁধে রইল। এক দলা না। কয়েক দলা।

সে খেললো FAN। এফ গিয়ে পড়লো নীল ঘরে, ডাবল লেটার স্কোরের ঘর। আজব যন্ত্রণা হলো প্রায় সংগে সংগে। ঘটর ঘটর বন্ধ হলো। ফ্যানের ঘটর ঘটর। কারেন্ট ঠিকই আছে। নিশ্চয়ই ফ্যানের কয়েল গেছে কেটে। পরী হঠাৎ দাঁড়িয়ে বললো, চা বানাই। চা খেতে ইচ্ছে করছে। তুমি খাবে তো?
প্রশ্ন করার জন্যই করা। পরী চা খাবে, আমার খেতে ইচ্ছে হোক আর না হোক, তবলার সঙ্গত করার মত আমাকেও চা খেতে হবে।

এই হলো অবস্থা। একে ভাদ্র মাসের কুত্তা পাগল গরম, তারওপর ঘরে বসে বসে এই পোলাপাইন্যা ওয়ার্ড গেম খেলছি। ফ্যানের গেছে কয়েল কেটে, ঘটর ঘটরটা এতক্ষণ বাতাস না দিক, বাতাসের শব্দতো দিচ্ছিল। এর মধ্যে পরীর ইচ্ছে জাগল চা খেতে। এখন আমরা গরমে বসে গরম চায়ে ফুঁ দিয়ে দিয়ে চা খাব আর স্ক্র্যাবল খেলবো। পরীকে ঘৃণা করার প্রায় চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেবার মত সুযোগ পেলাম নিজের কাছে। রাগ গরর করে উঠল আমার ভেতরে। আমি আর কিছু না পেয়ে খেললাম, ZAPS। জেড ডাবল লেটারের ঘরে। পরী ফ্যানের সুইচ চেক করতে গিয়ে ভূত দেখার মতো টাসকি খেয়ে চমকে উঠে উফ্ করে উঠল। সে ছোটখাট একটা ইলেকট্রিক শক্ খেয়েছে। ভালো হয়েছে। আমার ভেতরে একটা আরামদায়ক শীতলতা ছড়িয়ে গেল। কাজের কাজ হয়েছে একটা। আমাদের দেশে বুড়ো বুড়িরা একে বলে বাক্কা হওয়া। বাক্কা হয়েছে।
- খেলা শেষ হোক। একটা মিস্ত্রি ডেকে আনবে। আজকেই। আরেকটু হলে তো মরেই গিয়েছিলাম।
- বেশি ব্যথা পেয়েছো? আমি প্রায় অকৃত্রিম উদ্বিগ্ন স্বরে জানতে চাইলাম।
মনে মনে বললাম, বাক্কা হইত। মরে যাইতা, মামলা ডিসমিস হইত, আমি গিয়ে মসজিদে শিন্নি দিতাম। বিশ্ব মুক্তি দিবস উপলক্ষ্যে বিশেষ শিন্নী।
পরী পানি গরমের কেতলী চালিয়ে দিয়ে এসে বসল। একটা বড়সড় দীর্ঘশ্বাস ফেলে তার অক্ষর গুলো উল্টে পাল্টে একটা অর্থবোধক শব্দ খুঁজতে লাগল। কেতলীতে শোঁ শোঁ শব্দ হচ্ছে। পানির টগবগ করে ফোটার শব্দ শোনা যাচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে আমার গায়ের রক্ত যেন টগবগ করে ফুটছে। কান দিয়ে শোঁ শোঁ করে গরম ভাঁপ বের হচ্ছে। ইচ্ছে হচ্ছে লাফিয়ে উঠে বোর্ড-টোর্ড উল্টে দিয়ে চেঁচামেচি করে একটা তুল কালাম করি। চায়ের টগবগানো কেটলী গায়ে ঢেলে খুনের ঘটনাও কবে যেন পড়েছিলাম। আমি গভীর করে শ্বাস টানলাম। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করলাম।

সে খেললো READY। ডাবল ওয়ার্ড স্কোর। আঠারো পয়েন্ট। পরী চা আনতে উঠে গেল। আমি দ্রুত আমার অক্ষর চেক করে হাত হতে ভি লেটার টা ব্যাগে ফেলে দিয়ে একটা ব্ল্যাঙ্ক টাইল নিলাম। যুদ্ধে এবং খেলায় ( প্রেম -প্রুম ভুয়া) চিটিং যায়েজ। সংগে সংগে বন্ধু বান্ধবদের সাথে তিন কার্ড খেলার কথা মনে পড়ল। কত চিটিং যে করেছি, একদিন এ নিয়ে তো অভি আর মাসুমের মধ্যে রক্তারক্তি। আহারে, কি সুখের দিন ছিল। আহারে! পরী চা ঢালতে ঢালতে আমার দিকে ফিরে তাকাল। কিছু দেখে ফেলেছে কি না কে জানে। তাহলে তো শুরু হবে ওয়াজ। দীর্ঘ গা জ্বালানো পাকা কথার ওয়াজ।

পরী চা রাখল টি টেবিলটাকে খাটের সাথে টেনে। রাখতে রাখতে বললো, খুব সাবধানে চুমুক দিবে। তোমার তো আবার খেতে গিয়ে ছড়ানোর স্বভাব। হালুম হুলুম করে খাওয়া চাই। বিছানার চাদরে দাগ বসে যাবে একেবারে। আমার মুখ তিতা হয়ে গেল। আমি কিছু না বলে আট শব্দের CHEATING খেললাম। এ‘টা নিলাম READY শব্দ হতে। চৌষট্টি পয়েন্ট, সাথে বোনাস হিসেবে পঞ্চাশ। একবারে একশ চৌদ্দ। খা খা খা, বখিলারে খা। তিতা ভাব যেন কমল একটু। চায়ে একটা চুমুক দেয়া যায়। পরী থেকে আমার পয়েন্ট বেশী এখন।

পরীর চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল। এক দানে তাকে এত ছাড়িয়ে যাবো ভাবে নাই। চায়ে বড় একটা চুমুক দিয়ে বললো, তুমি চিটিং করেছো?
দেখো দেখি কান্ড। কিচ্ছু দেখে নাই, শুনে নাই, বলে বসলো চিটিং করেছো? মনে মনে বললাম, আই রিয়েলি রিয়েলি হেইট ইউ। মুখে বেশ বিভ্রান্তিকর হাসি ফুটিয়ে বললাম, কি যে বল পরী।
পরী কাঁধ ঝাঁকালো। যেন গা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিল আমার হাসি। সে প্রায় সংগে সংগে খেললো, IGNORE। শব্দ গিয়ে পড়লো ঘন লাল ঘরে। ট্রিপল ওয়ার্ড স্কোর। ২১ এর তিনগুন পেল সে, ৬৩।
তার মোট স্কোর হলো ১৫৩, আমার ১৫৫।
তবুওতো দুই বেশী। আমি চায়ে ঘন ঘন দুই চুমুক দিলাম। গরম লাগুক। আরো গরম লাগুক।

পরীর চায়ের গরম ধোঁয়া কোন এক বিচিত্র কারণে আমার দিকে আসতে লাগল। আমার চোখে মুখে যেন আগুনের হল্কা লাগছে। ধোঁয়াটা আমার ভেতরের রাগটাকে চাগিয়ে দিচ্ছে, আমি মুখও সরালাম না, পরীকে কাপও সরাতে বললাম না। দীর্ঘশ্বাস ফেললাম একটা। জানা কথা, কপালের নাম গোপালচন্দ্র।

আমি হাতের লেটার গুলো দিয়ে একটা মারদাঙ্গা কিংবা ঘৃণাবাচক কোন একটা শব্দ বানাতে চাইলাম। কিন্তু SLEEP এর চেয়ে আর কিছু খুঁজে পেলাম না। স্লিপ, ঘুম। আহারে!

ঘুমের মত একটা সর্বজনপ্রিয় কর্মে কেউ যে নিয়ন্ত্রণ বসাতে পারে তা বিয়ের আগে আমার কল্পনাতেও ছিলো না। বিয়ের পর হানিমুনে গেছি কক্সবাজার। হোটেল শৈবালের ডাইনীং হলে বিশাল এক রূপচান্দা খেলাম। মনে হলো, বিয়ে শাদিতো খারাপ না। এ উপলক্ষ্যে এদিক ওদিক যাওয়া হচ্ছে, ভালো মন্দ খাওয়া হচ্ছে। মন্দ কি? রাত তখন সাড়ে দশ‘টা। শীত শীত একটা বাতাস ছাড়ছে। এখন ডিভিডিতে একটা কোন হিন্দি সিনেমা দেখতে দেখতে এই ভরপেট খাওয়ার আমেজে ভয়ংকর এক ঘুম দেবার কথা মাথায় ঘুরতে লাগল। ডিভিডি চাইতে গেলাম কাউন্টারে। পরী পেছনে এসে বললো, কি খোঁজ? আমি বললাম, একটা হিন্দি সিনেমা দারুন জমবে এখন কি বলো?
আমার মুখ হলো হাসি হাসি। কেননা, আমি জানি সে নিজেও হিন্দি সিনেমার ভক্ত। প্রায় প্রতিদিনই দেখে। অতএব আমার প্রস্তাবে সে যে খুশী হবে এতো জানা কথাই। পরীর মুখ থমথমে হলো, স্বর হলো আরো নীচু।
- তুমি এখন সিনেমা দেখতে বসবে?
আমি ইয়ার্কি মারার ভঙ্গিতে বললাম,
- বসবো কে বললো। শোবো। শুয়ে শুয়ে দেখব।
বলতে বলতে চোখের কোণা দিয়ে চোখ মারার ভঙ্গিও করলাম। ভঙ্গিটা বেশি ভাল হলো না। চোখ বুজে আসার মত হলো।
পরী বললো, একটু এদিকে আসো। তোমার সাথে আমার কথা আছে।
কাউন্টার ছাড়িয়ে সে গিয়ে দাঁড়াল হোটেলের বারান্দায়। আমিও পেছন পেছন গেলাম। পরী বললো,
- আয়নায় দাঁড়িয়ে কখনো নিজের চোখ মারা দেখেছো?
আমার পূর্তির মুড তখনও আছে। হাসতে হাসতে বললাম,
- আয়নায় দাঁড়িয়ে নিজেকে চোখ মারব নাকি, কি যে বলো পরী? হা হা হা।
আমার তখনও জো হুকুম জাঁহাপনা জীবন পুরো শুরো হয়নি। ওয়ার্ম আপ চলছে। মাঝে মাঝে ইয়ার্কি সূচক কথা বলে হা হা করে হাসি।
পরী চাপা গলায় ধমকে উঠলো,
- দয়া করে আলজিব দেখানো হাসি বন্ধ করো।
আমি হা হা হাসি গিলে ফেললাম।
- এই সব চোখ টিপাটিপি হাঙরের মুখ করে হাসাহাসি আমার অসহ্য লাগে। দয়া করে এইসব আর করবে না।
আমি ভোম্বলের মত মাথা নাড়লাম। আস্তে আস্তে চারা যে গিলছি ঘুণাক্ষরেও মাথায় আসে নি। আমি বিব্রতভাব কাটানোর জন্য বললাম,
- বল দেখি, কোন সিনেমা দেখতে চাও। তোমার না দেখা কিছু পাওয়া যাবে বলে তো মনে হয় না।
বলেই একটা হা হা হা হাসি হাসতে যাচ্ছিলাম, গিলে ফেললাম। আয়নায় দেখা দরকার, হাসলে আসলেই কি আমার আল জিব্ দেখা যায়? পরী শক্ত গলায় বললো,
- আমরা এখন সৈকতে যাবো। সিনেমা টিনেমা বাদ।
আমি বললাম, এত রাতে। দিন কাল ভাল না।
বাংলাদেশে এই এক সুবিধা, কোন কিছুতে রাজী না হতে হলে দিনকালের অসুবিধার কথা পেড়ে ফেলা যায়।
- দিন কালের কি সমস্যা?
আমি গাঢ় চুলকাতে চুলকাতে বললাম,
- না মানে, চুরি ডাকাতি, কত ধরনের বিপদ...
- আমি হোটেলের ম্যানেজারকে জিজ্ঞেস করেছি অলরেডি। তাদের নিজস্ব বীচ্ আছে। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা। চল রুমে গিয়ে আরো কিছু গরম কাপড় পরে আসি।
আমি শেষ আর্তরক্ষার চেষ্টা করার চেষ্টা করলাম।
- রূপচান্দাটা বেশ বড়ই ছিলো, কি বলো?
পরী তীব্র প্রশ্নবোধক চিহ্ন ফোটালো কপালে। আমি তীব্রতা না বোঝার ভান করে সরল মুখে বললাম,
- খাওয়াটা একটু বেশি হয়ে গেছে, বুঝেছো। কেমন যেন হাঁসফাঁস লাগছে, একটু শুতে পারলে...
- তোমার এই বেশি খাওয়ার অভ্যাসটা কমাতে হবে সেটা কি বুঝতে পারছো? ভূঁড়িওয়ালা লোক আমার দুই চোখের বিষ। আর তোমার ভূঁড়ি গজাচ্ছে ভয়ংকর গতিতে। বেশি খাওয়া হলো, এখন শুয়ে ঘুমাবা। ভূঁড়ির সৌন্দর্যবর্ধন হবে।
ভূঁড়ির সৌন্দর্যবর্ধন কথাটা শুনে আমার পেটে হাসি গুড়গুড়িয়ে উঠলো। ভাবলাম, যাই সৈকতে। রাতের ঘুম যা অপচয় হবে,সকালে পুষিয়ে দেবো ইনশাল্লাহ। অর্থাৎ ইনশাল্লাহ বলে চারা, সরি চারা না, বিশালাকার মহীরুহ গেলায় শরীক হয়ে গেলাম। শুকর আলহামদুলিল্লাহ।

হোটেলের সৈকতে রাত আড়াইটা অব্দি চাঁদের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে হাঁটতে হলো। অবশ্য তাকিয়ে হেঁটেছি বললে অর্ধসত্য হবে, মাঝে মাঝে ঘুমে বুজে আসা চোখ বন্ধ করেই হেঁটেছি। কেননা, আমার চিরকালের স্বভাব, এগারোটা বাজতে না বাজতে চোখ বন্ধ করে ফেলা। নাক ঢেকে ঘুমানোর মত নেয়ামত আল্লার চান্নির তলে আর কিছু আছে বলে আমার মনে হয়না। রাত তিনটার দিকে ঘুমাতে গেলাম, সুদে আসলে উসুল করার ভাবনাটা তো আছেই, সেই মতই বালিশ প্রাণপনে ঝাপটে ঘুমালাম। ভোর সাড়ে সাতটায় পরীর গলা, তুমি এখনও মরার মত ঘুমাচ্ছ। বারো মিনিটের মধ্যে গোসল শেভ সারো, আজ না ইনানী বিচে যাবার কথা। এত ঘুম কাতুরে মানুষ আমি জীবনেও দেখিনি।
সেই থেকে আজ অব্দি ইনানী বিচ শুনলেই আমার ঘুম ঘুম পায়। প্রায় টেনে খুলে রাখা চোখে কি আর সৌন্দর্য ঢোকে? আমার জীবন থেকে টেনে ঘুম দেবার শব্দ ঘসে ঘসে মোছা শুরু হলো। অথচ টানা তেইশ ঘন্টা ঘুমের রেকর্ড আছে আমার। দিন গুলো মোর সোনার খাঁচায় রইল না।

ভাবতে ভাবতে চোখে একটা মার্ডারাস শব্দ ধরা পড়ল। JINXED এর এক্সটা ব্যবহার করলে দারুন একটা শব্দ খেলতে পারি। EXPLODES। পরীর বৃষ্টিতে ভেজার শখ আছে। কোন একদিন মাথায় একটা ঠাডা পড়লেইতো বেঁচে যেতাম। EXPLODES খেললাম হাতের সব অক্ষরগুলো কাজে লাগিয়ে। দান মারলাম আবার। ৭২ পয়েন্ট। নগদা নগদ।

মাত্র ৭২ পয়েন্ট গুনে শেষ করে একটা গা জ্বালানো হাসি হাসব কিনা ভাবছি, হঠাৎ বুম-ম করে প্রকান্ড শব্দ হলো। আমি, পরী দুইজনেই ভীষণ চমকে উঠলাম। নিশ্চয় মোড়ের ইলেকট্রিক ট্রান্সমিটার বার্স্ট হয়েছে। মানে কিনা EXPLODES হয়েছে। বার্স্টের শব্দে চমকে উঠা শেষ হতে না হতেই আমি আবার চমকে উঠলাম। ওহ্ গড। এটা কি কোন কোইনসিডেন্স? আমি EXPLODES শব্দটা খেললাম আর তাই ঘটে গেল? আমার বুক ধ্বক ধ্বক করে উঠলো। এর আগে যখন CHEATING খেললাম, তখনতো সত্যিই আমি চিটিং করেছিলাম। কিংবা তারো আগে যে ZAP খেললাম, পরী তখুনিতো ইলেকট্রিক শকটা খেয়েছিল! ইয়া মাবুদ, এতো দেখছি, যে শব্দ বানাচ্ছি তাই হয়ে যাচ্ছে, একদম চোখের সামনে, তৎক্ষনাৎ! ওহ্। FAN যখন খেললাম, ফ্যানের কয়েল না কি কেটে ফ্যান গেল বন্ধ হয়ে। এও কি সম্ভব?

পরী খেললো SIGN। এনটা গিয়ে পড়লো হালকা লালের ঘরে। ডাবল ওয়ার্ড স্কোর। ও পেল ১০ পয়েন্ট। হঠাৎ করে আমার খেলায় নিদারুণ আগ্রহ তৈরী হলো। ঘটনা টেস্ট করার জন্য আমি প্রায় হুমড়ি খেয়ে পড়লাম বোর্ডের উপর। এটা যদি দয়ালের কোন ইশারা হয়, কাজে লাগানো উচিত। অর্থব মানুষের দৈব যোগ ছাড়া উপায় নাই। একটা কি কোন উপায় পাওয়া গেছে?
পরী বললো, এতো মাথা ঝুঁকে রেখো নাতো। কিছু দেখি না। তোমার বসার মধ্যেও আছে বাচ্চাদের বদভ্যাস। আমি সরে বসলাম। বোর্ড হতে চোখ সরালাম না। পরীর কথায় কিছ্ইু মনে হলো না আমার। কোন একটা কাহিনী ঘটিয়ে ফেলা যায় কিনা, আমার এখুনি চেক করে ফেলা দরকার। এক্ষুনি!

আমি গভীর করে নিঃশ্বাস টানলাম। আমার দরকার এমন একটা শব্দ খেলা যেটা একটু আনইউজুয়্যাল। হাতের লেটার গুলোর দিকে তাকালাম। হাতে আছে ABQYFWE। ধুত্তোরি। এগুলো দিয়ে কি বানাবো। আমি প্রাণপনে একটা কোন শব্দ খুঁজতে লাগলাম যা খেললেই বোঝা যাবে আদৌ কোন দৈবযোগ আছে কিনা আজকের এ খেলায়। উত্তেজনায় আমার মুখে বি লেটার নিয়ে চিবুতে লাগলাম। পরী প্রায় সংগে সংগে ধমকে উঠলো, তুমি এটা মুখে দিয়েছো। মুখের মধ্যে ঢুকিয়েছ। ছি ছি ছি।
আমি বি টা মুখ থেকে বের করলাম। পরী বললো, দয়া করে তুমি এটা ধুয়ে আনো বাথরুম থেকে, সাথে কুলী করে আসো। মুখের মধ্যে কতগুলো জার্ম গেছে বুঝতে পারছো।

আমারে জার্ম শিখায়! আমি বাথরুমে ঢুকে কল ছেড়ে বি‘টাকে আবার মুখে ঢুকালাম। কলের পানি পড়তে থাকলো। আমি চকলেট খাবার মতো বি‘টাকে চুষতে লাগলাম। চুষে চুষে চিবড়া বানাতে পারলো গায়ের ঝাল কমত। গায়ের ঝাল কমানোর একটা তাস আমার হাতে আসছে, ভালমত কাজে লাগানো দরকার। আমি ফিরে এলাম। বি’ এর গায়ে লালা লেগে আছে। পরী ভাবলো পানি। সে টিস্যু এগিয়ে দিল। আমি সুন্দর করে মুছলাম। পরী গা জ্বালানো ঠান্ডা গলায় বললো, এসব কি তুমি ইচ্ছে করে কর আমার সাথে? ইউ আর আনবিলিভেবল।
তার স্বভাব মত আনবি-লি-ভেই-বল শব্দকে মুচড়ে, টেনে চিবড়ে উচ্চারণ করলো। আমি সরি বলতে বলতে দেখলাম আমার হাতের অক্ষর গুলো দিয়ে একমাত্র পরীক্ষা করার মত FLY খেলা যায়। এল টা পাওয়া যাবে EXPLODES থেকে। আমি FLY খেললাম। খেলে ভীষণ উদ্বিগ্ন হয়ে সোজা হয়ে বসলাম । খুব আগ্রহ নিয়ে অনুভব করার চেষ্টা করলাম, বসা থেকে আমি উড়ে যাচ্ছি কিনা, কিংবা পরী উড়ে উড়ে জানালা দিয়ে পাঁচ তলার ফ্ল্যাট থেকে ধুম করে রাস্তায় পড়ে যায় কিনা। ‘আ-আ ধুম হয়’ কিনা। আ-আ টা করবে পড়তে পড়তে, পড়ে গিয়ে ধুম করে ভর্তা হয়ে যাবে। মাবুদ, চোখের কোণা দিয়ে হলেও একবার এদিকে চাও।

উত্তেজনায় আমার চোখ বন্ধ হয়ে এলো। এখুনি প্রমাণ হবে। যা প্রমাণ হবার হবে এক্ষুণি। আশ্চর্য! কিছুই ঘটল না। নিজের নৈরাশ্য দেখে বুঝলাম, আমি প্রায় সিওর হয়েছিলাম এই ছাগলামী চিন্তায়। আমার ব্যা-এ-এ করে ডাক ছাড়তে ইচ্ছে হলো। ছাগল ছাড়া কেউ এরকম চিন্তা করে?

চোখ খোলার আধ সেকেন্ড আগে একটা গুন-ন-ন শুনলাম। নিশ্চয় পরী গুনগুন শুরু করেছে। অথচ তখন আমি একটু গুন গুন করতে গিয়ে কি ধমকটাই না খেলাম। চোখ খুলে দেখি পরী না। আশেপাশে একটা মাছি উড়ছে। মাছির গুন-ন-ন। এ্যাহ! আমার কলিজা ধ্বক করে উঠলো। মাছি ইংরেজীতে তো FLY। কিন্তু এতে কি কিছু প্রমাণ হয়? হারামজাদা মাছিটা তো এখানে এমনিতেই থাকতে পারতো। ঐ যে বলেছিলাম, কাঁঠাল আম তাল পাকা গরম একসাথে পড়ছে আজকে। এখন তো মাছিদেরই সুসময়। ধুর। ধুত্তোরি। কিন্তু তবুও! একটা কিন্তু আমার মনে আবারও ঝলকাতে লাগলো, উড়ি নাই বটে কিংবা পরীও উড়ে নিচে পড়ে নাই, কিন্তু একটা মাছিতো দেখা গেল FLYখেলার সংগে সংগে। এটাও তো একটা ইশারা। নাকি?

FLY শব্দটাই আসলে আমার খেলা উচিত হয়নি। এরকম দুই অর্থ হয় টাইপ শব্দ বাদ দেয়া দরকার ছিল। আমার দরকার এমন কোন শব্দ যার অর্থ সুনির্দিষ্ট। একটা স্ট্রেইট মারামারি কাটাকাটি টাইপ শব্দ। শব্দ খেলবো, আমার ভাবনা ঠিক থাকলে ঘটনা ঘটে যাবে। কোন আইল-বাইল নাই। আমি আইল-বাইল না হওয়ার মতো শব্দ খুঁজতে শুরু করলাম।

এবার পরীর চাল দেবার কথা। আড়চোখে পরীর দিকে চাইলাম। তার মুখে কোন ভাবান্তর নেই। চিন্তার ছাপও নেই। বরং খানিক যেন হাসি হাসি মুখ। মনে মনে ভাবলাম, গুড, ভেরী গুড, পরী। নো চিন্তা ডু ফুর্তি। একটা হেস্ত নেস্ত হয়ে যাবার আগে ফুর্তি করে নাও। ফুর্তির প্রয়োজন আছে। বারে বারে ঘুঘু তুমি...

পরী খেললো CAUTION। তার হাতের ব্ল্যাঙ্ক টাইলটাকে ধরলো এন। আঠারো পয়েন্ট যোগ হলো তার নামে। আমার কাছে আছে AQWEUK। সাথে লালা শুকানো B। রাগে দুঃখে আমার কাঁদতে ইচ্ছে করছে। কেবলি মনে হচ্ছে আমার হাতে ব্রক্ষ্মাস্ত্র আছে, একদম হাতের ভেতরে। কিন্তু ইউজ করতে পারছি না। এইসব আলতু ফালতু লেটার দিয়ে কি শব্দ হয়?

ভাবলাম, ইস তখনকার মত আরেকটা চিটিং করে যদি দু‘একটা লেটার উঠানো যেত! একদম SLASH বা SLAY টাইপ একটা শব্দ খেলে বসতাম। মানে সরাসরি মারদাঙ্গা খুনোখুনি টাইপ শব্দ। প্যাঁচাপ্যাঁচি অসহ্য হয়ে উঠছে। হঠাৎ মাথায় বিদুৎ খেলে গেল যেনো। পেয়ে গেছি। ইয়াস্। আমার হাতের অক্ষর গুলো দিয়েই হয়। ডেনজারাস এন্ড পাওয়ারফুল। পরীর দিকে আড় চোখে চাইলাম। সে বোর্ডে খুব মনোযোগ দিয়ে লেটার গুলো দেখছে। আমি আবার মুখে বি টা ঢুকালাম। খুব সন্তপর্ণে। আমারে জার্ম ঢোকা শেখায়। বি টাকে জিভের একপাশে লুকিয়ে আমি ভিতরের উৎকন্ঠাকে চাপা দিয়ে খেললাম, QUAKE। ঘটুক একটা। ১৯ পয়েন্ট পেলাম।

বহুদিন ধরেই তো শুনছি ঢাকা শহরে বড়সড় ভূমিকম্প হবার কথা। আজকেই ঘটুক। এখুনি। ১৯ মাত্রার কোন ভূমিকম্প কখনো কি ঘটেছে ইতিহাসে? তাই ঘটুক একটা। ধুম ধুম করে ছাদ ভেঙে পড়ুক পরীর চূড়া করে খোঁপা বাঁধা মাথায়। খ্যাট করে একটা শব্দ হোক। মাথা চৌচির হয়ে গিলু বের হয়ে যাক। আমি খাটের কিনারের দিকে সরে আসলাম। একটু প্রিপারেশান নিয়ে রাখলাম। প্রথম কম্পনেই লাফ দিয়ে উঠবো। টুপ করে খাটের তলায় ঢুকে পড়বো। টিভিতে এরকমই তো দেখিয়েছিল। পরী নিশ্চিত খাটের তলায় ঢুকবে না। খাটের তলার বালু থাকার সুদূরতম সম্ভাবনায়ও সে ও কথা ভাববে না। পাঁচ তলা থেকে নামতে নামতে খবর হয়ে যাবে। তারওপর কলাপসিবল গেট থাকবে বন্ধ। লে হালুয়া হয়ে যেতে হবে এ ঘরেই, কিংবা সিঁড়িতে। একজায়গায় হলেই হয়।

প্রবল উত্তেজনায় আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবার যোগাড় হলো। এখনো কিছু ঘটছে না। দুনিয়ার কাঁপাকাঁপির কোন আলামত পাচ্ছি না। কাম অন। দাসের পানে একবার চাও হে দয়াময়।

পরীর চাল। আমি সমস্ত অস্তিত্ব দিয়ে একটা ভূমিকম্পের কাঁপুনি অনুভবের জন্য অপেক্ষা করে আছি। পরী চালের জন্য এক মুহূর্ত অপেক্ষা করলো না। সে খেললো DEATH। ৩৪ পয়েন্ট।

পরী মাত্র শব্দটি সাজানো শেষ করলো, আর প্রায় সংগে সংগে খাট দুলে উঠলো। খাটের সাথে দেয়াল, ছাদ, এবং সারা ঘর। স্পষ্ট, নির্ভুল ভূমিকম্প। আমি আশা করে থাকা সত্ত্বেও ভয়ানক ভাবে চমকে উঠলাম। বিস্ময়ে প্রচন্ড ঢোঁক গিললাম। মুখে থাকা বি এর কথা ভুলে গিয়েছিলাম। বি‘টা গিয়ে আটকাল আমার গলা। ক্র্যাক করে উঠা একটা শব্দ হলো।

আমি খক্ খক্ করে কাশার চেষ্টা করলাম। বি‘টা আরো যেন ডেবে গেল গলার নালীতে। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবার যোগাড় হলো। আমার চোখ বড় বড় হয়ে কোটর থেকে বের হয়ে আসতে চাইলো। নিজের চোখে দেখতে পাচ্ছি আমার চেহারা লাল টকটকে হয়ে গেল। তারপর হতে লাগলো নীল। আমি চোখে অন্ধকার দেখতে শুরু করলাম। তোলপাড় করে উঠলাম বিছানা বালিশ। স্ক্র্যাবল বোর্ড লেটার এদিক ওদিক ওড়তে লাগলো। গলা চেপে ধরলাম। রক্ত পড়তে লাগলো লালা বেয়ে।

নিজের কাঁপা-কাপিঁর চোটে ভূমিকম্প হচ্ছে কিনা আর, বুঝতে পারলাম না। আমি খাটের কিনার বেয়ে নিচে পড়তে পড়তে দেখলাম, পরী আমার দিকে তাকিয়ে আছে। নিশ্চল, নির্মোহ দৃষ্টি। তার মুখের কোণায় মৃদু হাসি।

-০-


ছবিসূত্র: গুগল
The Death of Chatterton বাই Henry Wallis (১৮৫৬)
ওয়েল পেইন্টিং, ক্যানভাসে।
১৭৭০ সালে ইংরেজ রোমান্টিক কবি থমাস চেটার্টন মাত্র ১৭ বছর বয়সে আর্সেনিক পান করে আত্নহত্যা করেন। ছবিতে তার সেই মৃত্য দৃশ্য অসীম মমতায় এঁকেছেন প্রি রাফাইলাইট যুগের শিল্পী হেনরী ওয়ালিস। আহারে!

ফুটনোট: মাঝে মাঝে কিছু গল্প পড়ে এত ভাল লেগে যায়, মনে হয়, ধুর অ। এইটা তো আমার লেখার কথা ছিলো। চার্লি ফিসের গল্পটা পড়ে তেমনি লাগছিলো। মূল গল্পটি বেশ ছোট। গল্পটি নিয়ে ইউটিউবে ছয় মিনিটের ছোট্ট কার্টুন ফিল্ম আছে। লিংক:


এছাড়াও গল্পটি পড়তে চাইলে এখানে: Click This Link

আমার ইচ্ছে করল নিজের মতো করে গল্পটি লিখতে। তাই বিষয়বস্তু ও ঘটনাপ্রবাহ ঠিক রেখে বাকি সব আদ্য-পান্ত খোল নলচে পাল্টে গিয়ে এই আকারে দাঁড় করালাম। এই ধরনের গল্পকে আমি বলি : অমৌলিক গল্প। গল্পটি লিখতে খুব মজা পেয়েছি। ইতিপূর্বে সচলায়তনে অতিথি লেখক হিসেবে প্রকাশিত। তার লিংক এখানে: Click This Link কিছু ইন্সপায়ারিং মন্তব্যে জন্য সেখানকার ব্লগারগণের প্রতি কৃতজ্ঞ।

আর একটা কথা ( প্রায় প্রয়োজনীয়): দীর্ঘদিন ধরে মতিউর রহমান সাগর নাম নিয়ে লিখছি বিভিন্ন জায়গায়, সামুতে, সাময়িকীতে, ছোটকাগজে ইত্যাদিতে। কেমন যেন এক ঘেয়েঁ লাগছে , সাথে আছে একটা অনিবার্য কারণ। এখন আমি লিখছি সাগর রহমান নাম নিয়ে। সামুতে মেইল করলাম প্রোফাইল নামটি বদলাতে। তারা কোন উত্তর দিচ্ছেনা দেখি!? সাগর রহমান নাম নিয়ে ঈদ সংখ্যায় আমার হিঁদোল চোরা উপন্যাস ধারাবাহিক ভাবে ছাপতে শুরু করেছে পত্রিকা। ঈদের সকালে এক চেনা কবি কোলাকুলি করতে করতে জিজ্ঞেস করলেন, হিঁদোল চোরা পড়ছেন? সাগর রহমানটা কে চেনেন নাকি? আমি কাঁধ পাল্টাতে পাল্টাতে বললাম, দূর অ। চোরের খবর রাখি নাকি আমি!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৩:০৯
৩০টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×